বিটিভিতে খুব সম্ভবত আগে একটি বাংলা ছবি প্রচার করা হতো , নাম 'মিস্টার মাওলা'। নায়ক রাজ রাজ্জাক, অভিনিত ছবির সার-সংক্ষেপ কিছুটা এমন: গ্রামের বোকাসোকা, নির্বোধ ছেলে মাওলা। মাকে হারিয়ে শহরে এসে মাওলা পড়ে এক মাফিয়ার খপ্পরে। এই সময় 'মাওলার' প্রেম হয় ছবির নায়িকা নতুনের সাথে। একসময় মাওলাকে মারতে উদ্ধত হয়ে দলবল পাঠায় সেই মাফিয়া। আড়ালে থেকে ছবির নায়িকা মাওলার জীবন বাঁচায় আর কপাল গুনে অস্ত্র হাতে সেই
নির্বোধ মাওলা বনে যায় এলাকাবাসী হিরো!!!!
এইতো গেল, ছবির নির্বোধ মাওলার কথা। বর্তমানে রাজনীতিতে এমনি এক নির্বোধ মাওলা, জনাব তারেক রহমান! জ্বি, হ্যাঁ! আকাশ থেকে পড়ার কিছু নেই! রাজনীতিতে এক সময়ের এই 'নির্বোধ' কালের পরিক্রমায়, বর্তমান প্রবাহকালে ফিরে এসেছে কারো কাছে, "মহানায়ক" বা ৫ই, আগস্টের মাষ্টার মাইন্ড হয়ে। বিএনপির ০১-০৬ সালের দুঃশাসন, দুর্নীতি, অর্থ-পাচারের সাথে জড়িত একটি নাম ছিল জনাব তারেক রহমান। এছাড়া প্রতিটি ব্যবসায় মিস্টার ১০%, খাম্বা তারেক নামে ও ওনার কিছু প্রতিকি নাম আছে।
তৎকালীন সময়ে জনাব তারেক রহমানের বিএনপিতে বেপরোয়া প্রভাবের প্রেক্ষিতে মরহুম সালাউদ্দিন কাদের (সাকা চৌধুরী) বলেছিলেন, "আগে কুত্তায় লেজ লারাইতো, আর এখন লেজে কুত্তা লারায়"। সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কর্নেল অলির মত সিনিয়র নেতাদের দল ছাড়া করেছেন ব্যাক্তিগত কলহের জেরে। বিএনপির মত একটি দলকে ওনি শুধু সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল করে ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে রাখে নী, ১০ ট্রাক অস্ত্র, ২১ আগষ্ট বোমা হামলায় জর্জ মিয়ার নাটক, দেড় কোটি ভুয়া ভোটার তালিকার ফলস্বরূপ ১/১১ সরকার ও পড়ে হাসিনার ফ্যাসিবাদী রুপ ধারনের সব বিজ জনাব তারেক রহমানের পুঁতে গেছেন।
বাংলাদেশীদের ভাগ্যর কি নির্মম পরিহাস, কালের পরিক্রমায় ১৭ বছর যে দলটির একটি আন্দোলন করার সাহস ছিল না, খালেদা জিয়ার বাসার সামনে থেকে একটি বালির ট্রাক সরানোর শক্তি ছিল না, হাজারো ছাত্রের প্রানের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মাষ্টার-মাইন্ড নাকি জনাব তারেক রহমান। তিনিই নাকি আগামী দিনের বাংলাদেশের কান্ডারি, ওনার জনপ্রিয়তায় নাকি এতই, দেশের মাটিতে পা রাখলে অনেক দল ব্লাকহোলের মত গর্তে পতিত হবে। ওনি যদি জনপ্রিয় হয়েও থাকেন, সেটা জাতি হিসেবে আমাদের অশিক্ষা, অদূরদর্শিতা ফল। আমার বিএনপিরপন্থী কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীদের জিগ্গেস করি, এত কেলেঙ্কারি পর কোন যৌগতায় ওনি দেশ পরিচালনা করবেন?? প্রতি উওরে- জনাব তারেক রহমান আগের থেকে এখন অনেক পরিনত, তিনি লন্ডনে পলিটিক্যাল সাইন্সের উপর ডিগ্রি নিয়েছেন, তিনি সামনে অনেক ভাল দেশ পরিচালনা করবেন। আচ্ছা!!!! বিএনপির বর্তমান কর্মকান্ড আর জনাব তারেক রহমানের দলের উপর নিয়ন্ত্রণ দেখে কি আপনাদের ও তাই মনে হয়???
কালের পরিক্রমায় এক সময়কার দুর্নীতিবাজ, লুটেরা যদি বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে ফিরে আসতে পারে, হাজারো ছাত্রের রক্তের বিনিময়ে উৎখাত হওয়া পলাতক স্বৈরাচার খুনি হাসিনাকে ও একসময় মানুষ উন্নয়নের রানী বলে জয়ধ্বনি দিবে।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। ওনার আমলে বাংলাদেশের অর্থনীতি অদ্ভুতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। বিদেশে কর্মী পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ সর্বপ্রথম জিয়াউর রহমান উন্মুক্ত করেছিলেন। তাছাড়া, একদল শিক্ষিত, সম্ভবনাময় জনগোষ্ঠীকে রাজনীতি মুখি করে তিনি বিএনপি গঠন করেছিলেন। ফলাফল: এখনো বাংলাদেশের সেরা অর্থমন্ত্রী বলা হয়, সাইফুর রহমানকে। আমি বিশ্বাস করি, জিয়াউর রহমান এক যুগের ও বেশী সময় দেশ শাসন করার সুযোগ থাকলে, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ মালয়েশিয়া, কোরিয়ার মত অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী একটি দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতো। ওনার এই স্বল্প সময়ের রেখে যাওয়া ল্যাগেসির দরুন, বিএনপি দুইবার এমনকি এখনো দেশ শাসন করার স্বপ্ন দেখে। ভাবতেই কষ্ট হয়, জনাব তারেক রহমান ওনার মত একজন ব্যক্তির সন্তান!!!