আরো আগেই ইচ্ছে ছিল লেখার কিন্ত ব্যস্ততার কারনে হয়ে উঠছিলনা ।এবার ধারাবাহিক ভাবে লেখার ইচ্ছে পোষন করছি ।শিক্ষানবিশ হিসেবে মাত্র একবছর জাহাজে কাটিয়েছি , এখনো পাড়ি দিতে হবে বহুদুর ।আপাতত এই এক বছরের যাপিত জীবন-ই তুলে ধরব আপনাদের সামনে ।
## নীল জলরাশির মাঝে বেশ কিছুটা দিন ছুটে চলার পর যখন ই কোন পোর্ট এ ভিড়তাম সবার আগে চেষ্টা থাকতো মুঠোফোনে প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলার । এজেন্ট , সুপারভাইজার বা ফোরম্যান এদের সাথে খাতির জমিয়ে কোথায় কলিং কার্ড পাওয়া যায় বা কোন সিমে কথা বলা যায় তা জানার চেষ্টা করতাম ।এখন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারনে খুব সহজেই প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলা যায়।অথচ কিছুকাল আগেও সমুদ্রচারীরা মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকতো প্রিয় মানুষদের চিঠির জন্য ।পোর্টে ভিড়লে এজেন্টরা চিঠি নিয়ে আসতো ।যার কোন চিঠি আসতোনা দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে সে অপেক্ষা করত পরবর্তি পোর্টের ।এখন প্রায় সব জাহাজেই ই-মেলের মাধ্যমে , স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে প্রিয় জনের সাথে যোগাযোগ করা যায়।
অনেক চেষ্টার পর যখন একটা সিম হাতে পেতাম কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কান্ট্রি কোড দিয়ে সোজা ডায়াল......তবে দুই-এক মিনিটের পর ব্যালেন্স শূন্য হয়ে যখন লাইন কাটা যেত এরপর খোঁজ নিতাম কিভাবে ডায়াল করলে টাকা কম কাটবে।
জাহাজে ব্যবহৃত নেভিগেশনাল চার্ট
তবে দৃশ্যটা আরো মজার হয় যখন বাংলাদেশে ফিরি তখন ।আন্দামান পার হয়ে সেন্ট-মার্টিন এর ২০ নটিক্যাল মাইলের কাছাকাছি প্রথম নেটওয়ার্ক পাওয়া যেত যা ঘন্টা দু-একের জন্য থাকত। শুরু হত নেটওয়ার্ক খোঁজার আজব এক প্রতিযোগীতা ।
জাহাজের একোমডেশান ও ক্রেন
জাহাজের এ মাথা থেকে ও মাথা , সুপারস্ট্রাকচার ডেক (একোমডেশানের চারপাশের বর্ধিত অংশ ), ব্রিজ উইংস কোথায় পাওয়া যাবে একটু নেটওয়ার্ক ? তা গভীর রাত হোক কিংবা কড়কড়ে রোদেলা দুপুর ।
রাতের বেলায় জোনাকির মত মুঠোফোনের মৃদু আলোগুলো ভেসে বেড়াত আর দিনে কেউ বা কাজের নাম দিয়ে উচুঁ ক্রেনগুলোতে উঠে বসে থাকত নেটওয়ার্কের আশায় ।
নিস্তব্ধতার মাঝে হঠাৎ করে ভেসে আসত কারো রাজ্য জয় করার উল্লাস.........হ্যা.........লো..........মা ......আমি...........কেমন আছো তোমরা .....?
বিঃদ্রঃ আমার লেখার হাত ততটা ভাল না । তারপরেও এতক্ষন পড়েছেন এ জন্য ধন্যবাদ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১১:২৫