মুহাম্মদ ইউনূসের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল রাজনৈতিক দল গঠন করার। নব্বই দশক থেকে শুরু করে অদ্যাবধি সরাসরি পেরে উঠতে পারেননি। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি সরাসরি না করলেও তার অধীনস্থরা এটা করেছে। আমার দল, নাগরিক শক্তি হয়ে এবার যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস, তার নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি; ইংরেজিতে এর নাম National Citizens Party, সংক্ষেপে NCP.
কিংস পার্টি বলা হয় সেই সব রাজনৈতিক দলকে যারা সরকারি সহায়তায় দল গঠন করে, সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে এবং সরকার শেষ পর্যন্ত সেই দলকে সহায়তা করে। জাতীয় নাগরিক পার্টি তেমনই একটা রাজনৈতিক দল।
এই দলকে রাজনৈতিক দল বলা হচ্ছে ঠিক, কিন্তু দলটির সারাদেশে এখনো কমিটি নেই, সারাদেশে দলীয় কার্যালয় নেই, সারাদেশে নেই সাংগঠনিক ভিত্তি। মোদ্দা কথা, রাজধানীয় বসে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে টিকে আছে এরা।
এই দলটির আহ্বায়ক হয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি এই দলের সদস্য না হলেও তিনিই এর মূল ব্যক্তিত্ব। এই হিসেবে এই দলকে প্রিন্স পার্টিও বলা যেতে পারে।
এনসিপি শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি দেশে নিষিদ্ধ করতে চায়। তারা পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার মিশনে নেমেছে। এবার তাদের লক্ষ্য খোদ সেনাবাহিনী। এই দলের একাধিক নেতা সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রোশমূলক কথা বলেছেন। এই দলের নেতারা ক্যান্টনমেন্ট দখলের হুমকি দিচ্ছেন।
সাদাচোখে এটাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলা যায়। কারণ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গঠিত দেশে সেনাবাহিনী আমাদের গৌরব ও অহংকারের প্রতীক। সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা কি অর্জন করতে চায়?
এনসিপি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার ধৃষ্টতামূলক বক্তব্য প্রদান করেছে। তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় না। চায় গণপরিষদ নির্বাচন। অথচ এই গণপরিষদ নির্বাচনের কোন সুযোগ বাংলাদেশে নাই। তবু তারা গোঁ ধরেছে, এবং মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার তাদের প্রতি এখানেও সহানুভূতি দেখিয়ে চলেছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একক কোন ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান নয়। এটা দেশের সার্বভৌমত্বের রক্ষাকারী একটা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়ার যে মিশনে নেমেছে কিংস পার্টি অর্থাৎ জাতীয় নাগরিক পার্টি, এটা রুখে দেওয়া উচিত দেশবাসীর।