একটি জনগণ কিভাবে নিজেদের জন্য নরক ডেকে আনতে পারে-
গাজার জনগণ তার জ্বলন্ত প্রমান। এরা হামাসকে নিরংকুশ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে কারণ হামাস ইসরায়েলের ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক অস্ত্বিত্বে বিশ্বাস করে না। এবং তারা ইসরায়েলকে ভূমধ্যসাগরে ডুবিয়ে মারবে এমন প্রতিজ্ঞা করে। ইসরায়েলকে সামরিক ভাবে পরাজিত করা অসম্ভব এটা সব আরব রাষ্ট্র ১৯৭৩ সালে এসে পুরোপুরি বুঝতে পেরেছে। তাই প্রকাশ্যে এবং পরোক্ষে ইসরায়েলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। কোথাকার কোন হামাস ঘোষণা করেছে, তারা ইসরায়েলকে চূর্ণ করবে এবং একটি ভূখণ্ডের প্রায় সবাই তা বিশ্বাস করে এই দলকে ক্ষমতায় এনেছে। এরা ফাত্তাহ দলকে এক প্রকার কচুকাটা করে গাজা থেকে পশ্চিম তীরে বিতাড়িত করেছে।
গাজাবাসীরা হামাসকে ক্ষমতায় আনার ফলাফল হাড়েমজ্জায় টের পাচ্ছে।
ইতোমধ্যে ই গাজার ৯০% অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ১ লাখ মানুষ( ধ্বংসস্তুপের নিচে যারা চাপা পরে আছেন, তাদের সহ) ইসরায়েলের নারকীয় নৃশংসতায় মৃত্যবরন করেছেন। এর ৪০ শতাংশ শিশু। এই অশুভ দলটি এত উগ্র যে নিজ জনগণের নিরাপত্তার ব্যাপারটি কখনো ও বিবেচনায় আনে না। ৭ আগষ্ট ২০২৩ তারা যে নারকীয় তাণ্ডব চালালো অপ্রস্তুত ইসরায়েলের অভ্যন্তরে, তার নজীর ইসরায়েলের ইতিহাসে নেই। ইসরাইলি এবং অন্যান্য দেশের প্রায় ৩৫০ জন মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে গেল গাজায় এবং হত্যা করল প্রায় ১৩০০ এর মত মানুষকে। এরা এর পরিনাম কি হতে পারে এটা না ভেবেই এই নৃশংসতা চালিছে। এরা জিম্মি দেরকে বারগেইনিং চিপ হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। ইরানের প্ররোচনায় এই আক্রমণ তারা চালায়। ইরান যার বন্ধু, তার ধ্বংস হতে বেশি সময় লাগে না।
হেজবুল্লাহ ছিল বিশ্বের ননস্টেট সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অস্তিত্ব।
ইরানের চাপাচাপিতে হেজবুল্লাহ বাধ্য হয় পায়ে পা বাধিয়ে ইসরায়েলের সাথে ঝামেলা করতে। ফলাফল মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে হেজবুল্লাহর বিষদাঁত ইসরায়েল ভেংগে দিয়েছে। হেজবুল্লাহ আর কখনোই তার আগের অবস্থানে ফিরতে পারবে না। বস্তুত, হেজবুল্লাহর কোন অস্তিত্ব ই সম্ভবত থাকবে না। কারণ লেবাননের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি মুসলমান, দ্রুজ এবং খ্রিস্টানরা হেজবুল্লাহ কে ভয়ানক আপদ মনে করে। সিরিয়ারও বারোটা বাজিয়েছে ইরান সংখ্যালঘু আলাউটি শিয়াদের নিরংকুশ সামরিক সহায়তা দিয়ে। এখন বাকি আছে উত্তর ইয়েমেন। অতি দরিদ্র এবং অদক্ষ আরবদের একটি দেশ। শীগ্রই এরাও সমূলে উৎপাতিত হবে পশ্চিমা শক্তি কে বিরক্ত করে।
ইরান নিজেও মার খেতে খেতে এখন পিঠ শক্ত করে বসে আছে পরবর্তী মার খাওয়ার জন্য।
যাহোক হামাসের প্রসঙ্গে আসি। এদের সব কয়টি ইউনিট যুদ্ধ করার ক্ষমতা হারিয়েছে। প্রায় ৩০ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে বা আহত হয়েছে। আর মাত্র ২৪ জন জীবিত জিম্মি এদের কাছে আছে। হামাসের উচিত ছিল অন্তত এদের কে আর বারগেইনিং চিপ না বানানোর। কিন্তু এরা তাই করেছে। ফলাফল ২ মাস যুদ্ধবিরতির পর ফের ইসরায়েলের ভয়ানক হামলা এবং দুই দিনের মধ্যেই নিহতের সংখ্যা হয়েছে ১৪০০।
আমি বহু মাস ধরে ভাবছি গাজার বাসিন্দারা কবে হামাস এর বিরোধিতা করে মিছিল করবে।
আল্লাহকে ধন্যবাদ। আজকে দেখতে পেলাম, গাজার বাসিন্দারা মিছিল করে হামাসকে গাজা ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবী জানিয়েছে। বাংলাদেশের আবেগপ্রবণ জনগণ ইসরায়েলের ধ্বংস চায়। অনেকটা গাজার বাসিন্দাদের মত। এরা গাজার নৌকা পাহাড় দিয়ে ঠেলে। ফিলিস্তিনিরা পরিশ্রমী এবং বুদ্ধিমান আরব সম্প্রদায়। এদের আইকিউ লেভেল এভারেজ আরবদের চেয়ে বেশি। আগে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াও, অস্ত্রে বলীয়ান না হয়ে জ্ঞান বিজ্ঞানে বলীয়ান হওয়া হও। তখন অন্যকে পিষে মারার চিন্তা এমনিতেই চলে যাবে।
বিশ্বের অপরাপর জনগোষ্ঠী যখন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক
এবং জাতিগত ভাবে সাপ্রেসনে মানে চাপে থাকে, এরা বেশ উন্নতি করে। কোন গবেষণা হয়েছে কি না জানি না, তবে আমার মনে হয় বাংলাদেশে আমাদের হিন্দু ভাইবোনেরা এদের মুসলমান প্রতিবেশীদের চেয়ে আর্থিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে আছেন। এদের সন্তানদের সুশিক্ষা মুসলমানদের সন্তানদের সংখ্যাগত তুলনায় ভালো। এরা অসুস্থ কম হন। কারণ বাংগালী মুসলমানদের মত গান্ডেপিন্ডে গিলেন কম। দুর্দিনের জন্য সঞ্চয় রাখেন এবং অবশ্য ই খানিকটা জাতিগত চাপে থাকেন কারণে অথবা অকারণে।
বাংলাদেশে আহামদিয়া মুসলমানদের আর্থিক অবস্থা ও বেশ ভালো।
যেমন ভালো বিশ্বজুড়ে ইসমাইলিয়া মুসলমানদের অবস্থা। এর কারণ এরাও বিভিন্ন মুসলিম দেশে বিদ্বেষের শিকার। ইহুদিদের কথা আমরা সবাই জানি। ২৬০০ বছর যাবত রোমান, খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের লাত্থিগুতা খেয়ে খেয়ে এরা ক্রমশ নিজেদের অবস্থান কে শক্তিশালী করে আকাশ সমান উচ্চতায় নিয়ে গেছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এর ছিটেফোঁটা দেখা যায় না। এরাও ৮০ বছর যাবত জাতিগত দমনপীড়নের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং বৈজ্ঞানিক কোন উন্নতির প্যারামিটারেই এরা নাই। এর আগে জর্ডান ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিয়ে নিজের দেশই প্রায় খোয়াতে বসেছিল পিএলও র হাতে। অনেক কষ্টে পিএলও কে পরাজিত করে দেশছাড়া করছে। কাজেই কোন আরব রাষ্ট্র ই ফিলিস্তিনি দের আশ্রয় দিতে চায় না।
আমার এই লেখার মূল বক্তব্য; ইসরায়েলকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশীর মত থাকাই দরকার।
(লেখাটি আমার নয়। আমার কাজিনের। উনি একটা স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক। লেখাটি সঠিক, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:২১