( পিঁপড়েদের মানুষের মত নাম থাকে না
দলে দলে চলমান রেখাতেই পরিচয়,
জন্মতে আজান নেই, মৃত্যুতে খোলে না শোকবই.. )
চা বাগানে দেখেছিলাম
সবুজ উপত্যকা ফুড়ে বৃষ্টি বৃক্ষ
বিলুপ্তপ্রায় জীপে চেপে
কুলাউড়া থেকে শমশের নগর যাবার পথে
পিপড়েদের মতই সারি সারি
রোদে পোড়া ওড়িয়া মেয়ে
গুণে গুণে পাতা তোলে
কখনো পিঁপড়ের মতোই
দল বেঁধে হাটে, বাঁশের ঝাঁকা নিয়ে কুঁজো হয়ে
শহরের বাচ্চারা যেটা এঁকে স্কুলে পুরস্কার পায়
কুঁড়ি ও পাতাকে সতেজ রাখতে
যন্ত্ররা পানি ছিটিয়ে দেয়
ভাল জাত চিনে রাখতে গাছগুলোরও নাম থাকে
পিঁপড়ে কন্যাদের নাম হয় কুলি অথবা কামিনী
একটি মেয়েকে দেখে চিনতে পারলাম
মাথায় ব্যান্জোর মত টেনে বাঁধা চুল, শুকনো হাতের কব্জি
গায়ে এক রঙা শাড়ী
ঠিক একেই দেখেছি বিলাতি ব্র্যান্ডের চায়ের বাগানে?
শ্রীমঙ্গল স্টেশনে তখনো ট্রেন আসতে বাকি
প্রতীক্ষারুমে বসে মেয়েটি শিশুকে ক্যাঙ্গারু-বস্তা থেকে নামিয়ে
স্তন্যপান করায়..
দিন শেষে শুকনো মুখে হাসি ফোটে।
ক'দিন পর শিশুটিও মায়ের মত পিঁপড়ে হবে,
বাবুরা গুনে দেবে দৈনিক কুড়ি বা পঁচিশ
দিন ফুরালে শব্দ তুলে ট্রাকটর ঘরে ফিরতে থাকে
সুর্যাস্তের ঘড়ি দেখে বুনো শিয়াল ডেকে ওঠে।
পিঁপড়ের চিনির মত
আপিম আর চোলাই খেয়ে সামান্য সুখ পেলে
মৃত্যুতেও তাদের আফসোস থাকে না