১৯৬৯ সালের চন্দ্রাভিযানের প্রেক্ষাপটে টনি গোল্ডউইন ১৯৯৯ সালে তৈরি করেন “এ ওয়াক অন দি মুন” ছবিটি। ছবিতে নিউইয়র্ক শহরে মার্টি একজন টিভি মেক্যানিক। স্বল্প আয়, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার তাই মার্টি তার স্ত্রী পার্ল, টিনএজ মেয়ে ও ছোট ছেলেটিকে কাছে রাখতে পারে না। তার পরিবার থেকে দুরে তার কাজের স্থান। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে শুধু সে বাড়ী আসতে পারে। ১৭তেই মা বনে যাওয়া পার্ল মনে করে স্বামীসঙ্গহীন তার যৌবন কালটা বৃথাই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
প্রতি বছর গ্রীষ্মে পরিবারটি যে বাংলোটিতে ছুটি কাটাতে যায় এবারও গেল কিন্তু মার্টি যেতে পারল না। দুদিন পরেই চাঁদে হাঁটবে মানুষ – তাই সবাই তাদের টিভিগুলো ঠিকঠাক করে নিতে চায় আগে ভাগেই – কাজের অনেক চাপ। চারিদিকে উৎসবের আমেজ, যুবতি পার্ল আর সইতে পারল না একাকিত্বের যাতনা। রকস্টার মার্কা ব্লাউজ বিক্রেতার কাছে সঁপে দিল নিজেকে। স্বামী সংসার ছেলে মেয়ে ভুলে গিয়ে সারা পৃথিবী যতক্ষন চন্দ্রগমনের রোমান্সে মেতে রইল, পার্লও মেতে রইল রকস্টার মার্কা সেই ব্লাউজ বিক্রেতার সাথে রোমান্সে।
কিন্তু ভবিতব্যহীন রোমান্স কতক্ষন টিকে? মা কে পরপুরুষের সাথে আবেগঘন মুহুর্তে দেখে ফেলল কিশোরী কন্যা, ক্ষোভে দু:খে ভেঙে পড়ল সে। জেনে গেল শ্বাশুড়ী, স্বামী সবাই। ব্লাউজ বিক্রেতা তাকে নিয়ে যেতে চাইল সাথে – কিন্তু তার তো যাযাবর জীবন – পাড়ায় পাড়ায় ভ্যানে করে ফেরি করা। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল পার্ল। স্বামী-কন্যার কাছে ক্ষমা চেয়ে ফিরে এল সংসারে। রকস্টার মার্কা ব্লাউজ বিক্রেতার সাথে সময়টা তার কাছে হয়ে থাকল “এ ওয়াক অন দি মুন”।
রকস্টার মার্কা ব্লাউজ বিক্রেতার সাথে পার্লের ঘটনাটা পার্লের দিক থেকে ঠিকই রোমান্স কিন্তু ব্লাউজ বিক্রেতার কাছে তা অন্যকিছু। অপর দিকে চন্দ্রগমনের পুরো প্রক্রিয়াটাই সাধারণ মানুষের কাছে রোমান্স, কিন্তু যারা এটা করেছে তাদের কাছে তা অন্যকিছু। চাঁদে মানুষ পাঠাবার উদ্দেশ্য ছিল চাঁদে সামরিক ঘাটি তৈরী করা। সেই কারনেই সেখানে তারা ছয়বার গিয়েছে।
একটি সাধারন গল্পের মাঝেও এই সাদামাটা ছবিটি একটি চমৎকার বিদ্রুপও বটে। যেখানে বহু মানুষের মৌলিক চাহিদা রাষ্ট্র মেটাতে পরে না, সেখানে “এ ওয়াক অন দি মুন” যেন পার্লের মতই সারা পৃথিবীকে ধোঁকাবাজীর শিকারে পরিণত করে।
সূত্রঃ লিংক