যে লোকটির কীবোর্ড নেই,
কাগজ-কলম নেই
জায়গামতো আঙুল নেই, হাত নেই
মন নেই, বাবা নেই মা নেই,
জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকায় লেখার ফুরসত নেই
ভাব নেই, বয়স নেই, আশা নেই
লিখে রাখার ইচ্ছে নেই
তার লেখা কোথায় পড়তে পাই?
দুহাতে চটের বোঝা, চোখে ঝালাইচশমা,
খনির দোজখ উত্তাপে কয়লা তোলে,
মাথা রুটি উপার্জনে বিনিদ্র,
রুগ্ন অসার দেহে
কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে অনুভূতি জানা অপরাধ
মৌনতায় ছাদে ঝুলন্ত প্রেমিক, ফেলে যাওয়া গর্ভবতী
দুর্ঘটনায় নিমজ্জিত যাত্রী,
বুলেটে ঝাঁঝড়া হওয়া দেশপ্রেমিক
আর শেষ ঘন্টা বেচে দিয়ে শ্রমদাস ক্লান্ত ঘুমালে
কথাগুলো আর জানা হয় না
তস্কর লেখে না, দস্যু লেখার মর্যাদা বোঝে না,
সাধু সন্ন্যাসী ধ্যানে ডুবে থাকে,
নৌকা বেয়ে বৈতরণী পার করে মাঝি,
সাহিত্যের অক্ষর থাকে অনেক যোজন দুরে
কেউ কেউ ধনবান, অসুস্থ সুখে স্থবির আত্মাযান
লেখা অপচয় হবে দারুণ সময়ে,
অথবা সুখীরা মুহুর্ত বন্দী করে যন্ত্রে, কুশীলব হয়ে সংসার সাজায়, প্রার্থনায় ডুবে গম্বুজের গৃহে শুধু চায় ঈশ্বরের দয়া
বাকিরা সব থেকেও
অর্জন করেনি লেখার যোগ্যতা
শুধু গুটি কতেক নেশাগ্রস্ত বা পেশাজীবি মানুষ
কলমে ডুবে থাকে,
প্রথাগত বিশুদ্ধ সাহিত্য নির্মাণ করে
কল্পনায় তুলে আনে অজ্ঞাত অনুভূতি
যাদের পরতে পরতে উৎকন্ঠা,
মাথায় উপমা নেই,
শব্দ নেই, প্রকাশ নেই,
উৎসাহ নেই, সুযোগ নেই,
ক্ষমতা নেই, জীবন এবং সময় নেই -
তাদের অব্যক্ত লেখাগুলো আর পড়া হয় না