..... বলেছেন নাগরিক জাতীয় পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ মিয়া বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস ও ফখরুল সাহেব কে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করেছেন। নাগরিক জাতীয় পার্টির নেতারা নিজেদের পচানোর মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তাদের স্মরণ রাখা উচিত একটি দলের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী তকমা থাকার কারণে বিগত তিপান্ন বছর ক্ষমতায় যেতে পারে নাই। আগামী পঞ্চাশ বছরেও সম্ভব না তাদের জন্য কারণ তারা এখনো বিরোধিতা করেই যাচ্ছে । এনসিপির নেতাদের বক্তব্য স্বাধীনতা বিরোধী দলটির সাথে কাকতালীয় ভাবে মিলে যাচ্ছে । মির্জা আব্বাস ও মির্জা ফখরুল সাহেব খারাপ কি বলেছেন ? একটি সফল অভ্যুত্থান ও স্বাধীনতা সংগ্রাম কিভাবে এক পাল্লায় মাপা যায় ? যতই ভারত বিরোধী রাজনীতি করুক ও মুক্তিযুদ্ধ কে ভারতের মতো বয়ান দেয়ার চেষ্টা করুক ঐতিহাসিক সত্য মুছে ফেলা যাবে ?
এনসিপি এখন পর্যন্ত দেশে রাজনীতি করার জন্য প্রধানত তিনটি ইস্যু সামনে নিয়ে এগুচ্ছে। আওয়ামী লীগের বিচার- নিষিদ্ধকরণ, গণপরিষদ নির্বাচন ও মুক্তিযুদ্ধ- অভ্যুত্থান সমান এই তিনটি বিষয় সামনে নিয়ে তারা মাঠে রাজনীতি করবে। আওয়ামী লীগের বিচার- নিষিদ্ধ করণ বাদে বাকি দুইটি ইস্যু একেবারে ঠুনকো। জামায়াতের মতো দল গণপরিষদ নির্বাচন চায় না। এনসিপি, এবি পার্টি সহ কিছু খুচরো দল গণপরিষদ নির্বাচন দাবী করছে। মুক্তিযুদ্ধ-অভ্যুত্থান সমান এই ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করলে এনসিপির নেতাদের ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার আগেই শেষ হবে। দেশের সিংহভাগ মানুষ জুলাই অভ্যুত্থান কে মুক্তিযুদ্ধের সমপর্যায় ভাবা ভালো চোখে দেখছে না। এনসিপি দাবী করছে যারা বিগত পনেরো বছর নির্যাতন ও জুলুম সহ্য করেছে তাদের কাছে জুলাই অভ্যুত্থান নাকি নতুন স্বাধীনতা। এনসিপির কতজন নেতা বিগত পনেরো বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছে ? বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর স্টীম রোলার চালিয়েছে আম্লিক ! তাদের জমি জমা ও স্ত্রী পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে বিগত স্বৈরাচারী দলটির নেতারা। নাহিদ নিজের মুখেই বলেছে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী অংশ জুলাই অভ্যুত্থানে মাঠে ছিলো। এই বিদ্রোহী অংশ যে একটি গুপ্ত বাহিনীর সদস্য আজ তা জাতির কাছে পরিস্কার। কিন্তু সাধারণ মানুষ ইহা কে কৌশল হিসাবে দেখে বিধায় তেমন সমালোচনা করে না। গুপ্ত বাহিনী কি কোনো সুযোগ সুবিধা পায় নি ?
নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বলতে এনসিপি কি বোঝাতে চায় ? তাদের এক নেতা নিজ এলাকায় শোডাউন করছে অন্যদিকে শ্রমিকেরা ২/৩ মাসের বেতন বোনাসের দাবীতে আন্দোলন করছে। তারা বাসায় ফিরে সন্তান দের নতুন জামা কাপড় দিতে পারবে না বলে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিলো। নিরীহ শ্রমিকেরা রাস্তায় ইফতার করছে অন্যদিকে কারখানার মালিকদের টাকায় শেরাটনে ইফতার পার্টি করেছিলো এনসিপি। অবশ্য ফান্ড কারা দিচ্ছে তাদের নাম জানা যায় নাই। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এমন হওয়ার কথা ছিলো না।
পুরাতন রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপির নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চালু করার সুযোগ ছিলো। তাদের অনেক নেতা-কর্মী জেলে মারা গিয়েছে, গুম হয়েছে এবং ভুয়া মামলার শিকার হয়েছে। তাদের এই সুসময়ে উচিত ছিলো বিনা বিচারে প্রতিটি হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করা। ইহাই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। একজন লোক আদালতে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার গায়ে একটা ফুলের টোকা দেয়ার নিয়ম উন্নত কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নেই। কিন্তু বিএনপি সেই পুরাতন পথেই হাটছে। বিএনপির চেয়ে সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান ভালো রাজনীতি করছেন । যখন তাকে নিয়ে দেশব্যাপী তীব্র বিতর্ক চলছে তখন তিনি জুলাই আহতদের নিয়ে ইফতার করলেন, তাদের অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। তিনি অবসরে গিয়ে রাজনীতি শুরু করলে অবাক হবো না। বিএনপির উচিত এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া।
জুলাই অভ্যুত্থানের ঐক্যবদ্ধ চেতনা রাজনীতিবিদেরা ধ্বংস করেছেন। বিএনপি সারা রোজার মাসে ইফতার মাহফিল করছে কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের নিয়ে তারা কোন অনুষ্ঠান করেনি। জুলাই আহতদের স্বজনদের নিয়ে তারা কোন ইফতার মাহফিল করেনি। অন্যদিকে এনসিপিকে যারা মুক্তিযুদ্ধ ইস্যুতে সন্দেহের চোখে দেখে তাদের মুখে ঝামা ঘষে প্রতিটি জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের ইফতার পার্টিতে আমন্ত্রণ জানালে মানুষ তাদের নিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেত। কারণ একাত্তর, নব্বই গণঅভ্যুত্থান ও জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন কনফিউশান নেই । তাই রাজনীতিবিদ দের উচিত হবে কোনটি বড়ো কোনটি ছোট তা নিয়ে ফিতনা-ফ্যাসাদ করা থেকে বিরত থাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:২৭