প্রথমেই একখান সতর্কতা:
যারা বাজার থেকে নতুন ল্যাপটপ কিনবেন তারা আর যাই হোক এনভিদিয়া চিপসেট সমৃদ্ধ কোন ল্যপটপ কিনবেন না দয়া করে।আর ব্রান্ড এবং মডেল হিসেবে বলতে গেলে বলতে হয়,কমপ্যাক ভি৩০০০ সিরিজের কোন ল্যাপটপ না এবং এইচপি ডিভি ৬০০০,এইচ পি ট্যবলেট পিসি টিএক্স ১০০০,২০০০ তারপর ডেল এক্সপিএস যেকোন মডেল।এগুলো আমি না কেনার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি এবং আবারো বলছি বিশেষ করে এনভিদিয়া চিপসেট সমৃদ্ধ কোন ল্যাপটপ কিনবেন না।এনভিদিয়ার চিপসেট গুলোয় ম্যনুফ্যাকচারিং ডিফেক্ট ধরা পড়েছে।এই চিপসেট গুলো মুলত এইচ পি কোম্পানী বেশী পেয়েছে।তাই এইচ পির এনভিদিয়া চিপসেট সহ কোন ল্যাপটপ না কেনার জন্য আমি সবাইকে পরার্মশ দিচ্ছি।প্রবলেমটা ঠিক এরকম,ধরুন আপনি কমপ্যক ভি৩০০০ সিরিজের কোন ল্যপটপ কিনলেন।প্রথম একবছর কিছুই হবে না।কিন্ত ওয়ারেন্টি পিরিয়ড পার হওয়ার ঠিক কয়েক দিন থেকে কয়েক মাসের মধ্যে হটাৎ একদিন দেখবেন আপনার ল্যাপটপ অন করলে পাওয়ার আপ হয় ঠিকই কিন্তু এলসিডিতে কোন ডিসপ্লে নাই।এটাকে বলে এলগরিদম প্রব্লেম (এনভিদিয়ার ভায্যমতে)।এই প্রব্লেম একবার শুরূ হলে আর রক্ষা নাই।মাদারবোর্ড পাল্টানো ছাড়া আর কোন গতি নাই।আর এই সমস্যাটা শুরু হবে আপনার ওয়ারেন্টি পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর থেকে।এর আগে কোনভাবেই না।যাই হোক আমার সতর্ক করার দরকার ছিলো আমি এখানে বলে গেলাম ।মানা না মানা আপনাদের। সিংগাপুরেও দেখেছি একই রকম সমস্যা নিয়ে প্রচুর কাস্টমার আসে আর শেষমেষ মনখারাপ করে নষ্ট ল্যাপটপ নিয়ে চলে যায় আর না হয় স্ক্রাপ হিসেবে বিক্রী করে যায়।এ সমস্যা ইন্ডিয়াতেও আছে।আমার মনে হয় পুরো এশিয়ায় এনভিদিয়া তাদের ফল্টি চিপ গুলো দিয়েছে।এ জন্য এনভিদিয়া এইচপিকে ২০০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা গনেছে অবশ্য ।কারন এইচপির সেল কমেছে ২০% এর।
ব্যাটারী সম্পর্কে বিশেষ যত্ন: অন্যতম প্রধান সমস্যা।
আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা, লিথিয়াম ব্যাটারীর finite ক্যাপাসিটি থাকে। যেমন ল্যাপটপের ব্যাটারীগুলোতে (মোবাইলেরও একই রকম হয় সম্ভবত সাধারণত: সর্বোচ্চ ৩০০টি charge-recharge cycle-এর গ্যারান্টী দেয়। ৩০০ cycle হয়ে যাবার পর ব্যাটারীর ক্ষমতা কমতে থাকে - এবং এক পর্যায়ে এসে ব্যাটারী রিপ্লেস করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না। (ব্যাটারী খুলে সেলগুলো আবার রিক্যালিব্রেট করা যায় - কিন্তু এই টেকনিক দেশে খুব বেশি কেউ করতে পারবেনা, বা করলেও অপ্টিমাল রেজাল্ট পাওয়া যাবে না)
নতুন কোন ডিভাইস কেনার পর ব্যাটারী কন্ডিশনিং করতে হয় সেটাও আমরা অনেকেই জানিনা। কন্ডিশনিং না করলে শুরু থেকেই ব্যাটারীর ক্ষমতা অনেক কমে যায়।
বাক্স থেকে খোলার পর ডিভাইসটি (ল্যাপটপ, মোবাইল, আইপড... anything that comes with a rechargable Li ion battery) চার্জে দিন - ফুল চার্জ হতে কত ঘন্টা লাগে সেটি ম্যানুয়াল থেকে দেখে নিন।
ফুল চার্জ হয়ে গেলে এবার ব্যাটারী দিয়ে ডিভাইসটি ব্যবহার করুন যতক্ষণ পর্যন্ত না পুরো ব্যাটারী ড্রেইন হয়ে যায়। এই সময়টা কিছু টেকনিক অবলম্বন করে আমরা কমাতে পারি - যেমন ল্যাপটপে ডিভিডি মুভি চালিয়ে দিন, খুব তাড়াতাড়ি ব্যাটারী শেষ হয়ে যাবে। মোবাইল, এমপি৩ প্লেয়ারে এফএম রেডিও, গান বা ভিডিও চালান অনবরত।
নিজে থেকে ডিভাইসটি বন্ধ করবেন না। ব্যাটারীর চার্জ ক্রিটিকাল লেভেলে নেমে গেলে অটোশাটডাউন হয়ে যাবে।
এরপর আবার ফুল রিচার্জ করুন। কমপক্ষে ৩-৫বার charge-drain-recharge সাইকল কমপ্লিট করুন। এর ফলে ব্যাটারীর ক্যাপাসিটি একটি অপ্টিমাল লেভেলে চলে আসবে - এটাকেই বলে ব্যাটারীর কন্ডিশনিং বা ট্রেনিং।
প্রসন্গত: কন্ডিশনিং করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন কিনা, আমাদের দেশে রাত ১২টার পর করলে ভালো। এ ব্যাপারে একটি ব্যক্তিগত এক্সপেরিয়েন্স আছে... কয়েকদিন আগে আমার নিজেরই ব্যাটারী নষ্ট হয়ে গেছিলো বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে।
ব্যাপারটাকে এভাবে দেখুন, আমরা অনেক সময় সেলফোন চার্জে দেয়া অবস্থায় কল আসলে অনেকেই চার্জ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কথা বলি, সেক্ষেত্রে ১ বার (কাউন্ট করুন) কথা বলা শেষ করেই আবার চার্জ দেই, বিদ্যুত চলে গেলো আবার বিদ্যুত এলো ২ বার, জরুরী প্রয়োজনে বাইরে যেতে সেলফোন চার্জ থেকে খুলে সাথে নিলেন এবং ফিরে এসে চার্জে দিলেন-৩বার ।
এভাবেই ৩০০/৫০০ বারের কথা বলা হয়েছে । নিয়ম হলো একটানা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চার্জ দিন এবং ফুল চার্জ হলেই মাত্র চার্জ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন, সেই সাথে ব্যাটারীর চার্জ একদম শেষ করে (invarbrass যেমনটি বলেছেন-কথা বলে, রেডিও বাজিয়ে, ভিডিও চালিয়ে ইত্যাদি বিভিন্নভাবে) চার্জে দিন। এতে আপনার সেলফোনের ব্যাটারীর স্থায়িত্ব পুরোমাত্রায় ব্যবহার করতে পারবেন ।
ব্যবহার কালীন যত্ন:
• ব্যাটারীতে ল্যাপটপ চালানোর সময় স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমিয়ে দিন।
• দরকারি ছাড়া অন্য উইন্ডোগুলো মিনিমাইজ করে রাখুন
• মাঝে মাঝে ব্যাটারীর কানেক্টর লাইন পরিস্কার করুন।
• হার্ডডিস্ক থেকে মুভি-গান প্লে করুন, কারন সিডি/ডিভিডি রম অনেক বেশি পাওয়ার নেয়।
• এয়ার ভেন্টের পথ খোলা রাখুন, সহজে বাতাস চলাচল করে এমন ভাবে ল্যাপটপ পজিশনিং করুন, সরাসরি সূর্যের আলোতে রাখবেন না।
• সাট ডাউনের পরিবর্তে হাইবারনেট অপশন ইউজ করুন।
• ব্লু-টুথ ও ওয়াই-ফাই কানেকশন বন্ধ রাখুন
• ভালো মানের এন্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। তবে অবশ্যই নরটন এন্টিভাইরাস না, কারন সিস্টেমকে অনেক স্লো করে।
• হার্ডডিস্ক ও সিপিইউ এর মেইনটিনেন্স কোন কাজ করবেন না।
• ব্যাটারী দিয়ে ল্যাপটপ চালানো না লাগলেও ২/৩ সপ্তাহে মাঝে মাঝে ব্যাটারী থেকে চালাতে হবে, নতুবা ব্যাটারী আয়ু কমে যাবে।
• অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করুন।
• মাঝে মাঝে মেমরী ক্লিনের জন্য Ram Cleaner, Ram Optimizer, Mem Monster, Free Up Ram, Super Ram, ব্যবহার করুন।
• নিয়মমাফিক ডিফ্রাগমেন্ট করুন।
• আপাতত দরকার নাই এমন প্রোগ্রাম আনইনস্টল করুন।
• ল্যাপটপ বেশিক্ষণ কোলের উপর রেখে ব্যবহার করা উচিত নয়। বেশ কিছুদিন আগে একদল গবেষক ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের মাঝে এক জরিপ চালিয়ে বলেছিলেন, যারা কোলের উপর রেখে টানা অনেকক্ষণ ল্যাপটপ ব্যবহার করেন তাদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।
• দাম একটু বেশি হলেও ল্যাপটপ বহনে ল্যাপটপের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করুন। এসব ব্যাগ ল্যাপটপকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া ভ্রমণে ল্যাপটপ বহন করার জন্য কাঁধে ঝুলানোর সুবিধা যুক্ত (অনেকটা স্কুল ব্যাগের মতো) ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে বহনে সুবিধার পাশাপাশি আরেকটি সুবিধা হলো বাইরে থেকে বোঝাই যাবে না যে আপনি ল্যাপটপ বহন করছেন। তাই ছিনতাইকারীর দৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
• ল্যাপটপে গেম খেলা বা কোন কিছু টাইপ করার জন্য এক্সটার্নাল কী-বোর্ড এবং মাউস ব্যবহার করুন। কারন, এসব ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহারে ল্যাপটপের টাচ প্যাড এবং কি-বোর্ডের আয়ু কমে যাবে।
• ঘরে বা বিদ্যুত ব্যবহারের সুবিধা আছে এমন স্থানে সরাসরি বিদ্যুত ব্যবহারের মাধ্যমে ল্যাপটপ চালান। প্রত্যেকটি ল্যাপটপের ব্যাটারির একটি আয়ু আছে। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার চার্জ হবার পর এই ব্যাটারিটি নষ্ট অর্থাৎ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়।
• ল্যাপটপের এয়ার ভেন্টটি নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কারন এয়ার ভেন্ট বন্ধ হয়ে গেলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন যা ল্যাপটপের জন্য ক্ষতিকর।
এবার আসুন দেখে নেই কেনার আগে কী করণীয়:
প্রয়োজন অনুযায়ী মানে কাজের ধরন অনুযায়ী ল্যাপটপ কনফিগার করুন।
বাজেট: কনফিগার অনুযায়ী বাজেট নির্ধারন করুন। বাজেট অনুযায়ী কনফিগারড যন্ত্রাংশের ব্রান্ড নির্বাচন করুন।
নেটঘাটাঘাটি: আমি এ বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিব। আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী কাছাকাছি মানের সবকয়টি মডেল, ব্রান্ড সিলেক্ট করে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেই মডেল সম্পর্কে খোজ খবর নিন। রিভিউ অনেক সাইট রয়েছে। এখানে আপনার নির্ধারিত মডেলটির কোন দিকটি ভাল কোন দিকটি খারাপ তা আলোচনা করা হয়েছে। আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে তা ঐখানে লিপিব্ধ করতে পারেন। এক্সপার্টরা জবাব দিবে। এতে করে আপনি আপনার ল্যাপটপির কার্যক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞাত হবেন। এছাড়া আরো কিছু প্রয়োজনীয় টিপস পেয়ে যাবেন। রিভিউ সাইটের ঠিকানা পেতে গুগলমামুরে সার্চ দিন, কয়েকশত সাইটের ঠিকানা আপনার সামনে হাজির করবে।
কোথা থেকে কিনবেন: ওয়ারেন্টি! ওয়ারেন্টি! ওয়ারেন্টি। এর বাইরে কোন কথা নেই। ওয়ারেন্টি ছাড়া কোন ল্যাপটপ কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। সুতরাং যে সব দোকান আপনাকে বিক্রয়উত্তর সেবা নিশ্চিত করবে তাদের কাছ থেকেই কিনবেন। এ ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো, আপনার কাছাকাছি কোন দোকান থেকে, বিশেষ করে লোকাল শহরের লোকজন কাছাকাছি ভালো যায়গা থেকে ল্যাপটপ কিনবেন। বরিশালে বসে সমস্যা হলে ঢাকাতে তার ওয়ারেন্টি নিতে ঢাকায় যাওয়া আসা খরচ। ও টাইম কনজিউমিংএর ব্যাপার। এছাড়া ছোট খাট সমস্যায় এসব দোকানগুলো সাপোর্ট দিবে। যা ঢাকার বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারনত দেয় না।
এখন অনেক জায়গাতেই স্বল্প মূল্যে ব্যবহৃত (সেকেন্ড হ্যান্ড) ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এ ধরনের ব্যবহৃত ল্যাপটপ কেনার আগে ভালোভাবে ভাবুন। কারন, সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ বিক্রির সময় বিক্রেতারা অনেক ত্রুটির কথা চেপে যান। আর ওয়ারেন্টি না থাকায় এসব ল্যাপটপ কিনে আপনি নিশ্চিন্তে থাকতেও পারবেন না। সেকেন্ডহ্যা্ন্ড এর ক্ষেত্রে ব্যাটারী একটি বড় সমস্যা। সুতরাং ব্যাটারী চেক করুন।
ল্যাপটপের প্রধান সুবিধা হচ্ছে এটি খুব সহজেই বহন করা যায়। তাই যে ল্যাপটপ কিনবেন তার ওজন কেমন সেটা জেনে নিন। ছোট স্ক্রিনের ল্যাপটপের ওজন সাধারনত কম হয়; এসব ল্যাপটপের দামও তূলনামূলকভাবে বেশি। তবে গ্রাফিক্সের কাজ যারা করবেন তাদের জন্য একটু বড় স্কিনের ল্যাপটপ কেনাই ভালো।
সূত্র:
http://forum.projanmo.com/topic11854.html
http://techtunes.com.bd/other/tune-id/6583/
Click This Link
চরম কপিপেষ্ট পোস্ট: আমার কোন কৃতিত্ব নাইক্কা।