ঈশ্বরের সাথে আমার সাক্ষাতকালীন সময়ে আমি অসহায় ছিলাম,অনেকটা ভ্রান্ত পথভ্রষ্ট সাধুর মত,জীবনের অনেকটা সময় ধ্যান করার পরও যে নিজেকে তেমন করে বুঝে উঠতে পারেনি।সাক্ষাতের আগে জীবনের মানে খুঁজতে গিয়ে আমি কতবার হতাশ হয়েছি,রাতের আকাশে কতবার আমার দৃষ্টি আবার ক্লান্ত হয়ে আমার দিকেই ফিরে এসেছে তার হিসেব আমি রাখিনি কখনো।বিশাল গোলাকৃতির এই গোলোকধাঁধার কাছে নিজের ক্ষুদ্র সত্তা নিয়ে হীনমন্যতার জন্য ঈশ্বরকে দোষারোপ করেছি রাতে দিনে।
এসবের জন্য ঈশ্বরকে কখনো ক্ষমা করিনি।যে গল্পকার নিজের গল্পের চরিত্রকে নিজের খেয়ালে ফাঁসির দড়িতে ঝুলায় তার প্রতি আর ঈশ্বরের প্রতি আমার ক্রোধ ওই একই জায়গায় আর একই সমান্তরালে চলে।তবে আমি জানতাম ঈশ্বরের সাথে আমার সাথে দেখা হবে,স্বর্গের ঝর্নায় না হোক নরকের অগ্নিকুণ্ডলীর কাছাকাছি।
সাক্ষাতের কিছু আগে পার্থিব উত্তেজনা টের পাই নিজের শিরায়।বেশ আয়োজন করেই ঈশ্বর আমার কাছে আসে।তবে ঈশ্বর যখন সামনে এসে দাঁড়ায় নিজেকে সামলে উঠতে বেশ সময় লেগে যায় আমার।নিজের ঈশ্বর হিসেবে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে কিছুটা ঠকে যাওয়ার অনুভূতি হয়।সামলে নিয়েছিলাম অবশ্য,এরপর আমি হাজারটা প্রশ্ন করলাম,করতে করতে উন্মাদের মত ছুটাছুটি শুরু করলাম,আমার উপর তার সব কিছুই যে অনধিকার চর্চা আর আধুনিক গণতন্ত্র পরিপন্থী সে কথা তাকে হড়বড় করে বুঝিয়ে ছিলাম।সে কতটুকু বুঝল জানিনা,কিন্তু আমি কোন উত্তর পাইনি,সে শুধু আমার দিকে তাকিয়ে একবার হেসেছিল,অদ্ভুত রহস্যময় ছিল সে হাসি।আমি বুঝে যায় আমার ঈশ্বর বোবা,অন্ধ,কালা-তার কোন প্রশ্নের উত্তর জানা নেই,সে বাজিতে জিতে মজা পায়,সে শুধুই গ্যাম্বলার।
সেদিন ঈশ্বর আমার সাথে জিতেনি,বেদনায় তার মুখ নীল হয়ে যায় স্রষ্টা হয়ে নিজ সৃষ্টির কাছে হেরে গিয়ে।আমি শুধু তাকে একগাল হাসি ফেরত দিয়েছিলাম,আমার দুঃসাহস সে মেনে নিতে পারেনি।নরকেও আমার জায়গা হলনা,আমি আবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেলাম নতুন কোন নরকে যাবার জন্য।