somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প:যেভাবে জন্ম নিতে পারতো একটি গল্প

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খুব ধীরে এগিয়ে গিয়ে আমার দরজাটা আধ খোলা করে দিই যাতে পাশের রুম থেকে আমার অবয়ব ধরা পড়ে। আলোহীন ঘরে টেবিল ল্যাম্প জ্বেলে দিয়ে এক ধরণের আদিভৌতিক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করি। পানি খাওয়ার নাম করে মাঝের রুমে গিয়ে সেখান হতে আমার লিখার পরিবেশের অসাধারণত্ব বুঝবার চেষ্টা করি। গতকালকের চেয়ে কোন অংশেই কম চমকপ্রদ হয়নি। আমার লিখার ঘর দেখেই স্বপন আমার দিকে কড়া দৃষ্টি হানে।" আজকে বাদ দিলে হতো না। বিশেষত গতকালকের এমন একটা ঘটনার পর। তোর দরকার বিশ্রাম। এই সংখ্যায় না হয় বাদ গেল তোর গল্প। শরীর স্বাস্থ্য খারাপ করে....."। স্বপনের এই কথায় আমি এমন এক দৃষ্টি হানলাম যা স্বপনকে থামিয়ে দিল। শিল্প সাহিত্যের প্রতি তীব্র অনুরাগ ফুটে উঠল আমার চোখে মুখে। একটু ইতস্তত করলো স্বপন, "গতকালকের মতো কিছু ঘটাস না যেন।" বলে সে তার রুমে গিয়ে এমন একটা অবস্থান নিলো যাতে আমার অবয়বের উপর সে দৃষ্টি রাখতে পারে।

আমার রুমে চলে আসি। মৃদু আলো আর আঁধারির রহস্যময়তায় কী বোর্ডে গুতানো শুরু করি। গতকালকের ঘটনা ভেবে একধরণের চাপা উল্লাস কাজ করে মনে। আমার গল্পের কোন এক চরিত্র গল্প থেকে উঠে এসেছিল বাস্তবে। আমার গলা চেপে ধরেছিলো। প্রায় শ্বাসরোধ হয়ে যাচ্ছিলাম আমি কিংবা বেশি মাত্রায় তার দ্বারা আক্রান্ত হতে চাইছিলাম। যাক গে সে ঘটনাকে দূরে সরিয়ে দিয়ে শুরু করা যাক গল্পের মহড়া। গল্প লিখতে হবে-- এমন গল্প যাতে আমাদের প্রকাশনা সার্থক বোধ করে এমন একটি গল্পকে তার মাঝে স্থান দিতে পেরে।

লেখা শুরু হয়ে যায়। লেখক হিসাবে বসলেই নিজেকে ভগবান বোধ হতে থাকে। গল্পের চরিত্র গুলোর ভূত ভবিষ্যত দণ্ড মুণ্ডের কর্তা হয়ে যাই আমি। নিজেকে স্বৈরাচারী করে তুলি। জীবন নাটকের নাট্যকার কখনও তার চিত্রনাট্য তৈরিতে ক্লান্ত হন না। কখনো তাকে একঘেয়েমিতে পেয়ে বসে না। কিন্তু আমি এক ধরণের বলয়ে আটকা পড়ে গেছি। তাই আমার গল্পের চরিত্রগুলোর মাঝে বৈচিত্র্যের বড় অভাব আর এটাকে কিভাবে ঢাকা যায় সেই চিন্তা সাজাতে আমি খুব ব্যস্ত।একটা ভাববাদী গল্প লিখবো নাকি। লিখা যায়। গল্প চলতে চায় আমি চালাতে পারি না। আমার মাঝেকার সীমাবদ্ধতাগুলো আমি টের পেতে থাকি যেগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা আমার জন্য ক্রমাগত কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

যাই হোক আজকের গল্পের মূল চরিত্র থাকবে একটি। তার জন্য সহযোগী চরিত্র থাকবে অনেক। নামটা খুব গুরুত্বপূর্ণ না। নাহহহ, মানতে পারলাম। নামটা গুরুত্ববহ বৈকি। কেননা গল্পের মূল চরিত্র হবে কবি তা না হলে নিদেন পক্ষে একজন লেখক। তার নাম রহিম কিংবা করিম বললে ব্যাপারটা খুব সুন্দর হয়ে উঠে না। বরং তার নাম দেয়া যাক তুর্য। বাহ এই নামটা বেশ সুন্দর হয়েছে। গল্পটাকে কিভাবে গড়িয়ে নেয়া যায় সেই চিন্তা করার আগে কি গল্পের এই তুর্যকে সাজানো গোছানোর কোন ব্যাপার থাকবে। সেটা করা যাবে না। তুর্যকে সাজাতে হবে খন্ড খন্ড দৃশ্যকল্প দিয়ে। তাকে পুরোধা বুঝতে দেয়া যাবে না। তার কথা বার্তার মাঝে দুর্বোধ্যতা ছড়িয়ে দিতে হবে। তার ভাবনার প্রগাঢ়তা বাকি সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে। অতপর তার মাঝ দিয়ে বের করে আনতে হবে কাব্যিক কিছু লাইন--

অলস ভেজা বুনোটে অস্থির সময়
আগলে রাখি আপন আঁধারের ঔদ্ধত্যে......

লাইন গুলো কি যথেষ্ট দুর্বোধ্য হলো? নাহ মনপুত হচ্ছে না। বরং তার মাঝে থেকে কোন ভাববাদী লাইন বের করতে পারি কি? যে পংক্তিমালা শুধু কোন নারীর জন্য উতসারিত হবে। হ্যা এবার বেশ একটা প্লট মাথায় জমাট বাঁধতে থাকে। একজন অথবা কয়েকজন নারী গল্পে ঢুকে যায়। সাধারণ নিয়মে কোন নারী ঢুকানোর চেয়ে গল্পের মাঝে শরীরবৃত্তিয় কিছু চটুলতা ঢোকানো যায়। নাহ বরং চমকে দেয়া যায় কোন হাই ক্লাস দেহ ব্যবসায়ী অথচ মার্জিত চেহারার কোন মধ্যবয়স্ক নারীর আগমন ঘটিয়ে। যার আগমন ঘটবে ধূমকেতুর মতোই অকস্মাৎ। ধূমকেতু না হয় আসবে পরে আপাতত তুর্যের জন্য আলোদায়ী সূর্যের ব্যবস্থা করা দরকার আবার দরকার তার মাঝে স্বপ্ন তৈরি করে দেয়া চাঁদ। সূর্য হিসাবে যে মেয়েকে দেখাতে হবে তাকে সূর্যের ন্যায় তেজস্বী করে দিই। ধরে নেই তার ক্লাশের কোন এক মিলি সেই সূর্য।

গল্পের মাঝে মিলি ঢুকে যাওয়ার পর আমার গল্প দ্রুত এগুতে থাকে। তাদের মাঝের মিথস্ক্রিয়াগুলোকে খুব সহজেই গল্পবদ্ধ করা যাচ্ছে। চমৎকার করেই এগুচ্ছে। ছোট ছোট মান অভিমান দিয়ে , মাঝে মাঝে চটুল ঝগড়া দিয়ে গড়ে উঠবে গল্প। মিলিকে তেজস্বী দেখানোর চেষ্টা করাতেই হয়তো গল্প খুব বেশি ট্রেডিশনাল হয়ে যাচ্ছে। মিলির মাঝে দুটো বিপরীত সত্তাকে ঢোকানোর চেষ্টা করি। নাহহ জমছে না। তাদের সম্পর্ক শেষ মেষ প্রেমের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু তা হলে তো হবে না। কারণ তুর্যের ভালোবাসার জন্য স্বপ্ন লাগবে। সেই স্বপ্নতো আমি মিলিকে দিইনি। তার মাঝে দিয়েছি সূর্যের ন্যায় সর্বগ্রাসী ক্ষুধা।

" রিকশায় পাশাপাশি বসে থাকা মিলির উপস্থিতি তুর্যকে সঙ্কুচিত করে রাখে। হঠাৎ করেই সে তার হাত বাড়ি্যে দেয় মিলির উদ্ধত বক্ষ লক্ষ্য করে। ভয়ে ভয়ে মিলির দিকে তাকায় তুর্য। তার মাঝে এক ধরণের হারানোর ভয় কাজ করতে থাকে যে ভয় তার পাবার কথা নয়।

বাতাসেরও এক ধরণের বিষণ্ণতা থাকে
যে বিষণ্ণতায় আটকা পড়ে অতৃপ্তের হাহাকার
তীব্রগ্রাসী শব্দের বুনো গন্ধ মিলয়ে দেয় তাকে
রবির উজ্ঝ্বল .................

মিলিকে ইমপ্রেস করতে চাওয়া কবিতা শেষ হওয়ার আগেই সে তার অধরে কোমল কিছুর উষ্ণ ছোঁয়া পেতে থাকে। রিকশায় বসে থাকা মানব মানবীর মাঝে চির পরিচিত অথচ নিষিদ্ধ বুনো ক্রিয়া চলতে থাকে অবিরত।"

গল্পের লাইনগুলোকে বোল্ড করে দিই। বেশ লাগছে পড়তে। নিজের কাছ থেকে দেখা অনুভূতি গুলো যেন খুব কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছি। তুর্যের মাঝে কবিত্বের ছোয়াটা খুব উচ্চ মার্গীয় করা যাচ্ছে না।গল্পটা একটু গতি পেতে থাকে তুর্য মিলির মিথস্ক্রিয়ায়। কিন্তু গল্পের মাঝে প্রেম কিভাবে আনা যায়। খুব সহজভাবেই এই প্রেমকেও সব প্রেম থেকে আলাদা করে দেয়া যায়। তুর্যের মাঝে চাঁদের ন্যায় স্বপ্ন ছড়ানো সে প্রেম চলে আষে তার পাশের বাসার টিন শেডের বাড়ির নাসরিন আপুকে দিয়ে। নাসরিন আপুর সাথে তুর্যের প্রেম ঘটানোর প্রকিয়া হবে খুব ধীর। সহজ সম্পর্ক গুলোর মাঝে তাদের কথোপকথনে ডেভেলাপ করা যায়। নাসরিন আপু তুর্যের চেয়ে বয়সে বেশ বড়। অতএব তার অনুপ্রবেশে পাঠকের ক্ষণকালেও সন্দেহ হবে তাদের মাঝে প্রেম ঘটতে পারে। তাই আমার লেখা বুঝতে পারা লোকদের জন্য বড় সারপ্রাইজ হবে। আর যারা বুঝবে না তারা এই চরিত্রটিকেই উটকো মনে করবে।

" -নাসরিন আপু খবর কি?
- আরে তুর্য যে। দাড়াও ডেকে দিচ্ছি ডলারকে। বলে ভিতরে চলে গেলো। ডলার তুর্যের বন্ধু। কথা বলতে থাকে তারা। তাদের কথা বেশি জমে না। তুর্য উঠে যাওয়ার আগেই দুটো চোখ উঁকি দেয়।
- এ্যাই খেয়ে যাবে কিন্তু।
- নাহ মেসে ফিরে খাবো। বুয়া রেধে গেছে। খাবার নষ্ট হলে ঝামেলা।
- আরে তোমার প্রিয় আইর মাছ রেধেছি। খেয়ে যাও।

নাসরিন আপুর অনুরোধেই হোক কিংবা টানা বুয়ার রান্না খাওয়ার অরুচিতেই হোক তুর্য বসে গেলো। খেতে বসার কিছুক্ষণের মাঝেই ডলার উঠে গেলো। "এত অল্প খায় বলেই টিঙটিঙে হয়েছে। " বলে উঠে দাঁড়ালো নাসরিন। যাবার আগে তুর্যের দিকে তাকিয়ে বলে "একটু আসছি।"

তুর্য জানতো নাসরিন আর আসবে না। জানার পরও যে বসে রইলো তার কারণ ......নাহ তার কোন কারণ নেই। মনের গভীর কোণে একটা সুপ্ত আশা ছিলো, নারীর মন নাকি খোদাও বুঝতে পারে না। অতএব তার ধারণাও হয়তো ঠিক হবে না। মনের কোণে অন্যমনস্কতা স্থান করে নেয়।

স্বপ্নময়ী চাঁদের অনিঃশেষ জোছনাগুলো জমা থাকে
কোন এক রাহুগ্রস্ত সূর্যদিনের অনন্ত অপেক্ষায়..........

" আরে এখনও যাসনি।ব্যাপার কী? কোন সমস্যা?"ডলারের আকস্মিক আবির্ভাবে হকচকিয়ে উঠলো তুর্য। "নাহ কিছু নাহ। একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেছিলাম। চল এগিয়ে দিবি।""

গল্প লেখার এই বেলায় ছেদ পড়লো। স্বপন চা হাতে এগিয়ে আসা আমি অনেক দূর থেকে অনুভব করি। আমার পাশের খাতায় বড় করে লিখি "গৃহত্যাগী জোছনা"। তারপর পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে বারান্দায় জোছনা দেখে কিঞ্চিত কপট বিহবল হয়ে পড়ি। সিগারেট ধরাই। চাঁদের তীব্র আলোয় আমার চোখের সামনে কল্পনার নাসরিন আপুকে দেখি না বরং অতি পাশের ফ্লাটের পড়ুয়া মেয়ের অসতর্ক নিদ্রা আমাকে ভাবিয়ে তুলে। বুকের উপর পড়ে থাকা বইটা একদিকে হেলে গেছে। দৃষ্টি চাইলেও সরতে চায় না। সরে যায় স্বপনের আগমনের মৃদু পদশব্দে। গল্পের মাঝে কিশোরীকে ঢোকাবার চিন্তা আর তার চেয়ে বেশি স্বপনকে তাড়াতেই বিড়বিড় করতে থাকি। কাজও হয়। স্বপন চলে গেছে। আমি টেবিলে যাই। গৃহত্যাগী জোছনা লেখা খাতাটি বন্ধ দেখে স্বপনের বিচরণে নিশ্চিন্ত হই।

চা রেখে গেছে স্বপন। আমি গল্প লেখার সময় সে কিছু বলে না হয়তো একধরণের শ্রদ্ধাবোধ থেকেই। চা য়ে মুখ দিয়ে আমি গল্পে মনোনিবেশ করতে যাই। গল্পটাকে বহুমাত্রিক করতে আরেকজন বা দুইজন নারী ঢোকানো দরকার। পতিতা ঢোকানোর আইডিয়াটা আপাতত বাদ দিতে হবে। আমার গল্পে পতিতাদের উপস্থিতির বাহুল্য অনেকের চোখে পরে গেছে। তবে কি তুর্যকে গৃহশিক্ষক বানাবো? নাহ । তুর্যকে যেভবাবে বানালাম তাতে গৃহশিক্ষক ব্যাপারটা একদমই যায় না। এমন চরিত্র দিতে হবে যাকে ছোয়া যায় না কিন্তু অনুভব করা যায়। নির্ঘুম রাতের জেগে থাকা তারাদের মত তারা শুধু উপস্থিতি জানিয়ে যায়। ভাবনাটা পাওয়ার আঘেই আবার নাসরিন আপুর কথা মনে আসে। নাসরিন আপুর সাথে তুর্যকে মিলিয়ে দিলে কেমন হয়? নাহ আরেকটু পরে ভাবা যাবে।

" টিএসসির মোড়ের থেকে একটু সামনে এগিয়ে যে জায়গায় নারী পুরুষরা অন্ধকার যাপন করে সেখানে হাঁটছে তুর্য। তার হাতে একখানা কবিতার বই। জীবনানন্দদাসের বই এসবের জন্য তার খুব প্রিয়-- কারণ এর ভাব কখনো পুরণো হয় না। আর নতুন করে পড়া কবিতাগুলোই নতুন ভাবনার খোড়াক যোগায়। তার পাশে হাটছে একটি মেয়ে। যেসব পাঠক তাকে মিলি ভেবে ভুল করেছেন তাদের জন্য বলি মেয়েটা হচ্ছে বহ্ণি। নামটা তার আসল কিনা বুঝা মুশকিল। তুর্য তার নিজের নামটা আকীকা সূত্রে পেলেও টিএসসিতে কবিতা শিখতে আসা দীপ্ত ধ্রুব রুদ্ররা কেউই আসল নাম ধারণ করে না। বহ্ণিকে দেখে তুর্যের চিন্তাজগতে নতুন জীবন বোধের জন্ম নেয়। পয়সাওয়ালা লোকদের ছেলেমেয়েদের দিকে তার দৃষ্টি বরাবর করুণার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। ডিজুস প্রভাবিত প্রজন্মের বাইরে সেই জগতে অন্য কারো স্থান থাকতে পারে এই ধারণা তার ছিল না। তাই যখন সে বলে চলে
".......................................
আমার পায়ের তলায় আমি হারিয়ে ফেলেছি পথ চলবার পিপাসা
একবার ভালোবেসে কেন আমি ভালোবাসি সেই ভালোবাসা।"

মিলির দিকে হানা মাস্টার সুলভ দৃষ্টি তার থাকে না। বরং সমলেভেল আলোচলায় ব্রতী হতে বহ্ণির কথাগুলোর জন্যও অপেক্ষা করে। আজ অবশ্য অনেকক্ষণ ধরে বাক্যব্যয় ছাড়াই হাঁটছে। তার পাশে হাঁটা মানবীটিকে তার কাছে দূর নক্ষত্রের কোন এলিয়েন মনে হতে থাকে। এত কাছে তবু এত দূরে।"

এই পর্যন্ত লিখে আমি ক্লান্ত বোধ করতে থাকি গল্পটা বেশ জমে উঠেছে। নিজের ঐশ্বরিক আধিপত্য সময়ের সাথে খর্ব হয়ে গেছে যেন গল্প তার নিজ গতিতে চলছে। কিন্তু তারপরে? বড় দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম। কারণ এই গল্পটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার মত জীবনবোধ কিংবা অভিজ্ঞতা কিছুই নেই আমার। অথচ এমন চমৎকার একটা প্লটের অপমৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। চিন্তা করতে থাকি। সিগারেটে অগ্নিসংযোগ ঘটে। মাথায় বুদ্ধি খেলানোর চেষ্টা করতে থাকি। হঠাৎ করেই অনুভব করি নাসরিন আপু আমার পিছে দাঁড়িয়ে আছেন। আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। তার অভিযোগ --- চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করি। সেই চোখটাকে নিজের চোখই মনে হয়। সেখানে মায়া মমতা নেই যেন। গল্পটার মাঝে একজন মায়াবতীর মায়া কেড়ে নেওয়াই যেনো আমার অপরাধ। নাসরিন আপা এগিয়ে আসেন আমার গলা চেপে ধরেন। আমার হাত গুলো কোথায় আমি খুঁজে পাচ্ছি না যে। চিৎকার দেব নাকি। নাহ বরং একটা মৃদু গোঙানির শব্দ শুনতে থাকি। আমি উঠে দাড়াই। স্বপনের সাথে ধাক্কা লাগে যেনো। আর তার সাথে আমার অতিনিয়ন্ত্রিত পা পিসির পাওয়ার ক্যাবলে প্যাচিয়ে যায় আর আর ভূমিতে পপাত ধরণীতল হবার কাঁচা অভিনয় করি।

"তোকে একশবার বলছি গতকালকের মতো কিছু করিস না। আর ব্যাপার কী বলতো তোর চরিত্রগুলো তোকে চেপে ধরে আয়নার সামনে নিয়ে যায় কেন?" স্বপনের এই কথায় তাচ্ছিল্যভরে জবাব দিই।" কে জানে হয়তো প্রকৃতির খেয়াল।"" পড়বি পর, পাওয়ার ক্যাবল সহ পড়লি কেনো? তোর গল্পটা গেলো। এত কষ্ট করে লিখলি।" আমি রহস্যের হাসি হেসে বললাম, "এই গল্প নির্মাণ নিয়েই বরং এই সংখ্যায় আরেক গল্প যাক।" স্বপনকে আর কিছু বলার সুযোগ দেই না। তার আগেই আমার খাতায় নতুন গল্পের নাম লেখা হতে থাকে " যেভাবে জন্ম নিতে পারতো একটি গল্প"


[ ডিসক্লেইমার: গল্পের কথকের সাথে এই গল্পের অধম লেখককে না মিলাতে পাঠকের কাছে অনুরোধ রইলো। জনৈক কুলীন লেখকের জীবনআচরি দ্বারা প্রভাবিত হয় লেখক এই গল্পের কথককে সৃষ্টি করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন।]
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:২৭
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×