somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি কানাডা'র নতুন অভিবাসী হয়ে আসছেন? তাহলে এ লেখাটি আপনারই জন্যে - পর্ব ৮

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কানাডা'র নতুন বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টদের জন্য তথ্যমূলক ধারাবাহিক এই লেখাটি প্রকাশিত হবার পর থেকে পাঠকদের প্রশ্ন নিয়ে অনেক ই-মেইল পেয়েছি এবং ক্রমাগত পাচ্ছি। এই পর্বে তাদের আরও বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করেছি। সবার প্রতি অনুরোধ রইলো, বিগত পর্বগুলো পর্ব ১ , পর্ব ২ , পর্ব ৩ , পর্ব ৪ , পর্ব ৫
পর্ব ৬পর্ব ৭ একটু মনোযোগ সহকারে পড়লেই অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। তারপরেও যদি আরও প্রশ্ন থাকে, তাহলে নির্দ্বিধায় আমাকে মেইল করে দিন ( মেইল আইডি: [email protected] ) আপনার সুনির্দিষ্ট প্রশ্নসহ। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, সামহোয়্যারইন ব্লগে পূর্বে প্রকাশিত প্রতিটি পর্বই আমি কম-বেশি আপডেট করেছি। তবে, সম্প্রতি পর্ব ৬ এবং ৭ শুধু আপডেট হয়েছে। যথারীতি ৮ নম্বর পর্বটিও নিয়মিত আপডেট হতে থাকবে। কাজেই নতুন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে কানাডায় আসার আগে এই সিরিজের প্রতিটি পর্বের সুনির্দিষ্ট রেফারেন্সসহ তথ্যগুলো আশা করি আপনাদের কাজে আসবে। আজকের প্রশ্নোত্তর পর্ব চলুন তাহলে শুরু করা যাক:


প্রশ্ন ১: কানাডায় ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে আসার কতদিন পর আমি কানাডিয়ান সিটিজেন হতে পারবো?
উত্তর:

১. কানাডা সরকারের অফিসিশয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী আপনি যদি কানাডায় প্রথম ৪ বছরের মধ্যে ৩ বছর সময় কানাডায় অবস্থান করেন, তাহলে আপনি সিটিজেনশীপের জন্যে যোগ্যতা অর্জন করবেন এবং অ্যাপ্লিকেশন করে একটি নির্ধারিত সময় পর সিটিজেন হতে পারবেন।
২. যদি কেউ শর্ট ভ্যাকেশন ছাড়া দীর্ঘ সময়ের জন্যে কানাডার বর্ডারের বাইরে যান অর্থাৎ ধরা যাক আমেরিকা যান, তাহলে প্রতি একদিন কানাডার বাইরে অবস্থানের জন্যে সেই ব্যাক্তি সিটিজেনশীপের যোগ্যতা অর্জনে একদিন পিছিয়ে যাবেন। অর্থাৎ, ধরাযাক, আপনি কানাডায় আসার এক বছর পর বাংলাদেশে ৪ মাসের জন্যে বেড়াতে গেলেন। সেক্ষেত্রে আপনি সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনের জন্যে নির্ধারিত ৩ বছর থেকে ৪ মাস পিছিয়ে গেলেন। শুধু তাই না, যারা সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনের আগেই কানাডার বাইরে যান, তাদের পাসপোর্ট হাতে পেতেও অনেক দেরি হয় বলে শুনেছি।
২.১ আমেরিকা গিয়ে দিনে দিনে ফিরে আসলে সেই দিনটি সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনে কোন প্রভাব ফেলবেনা অর্থাৎ দিনটি সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনের জন্যে কাউন্ট হবে।
২.২ বাংলাদেশে যাবার দিনটি সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনে কোন প্রভাব ফেলবেনা অর্থাৎদিনটি সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনের জন্যে কাউন্ট হবে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ফেরার দিনটি কাউন্ট হবেনা।
৩. সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশন করে দেবার পর আপনি বাংলাদেশ থেকে ঘুরে আসুন, সমস্যা নেই। অর্থাৎ, বাংলাদেশে অবস্থানকালের সেই সময়টুকু সিটিজেনশীপে কোনরকম প্রভাব ফেলবেনা।
৪. এবার আসি সিটিজেনশেপের প্রস্তাবিত নতুন নিয়ম Bill C-24 -এর ব্যাপারে। সিটিজেনশীপ বিষয়টি বিষদ বলে আমি শুধু সংক্ষেপে মূল বিষয়গুলো তুলে ধরছি: কানাডার পার্লামেন্ট এবং সরকারী ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী:
- কানাডিয়ান ইমিগ্র্যান্টদেরকে সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনের যোগ্যতা অর্জনের জন্যে প্রথম ৬ বছরের মধ্যে অবশ্যই ৪ বছর কানাডায় থাকতে হবে
- সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনের যোগ্যতা অর্জনের জন্যে কোন পারমানেন্ট রেসিডেন্ট উক্ত ৪ বছরের মধ্যে কানাডার বর্ডারের বাইরে সর্বোাচ্চ ৬ মাস থাকতে পারবে
- এই পদ্ধতিতে ইমিগ্র্যান্টরা সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশন করার পর দ্রুত সিটিজেনশীপ লাভ করবেন

আমি শুনেছি, সিটিজেনশীপের নতুন নিয়ম ২০১৫ থেকে কার্যকর হবে। তবে এই নিয়ম সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, নাকি শুধু যারা ভবিষ্যতে নতুন ইমিগ্র্যান্ট হয়ে আসবেন, তাদের জন্যে - এটা নিয়ে সরকারী কোন ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে বলা নেই এবং এই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে মতবিভেদ রয়েছে। যদিও নিয়মটি কার্যকর হলে সেটি সবার জন্যেই প্রযোজ্য হবার কথা। অর্থাৎ নতুন যারা আসবেন এবং পুরানো এলিজিবল সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনকারী সবাই নতুন নিয়মের মধ্যে পড়ে যাবেন।

প্রশ্ন ২: টরন্টোতে Bell, Rogers ইত্যাদি কোম্পানীর ফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন কেমন?
উত্তর:

আমি বলবো 'অন্যতম সেরা'। কিন্তু ব্যয়বহুল। তার ওপর খরচের অনেক loop holes আছে এবং এইসব কোম্পানীর সাথে ২/৩ বছরের কনট্র্যাক্টে যেতে হবে। যাদের আর্থিক সামর্থ্য বেশি, তারা Bell, Rogers - এ যেতে পারেন।

ইন্টারনেট কানেকশন নেবার আগে কানেকশন প্রোভাইডার থেকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জেনে নিন:
১. কোন কনট্র্যাক্ট আছে কিনা। যদি থাকে, তাহলে নির্ধারিত সময়ের আগে কনট্র্যাক্ট ভাঙার প্রয়োজন পড়লে ট্যাক্সসহ কতটাকা জরিমানা দিতে হবে?
২. মোডেম এবং ইনস্টলেশন চার্জ ট্যাক্সসহ কত পড়বে?
৩. ওই কোম্পানীর অন্য কোন ব্যবহারকারী রেফার করলে মোডেম বা কানেকশন ফি -তে ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে কিনা
৪. আপনি নিজে Router কিনলে সেক্ষেত্রে কোম্পানী প্রদত্ত মোডেম সেই মডেল/ ব্র্যাণ্ডের Router সাপোর্ট করবে কিনা। সাধারনত Linksys, Dlink -এর Router গুলো ভালো হয় এবং প্রায় সবধরনের মোডেম সাপোর্ট করে
৫. কানেকশনের জন্যে ট্যাক্সসহ মাসিক কত টাকা ফি দিতে হবে
৬. কেবল কানেকশন সবসময় ভালো
৭. আপনার এলাকায় ওই কোম্পানী কানেকশন দেবে কিনা
৮. আনলিমিটেড ডাউনলোড কিনা। যদি আনলিমিটেড না হয়, তাহলে ডাউনলোড/ আপলোডের Caps কত?
৮.১ যদি কোন Caps থাকে, তাহলে জেনে নিন উক্ত কোম্পানী Caps -এর বেশি ব্যবহারে কত ডলার বেশি চার্জ করবে?
৯. সাধারনত ২৫ বা ৩০ MBPS স্পিডের ৩০০ জি.বি. কানেকশন-ই দৈনন্দিন কাজের জন্যে যথেষ্ট। অবশ্য যদি আপনি নিয়মিত মুভি ডাউনলোড করেন, তাহলে আনলিমিেটেড অপশনে যাওয়াটাই ভালো
১০. মাসিক Payment পদ্ধতি জেনে নিন

প্রশ্ন ৩: সারভাইভাল জবের জন্যে কি কোন CV -এর প্রয়োজন আছে?
উত্তর:

হ্যাঁ আছে। টরন্টোতে প্রফেশনাল অথবা সারভাইভাল জব - দুই ক্ষেত্রেই CV গুরুত্বপূর্ণ। CV তৈরির ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন:
১. CV এমনভাবে তৈরি করুন যেখানে জব রেসপনসিবিলিটিগুলোর কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা থাকবে। অর্থাৎ, আপনি সেই রেসপনসিবিলিটিগুলো দক্ষতার সাথে পালন করতে পারবেন - এইভাবে কথাগুলো লিখুন।
২. CV ২ পাতার বেশি না লেখাই ভালো
৩. যে পদের জন্যে অ্যাপ্লাই করছেন, সেই পদের যোগ্যতা অনুযায়ী CV লিখুন। অর্থাৎ, আপনি বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন হতে পারেন (পড়াশুনা বা অভিজ্ঞতা ইত্যাদি)। কিন্তু শুধুমাত্র সেই কথাগুলোই উল্লেখ করুন যা আপনার কাঙ্খিত পদের জন্যে প্রযোজ্য।
৪. সারভাইভাল জবের ক্ষেত্রে ওই জব -রিলেটেড বাংলাদেশি কোন অভিজ্ঞতা থাকলে সেটা উল্লেখ করুন। যদিও সেই অভিজ্ঞতার কোন কাগজ সাধারনত দেখতে চায়না।
৫. CV এর সাথে কাভার লেটার তৈরি করুন।


প্রশ্ন: ৪ কানাডায় আসলে কি সারাজীবন আমাকে সারভাইভাল জব-ই করে যেতে হবে?
উত্তর:

এটা নির্ভর করছে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনার ওপর। নতুন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে কানাডা আসার পর 'আয়ের চাকা' ঘোরাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই জন্যেই যে কোন ধরনের কাজ শুরু করাটা যেমন জরুরী, তেমনি ভবিষ্যত পরিকল্পনা করাটাও বুদ্ধিমানের কাজ। আপনার যদি কানাডিয়ান সিস্টেমে পড়ালেখা করে ভবিষ্যতে প্রফেশনাল জব পাবার ইচ্ছা থাকে, তাহলে নিশ্চই সারাজীবন সারভাইভাল জব করবেননা!

সারভাইভাল অড জব করতে গিয়ে যে সমস্যগুলোতে পড়তে পারেন:
১. আপনি হয়তো বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কানাডা এসেছেন। কিন্তু সারভাইভাল অড জব করতে গিয়ে দেখবেন আপনার থেকে কম শিক্ষিত অথবা অশিক্ষিত মানুষজন রেস্টুরেন্টে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের গাড়ি, বাড়ি সবই আছে। কিন্তু শুরুতে আপনার কিছুই নেই। সুতরাং তারা আপনার থেকে অবশ্যই স্ট্যাটাস আর আর্থিকভাবে ওপরে। সুতরাং সারভাইভাল জবে আপনি বাংলাদেশ থেকে কি ডিগ্রী করে এসেছেন, সেটা বিবেচ্য না। বিবেচ্য হলো পি-এইচ ডি এবং 'Born কামলা' সবাই সমান।
২. কানাডায় আসার পর নতুন কিছু ভোকাবুলারীর সাথে পরিচিত হবেন। তার মধ্যে একটি হলো 'হার্ড টাইম'। এখানে কর্মক্ষেত্রে (সাধারনত সারভাইভাল জবে) পুরানো এমপ্লয়ি দ্বারা 'হার্ড টাইম' পাওয়াটা খুব সাধারন একটি ঘটনা। অর্থাৎ, নতুন এমপ্লয়ি হিসেবে আপনাকে সব মানুষ সাদরে বরণ করে নেবে, এটা ভাবাটা বোকামী। বরং মল্টিকালচারের দেশ কানাডার সারভাইভাল জবের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মানুষের দ্বারা গালি, খারাপ কথা, খারাপ ব্যবহার তথা হার্ডটাইম পাবার জন্যে মানসিকভাবে প্রস্তুত হন। যারা আপনাকে হার্ড টাইম দিচ্ছে, বাংলাদেশে থাকলে তাদেরকে আপনি হয়তো এক হাত নিতে পারতেন, কিন্তু কানাডায় আপনি কাউকে ভুলেও মারতে পারবেননা। যদি মারামারি করেন এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়, তাহলে আপনার জন্য সেটি 'ক্রিমিনাল রেকর্ড' হবার সম্ভাবনা আছে। 'ক্রিমিনাল রেকর্ড' থাকলে ভবিষ্যতে কোন প্রফেশনাল জব না পাওয়া, সিটিজেনশীপ স্থগিত হয়ে যাওয়া এবং কানাডা থেকে ডিপোর্ট -এর মতো বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

একইভাবে আপনার ছোট বাচ্চাটিকেও ঘরে বা বাইরে শারীরিক বা মানসিক আঘাত করতে পারবেননা। যদি করেন এবং সেটি আপনার বাচ্চা পুলিশকে জানায়, আপনার জন্যে তা অশনীসংকেত। একটি মজার বিষয় শেয়ার করতে চাই। মনিট্রিয়লে আমার পরিচিত এক সিনিয়র ভাইয়ের ৫ বছরের এক চরম বেয়াদব বাচ্চা আছে। এই বাচ্চা যাকে তাকে মারে, বাবা-মায়ের কোন কথাই শোনেনা। সেই সিনিয়র ভাই পুলিশের ভয়ে বাচ্চাকে শাসন-ও করতে পারেননা। এদিকে বাচ্চাটাও দিন দিন সীমাহীন যন্ত্রণা দিচ্ছে তাকে। একদিন বাচ্চাটাকে তিনি শাষন করতে গিয়ে গায়ে হাত তুললেন। সাথে সাথে বাচ্চাটা ফোন তুলে ৯১১ ডায়াল করে পুলিশ কল করলো। যথারীতি পুলিশ আসলো এবং অনেক কষ্টে সেই যাত্রায় আমার সেই সিনিয়র ভাই বাঁচলেন। এরপর থেকে তিনি আর তার বাচ্চাকে মারেননা। কিন্তু কিছুদিন আগে তিনি কানাডিয়ান সিটিজেনশীপের পরীক্ষা দিয়ে কানাডিয়ান পাসপোর্ট হাতে নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন স্বপরিবারে। প্রত্যক্ষদর্শীর মুখে শুনেছি যে, তিনি ঢাকা এয়ারপোর্টে নামার পর থেকে তার বিচ্ছু বাচ্চাকে মারা শুরু করেছেন।
৩. যেকোন সারভাইভাল জব-ই অনেক কষ্টকর। শারীরিক এবং মানসিক পরিশ্রম এবং ভোগান্তী দু'টোই এখানে সমানভাবে পাবেন।
৪. বাংলাদেশি, ইণ্ডিয়ান, পাকিস্থানী, আফগানী, শ্রীলঙ্কান - এই পাঁচ প্রজাতির মালিকের অধীনে কাজ করলে খুব সতর্ক থাকুন। আর্থিক এবং মানসিকভাবে 'হার্ড টাইম' পাবার সম্ভাবনা ৯৯.৯৯%।
৫. সবচাইতে ভালো বুদ্ধি হলো, বাংলাদেশে যদি কোন ব্যবসা বা আর্থিক সোর্স থাকে, তাহলে বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত টাকা কানাডায় এনে রাজার হালে না হলেও বেশ ভালোভাবেই চলতে পারবেন। অন্তত: সারভাইভাল জব করে চলতে হবেনা। শুনেছি অনেক বাংলাদেশি এভাবেই টরন্টোতে বেশ ভালো আছেন।

প্রশ্ন ৫: কানাডায় আসার আগে ঢাকা থেকে জবের জন্যে কি অ্যাপ্লাই করবো?
উত্তর:

করতে পারেন। তবে আমার মতামত হলো, এখানে আসার পর জবের জন্যে অ্যাপ্লাই করাটা ভালো। এর প্রধান কারণ হলো:
১. অনেকসময় ইন্টারভিউ-এর জন্যে এমপ্লয়ার সরাসরি দেখা করতে বলে।
২. কানাডায় ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে ল্যাণ্ড করলে আপনার ওয়ার্কপারমিট থাকবে। অনেক জব অ্যাপ্লিকেশন বা জব পাবার জন্যে এই ওয়ার্কপারমিট বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ।
আপডেট:
১. প্রতিবছর ১০-১৫ এপ্রিল যেকোন ১ দিন ম্যাকডোনাল্ডস-এ ন্যাশনাল হায়ারিং ডে পালিত হয়। যেমন, ২০১৪ সালে ১০ এপ্রিল ছিল ওপেন হায়ারিং ডে, ২০১৫ সালে এই দিনটি ১৫ এপ্রিল। ওই নির্দিষ্ট দিনে আপনার Updated Resume নিয়ে সরাসরি হাজির হন নিকটস্থ কোন ম্যাকডোনাল্ডস-এ।
২. প্রতিবছর মে মাসের মাঝামাঝি Canadian National Exibition (CNE) -তে চাকুরীর সুযোগ হয়।


প্রশ্ন ৬: টরন্টো ইউনিভার্সিটির ডেন্টাল ইউনিটে খরচ কেমন পড়বে?
উত্তর:

১. অবশ্যই খরচ টরন্টোর অন্য যেকোন জায়গার থেকে অনেক কম। আর যদি কোথাও আপনার ডেন্টাল ইন্সুরেন্স থাকে, তাহলেতো খরচ আরও কমে গেল।
২. অভিজ্ঞ ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে স্টুডেন্ট দ্বারা সেবা পাবেন। স্টুডেন্ট আপনার চিকিৎসা করবে - এটা ভেবে হতাশার কিছু নাই। আমার অভিজ্ঞতা বলে, তাদের দ্বারা চিকিৎসা বিশ্বমানের।
৩. যে কেউ এখানে চিকিৎসা নিতে পারবে। অর্থাৎ, তাকে কানাডিয়ান সিটিজেন বা ইমিগ্র্যান্ট হতেই হবে এমন কোন কথা নেই।
৪. শুরুতে একদিন সরাসরি গিয়ে নাম লিখিয়ে আসুন।
৫. পরবর্তী নির্ধারিত দিনে গিয়ে ৬৮ ডলার রেজিস্ট্রেশন ফি দিন।
৬. এরপর এক্স-রে এবং পররর্তী চিকিৎসার জন্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখ আপনাকে কর্তৃপক্ষ জানাবেন।
৭. অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখ পেতে দেরী হয় বলে এখানে চিকিৎসা নেওয়াটা বেশ সময় সাপেক্ষ।
৮. আপনার মাসিক আয় কম হলেও সমস্যা নেই। টরন্টো ইউনিভার্সিটির ডেন্টাল ইউনিটের ফ্রন্ট ডেস্কে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন, কিভাবে আপনি চিকিৎসা গ্রহণ করে মাসিক কিস্তিতে (কোন প্রকার সুদ ব্যতীত) বিল পরিশোধ করবেন। তারা আপনাকে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেবে এবং আপনার ক্রেডিট স্কোর চেক করবে (১৫ ডলার নেবে স্কোর চেক করতে)। যদি ক্রেডিট স্কোর ভাল থাকে, তাহলে আপনি মাসিক কম খরচের কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।

প্রশ্ন ৭: কানাডায় আসার পর শুরুতে যদি থাকার জায়গা না থাকে, তাহলে 'শেলটারে' থাকার বিষয়টা কি বিবেচ্য?
উত্তর:

কোনভাবেই 'শেলটারে' থাকার বিষয়টা বিবেচ্য হতে পারেনা। আপনি, আমি অন্তত: ওই পরিবেশে দিনের পর দিন থাকতে পারবোনা। অনেকে শুনেছি নিজের নামে পাওয়া গভর্নমেন্ট হাউজের অ্যাপার্টমেন্ট সস্তায় ভাড়া দেয় যেটা সম্পূর্ণ বে-আইনী কাজ। তারপরেও থাকা যেত যদি পরিবেশ ভালো হতো। সুতরাং শেলটার বা গভর্নমেন্ট হাউজে ভাড়া থাকার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিয়ে যেকোন উপায়ে টরন্টোতে পরিচিত কারও সহযোগিতায় সুন্দর কোন পরিবেশে বাসা/ রুম ভাড়া করুন।

প্রশ্ন ৮: আমি আমার ৮ বছরের সন্তানসহ কানাডার অ্যালবার্টা প্রভিন্সে ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে আসবো। আমার শিশুটির সেরেব্রাল পালসি রোগ রয়েছে। অ্যালবার্টা প্রভিন্সে আসার পর আমার শিশুটি কানাডার সরকার থেকে কি কি সহযোগীতা পেতে পারে?
উত্তর:

'অ্যালবার্টা হেলথ ডিপার্টমেন্ট' স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কানাডার অন্যতম শীর্ষস্থানীয়। সুতরাং, আপনার শিশুটিকে অ্যালবার্টা নিয়ে আসার পর প্রভিন্সিয়াল সরকার থেকে সে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগীতা পাবে এবং কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন আপনি হবেননা - এতটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি। আপনার জন্যে নিচের লিঙ্কগুলো সহায়ক হবে আশা করি:
১. Cerebral Palsy Association in Alberta (CPAA)
২. অ্যালবার্টা হেলথ সার্ভিস
৩. মাই হেলথ অ্যালবার্টা

প্রশ্ন ৯: টরন্টোতে বাচ্চাদের জন্যে কোন ইসলামিক স্কুল আছে কি?
উত্তর:
টরন্টোতে পাবলিক স্কুলের পাশাপাশি প্রাইভেট ইসলামিক স্কুল আছে। আমার পরিচিত এক ভদ্রমহিলা তার মেয়েকে একটি প্রাইভেট ইসলামিক স্কুলে ভর্তি করেছেন। স্কুলের নাম Salaheddin Islamic School এবং তার বাচ্চাটি কিন্টারগার্ডেনে পড়ে।এই স্কুলটি স্কারবরো সিটিতে যদিও ভদ্রমহিলা থাকেন ডাউনটাউনে। কিন্টারগার্ডেনে প্রতিমাসে ৩৭৫ ডলার করে স্কুলের ফি দিতে হয় তাকে।

প্রশ্ন ১০: টরন্টোতে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সুবিধাগুলো কি কি?
উত্তর:
১. টরন্টো শহরের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানীর নাম TTC
২. টরন্টোতে TTC কাভারেজ স্থানগুলোতে TTC বাস, সাবওয়ে ট্রেন এবং স্ট্রীট কারের সুবিধা পাবেন। অন্যকোন শহর যেমন, মিসিসাগাতে TTC সুবিধা পাবেননা। ওই শহরে তাদের নিজস্ব পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন, মিসিসাগার জন্যে miway
৩. TTC Cash fares: Adult $3.00, Post-Secondary Student $3.00, Senior (65+) / Student (13-19) $2.00, দুই থেকে ১২ বছর বয়সের বাচ্চার জন্য ৭৫ সেন্ট
৪. TTC অ্যাডাল্ট মেট্রোপাস $133.75/প্রতি মাস এবং Senior (65+) / Student (13-19) $108.00/ প্রতি মাস
৫. TTC মাসিক মেট্রোপাস ব্যবহার করার পর সেগুলো ফেলে না দিয়ে জমিয়ে রাখুন, বছর শেষে ট্যাক্স রিটার্নের সময় কাজে আসবে
৬. এছাড়া GO Transit এর বাস এবং ট্রেন ব্যবহার করতে পারেন যা একটু খরচসাপেক্ষ
৭. এক প্রভিন্স থেকে অন্য প্রভিন্সে ট্রেনে যাতায়াত করতে হলে viarail -এর সার্ভিস চমৎকার
৮. এক প্রভিন্স থেকে অন্য প্রভিন্সে অথবা আমেরিকায় বাসে যাতায়াত করতে হলে মেগাবাস আমার প্রথম পছন্দ। এছাড়াও রয়েছে গ্রে-হাউণ্ড , কোচ কানাডা ইত্যাদি
৯. কমখরচে নর্থ আমেরিকায় হোটেল এবং এয়ারলাইন্স টিকিটের জন্যে প্রাইসলাইন ডট কম আমার কাছে সেরা বলে মনে হয়। তবে বুকিং ডট কম -ওয়েবসাইটটাও ভালো।
১০. গাড়ি ভাড়া করার জন্যে এন্টারপ্রাইজের উপরে কিছু নাই। তবে এন্টারপ্রাইজ থেকে গাড়ি ভাড়া করার আগে আরও কয়েকটি জায়গা থেকে ভাড়াটা তুলনা করে নিতে পারেন যেমন: বাজেট , হার্টজ , ডলার
আপডেট:
১১. মার্চ ২০১৫ থেকে টি.টি.সি নিয়মিত অ্যাডাল্ট মাসিক পাসের দাম ১৪১.৫০ ডলার।
১২. সোমবার থেকে শুক্রবার সকাল ৬ টা থেকে রাত ১.৩০ পর্যন্ত টি.টি.সি সার্ভিস চালু থাকে। শনি-রবি সকাল ৯ টা থেকে রাত ১.৩০ পর্যন্ত টি.টি.সি সার্ভিস চালু থাকে। রাত ১.৩০ এর পর থেেকে ভোর ৫.৩০ পর্যন্ত টি.টি.সি ব্লু-নাইট বাস সার্ভিস পাবেন। আপনি যে এলাকায় থাকবেন, সেই এলাকার বাস/ ট্রীটকার/ সাবওয়ে সার্ভিস জানতে হলে টি.টি.সি ওয়েবসাইট দেখে নিন।
১৩. টি.টি.সি ভি.আই.পি পাসের দাম ১২৪.৫০ ডলার। এই ভি.আই.পি. পাসটি মাসে মাত্র একটি আপনি আপনার স্টুডেন্ট আই.ডি কার্ড দিয়ে কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সেকশন থেকে তুলতে পারবেন (যদি আপনি সেই কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট হন) এবং আপনিসহ যে কোন অ্যাডাল্ট ব্যাক্তি এই ভি.আই.পি পাসটি ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রশ্ন ১১: টরন্টোতে পিয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে লাগেজ বা পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে কোথায় যোগাযোগ করবো?
উত্তর: এই লিঙ্ক-এ ক্লিক করুন

প্রশ্ন ১২: বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র যেমন ল্যাপটপ, রাইসকুকার ইত্যাদি কানাডা আনলে কানাডার ইলেকট্রিসিটিতে সেগুলো চালাতে পারবোকি?
উত্তর: হ্যাঁ পারবেন। কানাডা আসার পর এখানে ডলারস্টোর/ ডলারামা/ ওয়ালমার্ট থেকে ২-৩ ডলার দিয়ে 'কনভার্টার' কিনে নিলেই চলবে।

প্রশ্ন ১৩: টরন্টো নামার আগে প্লেনে ট্রাভেলার্স ডিক্লেরাশেন কার্ড-এ কি কি জিনিস ডিক্লেয়ার করতে হবে?
উত্তর:
http://www.cbsa-asfc.gc.ca/publications/forms-formulaires/e311-eng.pdf

প্রশ্ন ১৪: ICAS এর মাধ্যমে এডুকেশনাল সার্টিফিকেট ভ্যারিফাই করালে সকল কাগজের মূলকপি কি তাদের অফিসে পাঠাতে হবে?
উত্তর:
১. টরন্টোতে আসার পর International Credential Assessment Service of Canada (ICAS) এর মাধ্যমে আপনার এডুকেশনাল সার্টিফিকেট ভ্যারিফাই করালে সকল কাগজের মূলকপি তাদের গুয়েল্ফ অফিসে এক্সপ্রেস মেইলে পাঠাবেন যেটার খরচ রেগুলার মেইলের থেকে একটু বেশি। এক্সপ্রেস মেইলে কাগজ হারানোর কোন সম্ভাবনা নেই। এক্সপ্রেস মেইলে মূলকপিগুলো আপনি প্রায় ৩ মাস পর তাদের অফিস থেকে ফেরত পাবেন। ঠিকানা: 100 Stone Road West, Suite 102, Guelph, ON N1G 5L3, Phone: (519) 763-7282. সবচাইতে ভালো হয় যদি আপনি নিজেই সব কাগজপত্রের মূলকপি এবং একসেট ফটোকপিসহ তাদের অফিসে চলে যান। তাহলে তারা মূলকপির সাথে ফটোকপি মিলিয়ে দেখে আপনাকে মূলকপি সাথে সাথেই ফিরিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে দুইভাবে গুয়েল্ফ যেতে পারেন: টরন্টোর ইউনিয়ন স্টেশন থেকে গো-বাসে সরাসরি অথবা ইয়র্কডেল বাসস্টেশন- মিডোভেল গো-স্টেশন- গুয়েল্ফ। গো-বাসে শুধু যাওয়া বাবদ ১৩.৬০ ডলার পড়বে। গ্রে-হাউণ্ড বাসে ২ ডলার করে বেশি পড়বে। টরন্টো থেকে গুয়েল্ফ গিয়ে দিনে দিনে ফিরে আসতে পারবেন।
২. ওন্টারিও প্রভিন্সের পাবলিক কলেজগুলোতে অ্যাপ্লিকেশন করার জন্য ICAS এর মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিক এবং তদোর্ধ কাগজাদি ভ্যারিফাই করিয়ে নিন যেখানে ২৮০ ডলারের মতো ফি দিতে হবে এবং ICAS প্রায় ১০ সপ্তাহ সময় নেবে।
৩. সকল কাগজের ফটোকপি এ-ফোর সাইজের পেপারে জমা দিন (উভয় সাইড ফটোকপি করুন, যেখানে প্রযোজ্য)।

প্রশ্ন ১৪.১: ওন্টারিও প্রভিন্সের পাবলিক কলেজগুলোতে অ্যাপ্লিকেশন করার নিয়ম কি?
উত্তর:
১. ওন্টারিও প্রভিন্সের উল্লেখযোগ্য কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে সেনেকা, সেন্টেনিয়াল, জর্জব্রাউন, মিশিনার, হামবার কলেজ ইত্যাদি।
২. ওকাসের view this link মাধ্যমে বছরের নির্ধারিত সময়ে শুধুমাত্র অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে।
৩. অ্যাপ্লিকেশন ফি ৯৫ ডলার। এই ৯৫ ডলার দিয়ে পাবলিক কলেজগুলোতে এক বছরের মধ্যে অনলাইনে সর্বোচ্চ ৫ টি বিষয়ে আবেদন করা যাবে। প্রতি কলেজে ৩ টি বিষয়ের বেশি আবেদন করা যাবেনা।
৪. অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন করার সময় কলেজ এবং সাবজেক্ট সিলেক্ট করে দিতে হবে। সাথে ব্যাক্তিগত তথ্যাবলি এবং পূর্ববর্তী এডুকেশনাল তথ্য প্রদান করতে হবে।
৫. টরন্টোতে আসার পর ICAS এর মাধ্যমে এডুকেশনাল সার্টিফিকেট ভ্যারিফাই করালে সেক্ষেত্রে ওকাসের অ্যাপ্লিকেশনে 'ইভালুয়েশনের প্রয়োজন নেই' - সিলেক্ট করে দিন।
৬. ওকাসের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশন করার পর কোন কলেজ থেকে ভর্তির ডাক আসলে তখন ICAS এর দ্বারা ভ্যারিফাইড এডুকেশনাল সার্টিফিকেটগুলো জমা দিন।
৭. অনলাইনে ওকাসে আবেদনের সময় আপনার আকাঙ্খিত কোন সাবজেক্ট যদি কোন কলেজে অ্যাভেইলেবল না পান, তাহলে সরাসরি সেই কলেজে চলে যান এবং কথা বলুন। সেখানে সমাধান পেতে পারেন।

প্রশ্ন ১৫: আপনার পরামর্শ মোতাবেক টরন্টো আসার পর গভর্ণমেন্ট হাউজিং-এর জন্যে অ্যাপ্লাই করেছি। কিন্তু কতদিনে সরকারী বাসা পেতে পারি?
উত্তর: যারা সরকারী বাসা পেয়েছেন - এমন ব্যাক্তির সাথে কথা বলে জেনেছি যে, অ্যাপ্লাই করার পর প্রায় ৫-৬ বছর পর তিনি বা তারা সরকারী বাসা পেয়েছেন। এক্ষেত্রে শুধু অ্যাপ্লাই করে বসে থাকলেই চলবেনা, বছরে অন্ত:ত দুই-তিনবার তাদের 'এলম রোডের' Address: 176 Elm St, Toronto, ON M5T 3M4, Phone: (416) 981-6111 ঠিকানায় গিয়ে একটু খোঁজ খবর নিবেন। আপনার আয়/ বর্তমান ঠিকানা ইত্যাদির পরিবর্তন হলে তাদেরকে (হাউজিং কানেকশনস) অবগত করবেন।

প্রশ্ন ১৬: পিয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নামার পর আমার ভারী ৮-১০ টি লাগেজ নিয়ে গ্রীনচ্যানেল দিয়ে পার হতে হবে। এক্ষেত্রে পোর্টার ভাড়া করাটা কি যৌক্তিক?
উত্তর: যৌক্তিক তখনই, যখন আপনি বা আপনার পরিবারের মানুষজন একটু কষ্ট করে ট্রলি ধাক্কা দিয়ে মালামালগুলো ঠেলে নিয়ে বের হতে পারবেননা। পিয়ারসন এয়ারপোর্টের ভেতরেই ফ্রি ট্রলি (ফ্রেঞ্চ-এ লেখা থাকে: gratuit - ঘাতুই) পাওয়া যায়। প্লেনে দীর্ঘ ভ্রমণের পর সবাই খুব ক্লান্ত থাকেন বলে ফ্রি ট্রলি খুঁজে নেওয়ার মতো সহজ কাজ-ও অনেক সময় কঠিন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সত্যি কথা হলো, টাকা বাঁচাতে হলে ফ্রি ট্রলি খুঁজে নিতে হবে যেটা মোটেই কষ্টকর ব্যাপার নয়।

এবার আসি পোর্টার এর ব্যাপারে। বাংলাদেশের এয়ারপোর্টের পোর্টারদের সাথে চরিত্রগতভাবে মূলত: এদের তেমন কোন পার্থক্য নেই। অর্থাৎ, এরাও আপনার পেছনে ছোঁক ছোঁক করবে কিভাবে আপনার পকেট থেকে ৫০-৬০ ডলার বের করে নেওয়া যায়। এয়ারপোর্টের ভেতরে এদের একটা সিণ্ডিকেট কাজ করে যারা যাত্রীদের মালামাল বহন করে দেয় ঠিকই কিন্তু বিনিময়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ভালো অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়াটা এদের নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার। কাজেই আমার পরামর্শ হবে, খুব প্রয়োজন না হলে পোর্টার নেবার দরকার একেবারেই নেই। আর যদি নিতেই হয়, ভালো করে দরদাম করে (মাল বহনের চার্জ+ টিপস ) কথা বলে নিন। সাধারণত মাল পরিবহনে টিপসসহ ২০-৩০ ডলারের বেশি এদের নেবার কথানা।

সম্প্রতি একটি পরিবার ঢাকা থেকে ইমিগ্র্যান্ট হয়ে এসেছেন যাদের থেকে পোর্টার ১০০ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। নতুন বলে তারা ঠকেছেন। আবার ট্যাক্সি ভাড়া করতে গিয়েও দেখবেন, নিয়ম যদিও সব ট্যাক্সি মিটারে চলবে। কিন্তু কিছু ট্যাক্সি পাবেন যারা নিয়ম ভঙ্গ করে মিটার ছাড়া মৌখিক ভাড়াতেও যাত্রী নিচ্ছে এয়ারপোর্ট থেকে। এসব ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকাই ভালো।

আপডেট:
১. নতুন যারা টরন্টো আসছেন, তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি কানাডার জনবহুল মাল্টি কালচারাল শহর টরন্টোতেও ঠগ, বাটপার আর জালিয়াতের যে অভাব নেই তা ভাবাটা বোকামী। অনেক উদাহরণই রয়েছে। খুব সাধারণ একটি ঘটনা বলা যায় এ প্রসঙ্গে। হঠাৎ কোন ব্যক্তি হয়তো ফোন করে আপনাকে জানালো যে, আপনি লটারীতে ১ মিলিয়ন ডলার পেয়ে গিয়েছেন অথবা আপনার থেকে সরকারী কোন প্রতিষ্ঠান বড় অঙ্কের টাকা পায় এবং এসব ক্ষেত্রে ফোনদাতা আপনার ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জানার জন্যে আপনাকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করবে। ভুলেও এসব 'ফ্রড' কলগুলোতে আপনার ক্রেডিট কার্ড তথ্য দেওয়াতো দূরে থাক, কথাই বলবেননা। প্রয়োজনে ৯১১ কল করে পুলিশের সহযোগীতা নিন। নিশ্চিত না হয়ে কোথাও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য শেয়ার করাটা বোকামী।
২. বাঙ্গালী পাড়ায় গেলে আরও এক ব্যবসার সাথে এখানে পরিচিত হবেন। সেটি হলো Multi-level marketing (MLM)। কোন ব্যবসায় জড়াবেন অথবা জড়াবেননা সেটি ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।

প্রশ্ন ১৭: কানাডার নতুন ইমিগ্র্যান্টদের নিয়ে আপনার ধারাবাহিক এই সিরিজের লেখাগুলো অন্য আরেকটি ব্লগে অন্য আরেকজনের নামে দেখলাম। অর্থাৎ আপনার লেখাগুলো অন্যজন নিজের লেখা বলে চালিয়ে দিয়েছে
উত্তর: এটা খুব 'কমন' একটি ঘটনা। অতীতেও আমার মৌলিক লেখা চুরি হয়েছে। মানুষ নিজের নাম বলে চালিয়ে দিয়েছে আমার মৌলিক কোন লেখা। কানাডা'র নতুন ইমিগ্র্যান্ট বিষয়ক ধারাবাহিক এই লেখাটি সামহোয়্যার ইন ব্লগ ছাড়া অন্য কোথাও আমি প্রকাশ করিনি। আমি খুব বেশি অবাক হবোনা, যদি আপনি আমাকে বলেন যে, কেউ আমার লেখাগুলো নিজের নাম দিয়ে হুবহু লিখে বাজারে বই হিসেবে বিক্রি করে 'টু-পাইস' ইনকাম করছে। এই সিরিজটি লেখার মূল উদ্দেশ্য বাণিজ্যিক চিন্তা-ভাবনা নয়। বরং দিনের পর দিন নতুন তথ্য দিয়ে আপডেট করা এই সিরিজের মূল্যবান তথ্যগুলো কানাডায় নতুন ইমিগ্র্যান্টদের কাজে আসাটাই আমার মূল উদ্দেশ্য।

পর্ব ৯ view this link

বিশেষ দ্রষ্টব্য:
কানাডা'র ইমিগ্রেশন প্রসেসিং খুব কঠিন কিছু কি? এটা সত্যি যে, ইমিগ্রেশন প্রসেসিং সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু অসম্ভব নয়! সামহোয়্যারইন ব্লগের পয়গম্বরের ব্লগ এবং ফেসবুকের পেজটি Facebook page: Click This Link Email: [email protected] আপনার সাথেই আছে ইমিগ্রেশন প্রসেসের প্রতিটি স্টেপে, প্রতিটি সমস্যার আন্তরিক সমাধানে। কানাডা'র ইমিগ্রেশন নিয়ে টেনশন একেবারেই ঝেড়ে ফেলে দিন মাথা থেকে। ফেসবুকের এই পেজে শেয়ার করুন আপনার কানাডা'র ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত যেকোন প্রশ্ন অথবা সমস্যা। ব্লগ এবং ফেসবুকের এই প্ল্যাটফরমে আমি চেষ্টা করবো সঠিক রেফারেন্স নির্ভর তথ্যটি আপনাকে জানানোর। ইমেইলেও যোগাযোগ করতে পারেন আপনার সুনির্দিষ্ট প্রশ্নটি লিখে: [email protected]

Facebook page: Click This Link
Email: [email protected]

শুভকামনা রইলো আপনার জন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:০০
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×