একটা মাথার ভিতর কত আর জায়গা থাকে। যাত্রীবোঝাই মিনিবাসের মত সব কাহিনী ঢুকে পড়লো - স্মৃতি, পরিকল্পনা, দর্শন, প্রেম, খাদ্য, ঘুম - যা কিছু আছে। পরিসংখ্যানের হিসেবে এরা দৈনিকই ঢোকে। কোনদিন তাদের ঐ জানলার কাচ দিয়ে ফুচকি দিয়ে দেখি। দেখি পান খেয়ে চুন মেখে দিচ্ছে দেয়ালে আমাদের স্বজাতি। ঐ দেয়ালে যেখানে বাঁচার মত বাঁচতে চাই লেখা তার উপর উল্টো হয়ে কি কি যেন করছে সিক্ত নগরের অসাধু মানুষ। আমার বাস থামতে চায়। কেউ বলল, ভুল বাসে চলেছি। বললাম স্বপ্নের দেশে যাওয়া যাবে না? সবাই হাসে বলে, নতুন পুরান পাবলিক ভাত পাইনা আর নিউ ম্যাড বলে কাচ্চি বারিয়ানী।
তাইলে সেই খানে কয় নম্বর বাসে যায়।
আপনার দরকার ছিল হাইফাই গাড়ি।
কিন্তু এই পথেই তো। বিদ্যা অর্জন করে কি লাভ হলো। কাছা কাছি নামতে পারলে ঘষে মেজে পা ঠেলে ঐ স্বপ্নের বাড়িতে গিয়ে উঠতাম। বলল, আপনি মনে হয় বিজ্ঞান পড়েছে। জি, বিজ্ঞান। এই জন্য দূরের জিনিস ভাল বুঝি। মশার কয়েলে গন্ধ গা থেকে যায় নি। কাঁথা গায় দিয়ে এপাশ ওপাশ করে কিছু হয়। বললাম আমি বাসে উঠলাম ভাল, তা কোথাও যাবো বলেন। কোথাও তো যাচ্ছে।
যাবে? ঐ যে যেখান উব্দা হয়ে জোৎস্না ঝরে। টের পাবা ..স্বপ্নের চাইতে স্বপ্নের কাছাকাছি জায়গাগুলো বেশি ঘোলাটে। কত খারাপ। চীজ একটা। বলে, দেখতে পাবা জোছনার আরাম। এমন জোছনা তার বাপ দাদা চোদ্দ গুষ্টি সেই লাইট দেখে নি। আমি সিটের মধ্যে গলা দিয়ে সারসের মত ঝুলতে থাকি। আত্মবিশ্বাস কমতে থাকে। মাথা ঝিম ঝিম করে। একজনের কাছে শুনলাম সে এই বাসেই থাকে। নামে না। না নামলে ভাড়া দিতে হয় না। বাড়ি নেই? সংসার। সে বললো আমি হলাম কুটবুদ্ধি। বাস থেকে নামলে কি আমার নিজস্বতা থাকে? না। বাসে দাঁত খিলাতে থাকে খাদ্যমন্ত্রীর মত একজন। তার কাছেই জানা যে পেট ঠিক তো সব ঠিক। একজন উঠে আমাকে বসতে দেয়।আমি কি মুরব্বী। আপনি কে? মনে হয় প্রেম। অন্যরা বলল না, প্রেম ফাস্টক্লাসে ভাল ভাল যাত্রীর সাথে আগে উঠে আছে। সিট খালি নেই জেনেই উঠেছি। তখন হিসাবপত্রের সংসার বলল পয়সা আছে? না থাকলে লজ্জা লাগে না উঠেন বাসে!
বাস না মাথা। মাথা কি কারো বাপের সম্পত্তি? আমার নিজের এক দোষ সব থাকে কিন্তু ঐ যে রূপার মোহর কাগজের বান্ডিল, টাকা পয়সা...এসব বুঝলে কি আমি বাসে উঠি।
-
ড্রাফট ১.০