
মানুষ আমরা দু’জন, আর রুমে বালিশ একটা !! খাট একেবারে রুমের মাপ মত। নেমেই দরজা ! হোটেলের বয়কে গিয়ে বলার পর ব্যাটা যে বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে ছিল সেটাই দিয়ে দিল !
সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম। প্রথমেই বিখ্যাত ইন্ডিয়া গেইট ! বড় সুন্দর একটা স্থাপনা।

প্রেসিডেন্ট ভবন এর মাঝ বরাবর থেকে ইন্ডিয়া গেট একেবারে সরল রেখায় স্থাপিত। প্রেসিডেন্ট ভবন এর পাশেই সংসদ ভবন। এই পুরো এলাকার রাস্তাঘাট অনেক প্রশস্ত এবং পরিকল্পিত। চলাচল করলে মনে হয় কোন উন্নত দেশে আছি।



প্রেসিডেন্ট ভবন

ভারতীয় সংসদ ভবন
প্রেসিডেন্ট ভবন দেখে চলে এলাম ইন্দিরা গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর দেখতে। মূলতঃ এটি ছিল ইন্দিরা গান্ধীর বাসভবন। এখানেই আততায়ীরা তাকে ৩১ অক্টোবর ১৯৮৪ সালে হত্যা করে। কিছু ছবি দেখুন। রাজীব ~ সোনিয়া’র ও কিছু ছবি আছে এখানে।



ইন্দিরা গান্ধীর পড়ার ঘর...

সোনিয়া গান্ধীর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের ছবি...

এখানেই ইন্দিরা গান্ধী আততায়ীর হাতে নিহত হন

মৃত্যুকালে ইন্দিরা গান্ধীর পরনে ছিল এই শাড়ীটি
ইন্দিরা গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর দেখে চলে গেলাম বিখ্যাত কুতুব মিনার দেখতে।

কুতুব মিনার এর ইতিহাস সম্বলিত একটি ছবিও এখানে দিচ্ছি।

কুতুব মিনারের পরে আমাদের গন্তব্য ছিল লোটাস টেম্পল। এটা বাহাই ধর্মের একটি মন্দির। বাহাই ধর্ম সব ধর্মের সমন্বয়ে একটি ধর্ম এবং ইরানে জন্ম নেয়া জনৈক বাহাউল্লাহ এই ধর্মের প্রবর্তক। এনার মতে ইব্রাহীম (আঃ), মুসা (আঃ), কৃষ্ণ, বুদ্ধ এবং মুহাম্মদ (সঃ) এর পর জনাব বাহাউল্লাহ সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত শেষ নবী!

বাহাই উপাসনালয়... লোটাস টেম্পল
যাইহোক, বাহাই ধর্মের মন্দিরগুলো খুব সুন্দর হয়। এখানে অনেক বিদেশী ছেলে মেয়েরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে থাকে। উপাসনাতে সব ধর্মের অনুসারে উপাসনা হয়।
লোটাস টেম্পল থেকে চলে এলাম রাজঘাট। এটা হল ভারতের বড় বড় নেতাদের সমাধিস্থল।
দিল্লীতে দারুণ একটি দেখার জিনিস হল লাল কেল্লা ! কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা যেদিন বেরিয়েছিলাম সেদিন লাল কেল্লা বন্ধ ছিল। আমি যখন ২০০৩ এ দিল্লী গিয়েছিলাম, সেবার লাল কেল্লা দেখেছি। ভেতরে অনেক বিশাল এবং পূর্বের রাজা-রাণীদের অনেক স্মৃতি সেখানে রাখা আছে।

লাল কেল্লার প্রবেশ পথ...
আমাদের দিল্লী ভ্রমন সেদিনের মত শেষ। রাতে ম্যাকডোনাল্ডস এর বার্গার খেয়ে কাছেই PVR হল পেয়ে গেলাম। দেখলাম একটি সিনেমা চলছে, নাম Honeymoon Travel Pvt Ltd.

বেশ কিছুদিন ঘোরাঘুরির উপর থাকায় সিনেমার কোন খোজ খবর জানা ছিল না। ভাবলাম যাই দেখে আসি। কিন্তু হলে বসে সিনেমা যতই আগাচ্ছিল, হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছিলাম। সিনেমা শেষ হলে বুঝলাম, পয়সা জলে যায়নি, খুবই মজার একটা সিনেমা দেখে বের হলাম।

আমাদের ভারতে ঘোরাঘুরির শেষ দিন, সকালে উঠেই রওয়ানা হয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য আগ্রা ফোর্ট এবং তাজমহল দেখা। এখানে আর বেশী কিছু বলার নেই। শুধু ছবি দেখাব।

আগ্রা ফোর্ট এর প্রবেশ দ্বার...

কারুকার্য খচিত অন্দরমহল...


দরবার হল...
এবার তাজমহল এর কিছু ছবি দেখুনঃ


ভেতর থেকে তাজমহলের প্রবেশ দ্বার...


তাজমহলের অভ্যন্তরে মসজিদ, শুনেছি এখানে শুধু জুমার নামায হয়

মূল কবরের প্রবেশ দ্বার


তাজমহলের দেয়ালে কুরআনের আয়াতের অনেক ক্যালিগ্রাফী রয়েছে


অনেক বড় এলাকা নিয়ে বাগান রয়েছে তাজমহলের অভ্যন্তরে...
ঘরে ফেরার পালা। রাজধানী এক্সপ্রেসের বিলাস বহুল ট্রেনে চড়ে কোলকাতা আর সেখান থেকে সোহাগের এসি বাসে ঢাকা ফেরা। সত্যিই দারুণ একটা ট্যুর ছিল সেটা... সিমলার বরফ ঘেরা চারিদিক, মানালিতে তুষারপাত, দিল্লীর ঐতিহ্যবাহী সব জায়গা আরেকবার দেখা... সবশেষে বিশ্বের অনন্য সাধারণ নিদর্শন তাজমহল... অনেক অনেক সুখ স্মৃতি হয়ে জমে রইবে মনের গভীরে...
আগের পোস্টঃ মানালি (হিমাচল) ভ্রমন ২০০৭
আমার যত ভ্রমন ব্লগ...