হিমাংশুর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা হচ্ছে জীবনের সেই গুটিকয়েক সম্পর্কগুলোর একটি যা এখনও আমাকে নস্টালজিক করে। হিমাংশু আমার বন্ধু। হিমাংশু কথাটার মানে হচ্ছে চাঁদ। যারা তাঁকে কাছে থেকে দেখেছেন কিংবা মিশেছেন আশা করি সবাই এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে তার নামের সাথে সংযুক্ত হতে পেরে চাঁদ নিঃসন্দেহে নিজেকে গৌরবান্বিতই বোধ করেছে কিংবা এখনও করছে।
হিমাংশু ঠিক আমার শৈশবের বন্ধু নয়। বাবার চাকরী বদলীজনিত কারণে কুমিল্লা থেকে রাজধানী ঢাকার একটি হাইস্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হতে বাধ্য হলাম। অবশ্য তখন এটাকে রাজধানী বললে একটু নয়, অনেকখানিই বাড়িয়ে বলা হবে। ঠিক সে সময়ে এলাকাটা আমাদের কুমিল্লা কিংবা দেশের অন্যান্য জেলাশহরের তুলনায় অজ পাড়াগাঁই হবে। এখন অবশ্য পরিবেশ পরিস্থিতি অনেক পাল্টে গেছে। যাহোক, স্কুলের প্রথম দিনই যে ছেলেটার সাথে একই বেঞ্চিতে বসেছিলাম সেই বর্ণিত হিমাংশু। প্রথম দিনই সম্ভবতো পরস্পরের প্রতি একটা অজানা আকর্ষণ বোধ করেছিলাম। সেই আকর্ষণের টানেই পরের দিনও একসাথে বসলাম। এভাবে সম্পর্কটা একসময় গভীর হল। এই গভীরতার সূত্র ধরেই একসময় আমি ওর বাড়িতে গেলাম, সেও আমার বাড়িতে আসল।
পায়ে হেটে আমাদের বাড়ি থেকে ওদের বাড়ি যেতে ১০ মিনিট লাগতো। লোকমুখে শুনেছি, হিমাংশুরাই ছিলো এ এলাকার সবচেয়ে পুরনো বাসিন্দা। ওদের ঘরগুলো ছিলো মাটির তৈরি। ভিটেগুলো ছিলো চোখে পড়ার মতো উচু। সম্ভবতো একসময় এখানে প্রচুর পানি হতো। সেই পানির হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্যই এই ব্যবস্থা।
সময়ের সাথে সাথে অন্যান্য সহপাঠীদের কাছে আমরা মাণিকজোড় হিসেবে পরিচিত হলাম। পরিচিতিটা মাণিকজোড় হলেও পারস্পরিক যোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে আমাদের দুজনের তুলনা চলে " কোথায় আগরতলা আর কোথায় চকির তলা"। নিঃসন্দেহে চকির তলাটা বুঝাতে আমি আমাকেই বুঝিয়েছি। চেহারা, লেখাপড়া, খেলাধুলা কোন বিবেচনায়ই আমি তাঁর ধারে কাছে ছিলামনা। অবশ্য এটা আমাকে সব সময়ই সুবিধা দিতো। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান একজন নীচের সারির ব্যাটসম্যানের সাথে জুটি বেধে ব্যাট করার সময় যেমন সব সময় তাকে আগলে রাখে তেমনি হিমাংশুও সব ক্ষেত্রেই আমাকে আগলে রাখতো।
দু'জনের সমপর্কের পুরুত্বটা বৃদ্ধির পিছনে আমাদের দু পরিবারের ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আমার নানা বাড়ির কাছে একটি একটি হিন্দুবাড়ি ছিল।নানা বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেই হিন্দুবাড়িটিতেও যেতাম। আমার প্রতি তাদের আচার আচরণ কখনই আমার মাঝে এ বোধ তৈরি করেনি যে তারা ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক। আমার মামারা আমার প্রতি যেমনটা স্নেহ দেখাতেন তাদের কাছ থেকেও তেমনটা পেতাম। তারাও যখন কোন কাজে জেলা সদরে আসতেন তখন আমাদের বাড়িতে উঠতেন। তাদের প্রতি আমার মায়ের আচরণে কখনও বোধ করিনি তাঁরা ভিন্ন সম্প্রদায়ের কেউ। এ বিবেচনায় হিমাংশুদের পরিবারও কোন অংশেই পিছিয়ে ছিলনা। বিশেষভাবে ওর মা ছিল অনন্য।
পারিবারিক এই সম্পর্কের কারণেই প্রায় প্রতিদিনই ওর বাড়িতে একবার না একবার যেতাম। সেও মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে আসত। ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলোর সময় পুরোটা সময় যার বাড়িকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানটি হতো সেই বাড়িতেই থাকতাম। পুজোর পুরোটা সময় আমি ওর বাড়িতে অবস্থান করতাম। ঈদ কিংবা অন্য কোন ধর্মীয় বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে সেও পুরোটা সময় আমাদের বাড়িতে থাকত।
সংগতি আগের মতো না থাকলেও পুজা-পার্বনগুলো ওরা ধুমধাম করেই পালন করত। দুর্গাপুজার সময় বাহুল্যতা একটু বেশি লক্ষ্য করতাম। আনুষ্ঠানীক পুজার পাশাপাশি ওদেরকে মহাদেবের (ভগবান শিব) প্রতি বেশি অনুরক্ত মনে হতো। ওদের ঘরের প্রবেশ পথেই প্রধান দরজার পাশে কাগজে চিত্রিত মহাদেবের একটি প্রতিমূর্তি ছিল। গলায় জীবন্ত বিষধর সাপ প্যাচানো মহাদেব হিন্দুদের ত্রি-ঈশ্বরের অন্যতম। হিমালয়ের কৈলাশ শৃঙ্গে মহাশয়ের বাস। গণেশ ও কার্তিক তার দুই পুত্র। তিনি সমস্ত পৃথিবীর আর্ত-পিড়ীত, অসহায় ও দুর্বলের ত্রাণকর্তা হিসেবে বিবেচিত। ভক্তের প্রতি তাঁর করুণা অপার। অতিরিক্ত অসস্তুষ্ট হলে তান্ডবনৃত্য শুরু করেন। তাঁর এ নৃত্য ভয়াবহ কিছু একটা ঘটার আগাম সংকেত।
মহাদেবের প্রতি এই অনুরাগ নিরেট স্বার্থহীন ভক্তি ছিলনা। একটা অসহায়ত্ব সব সময়ই ওদের মাঝে লক্ষ্য করেছি। ওর মায়ের কাছ থেকে জেনেছিলাম যে এলাকার বেশিরভাগ ভূ-সম্পত্তি এক সময় হিমাংশুদের পূর্ব পুরুষদেরই ছিলো। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এলাকার একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান (যিনি এলাকার শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন) সব গ্রাস করেন। প্রাণ বাঁচাতে হিমাংশুদের অনেক আত্বীয়-স্বজন দেশ ছাড়ে। এলাকার স্কুলটিও (যেটাতে আমরা পড়তাম) হিমাংশুদের পূর্ব পুরুষদের সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। যদিও তার নাম ফলকে সব সময়ই প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে জ্বলজ্বল করে জ্বলে সেই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের নাম। যাহোক, সব হারিয়ে হিমাংশুদের শুধু বসতভিটাটাই বর্তমান ছিল। অবশ্য সামান্য এই ভিটাটাও প্রভাবশালীদের নজরের বাইরে ছিলনা। তাঁরা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। একদিন অবশ্য সেই সুযোগ তাঁরা পেয়েও যান।
ভিন্ন সমপ্রদায়কে উদ্দেশ্য করে পরিহাস, ব্যঙ্গ, উপহাস ইত্যাদির সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। হিমাংশুর সঙ্গে অতিরিক্ত শখ্যতার কারণে আমাকেও মাঝে মাঝে এ ধরণের পরিহাস শুনতে হত। কিন্তু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সাথে কোন পরিচয় ছিলনা। মাঝে মাঝে খবরের কাগজে ভারতে সংঘটিত এ জাতীয় দাঙ্গার খবর পেতাম। সে তুলনায় আমাদের দেশকে শান্তিপূর্ণই মনে হত। ঠিক তেমনই একটি দাঙ্গা ঘটেছিলো যখন আমি নবম শ্রেণীতে পড়ি। নরসীমা রাওয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার ভারতে ক্ষমতাসীন। বিজেপি প্রভাবশালী বিরোধীদল। সেই প্রভাবশালী বিরোধীদলের নেতা আদভানীর নেতৃত্বে উগ্র হিন্দুরা ষোড়শ শতাব্দীর বাবরী মসজিদকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলো। হিন্দুদের বিশ্বাস এখানে তাদের ভগবান রাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে স্মরণ করে এখানে একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। মোগল সম্রাট বাবর সেই মন্দির ভেঙ্গে এখানে কথিত মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। এ ব্যপারে তাঁরা আদালত কিংবা কোন ঐতিহাসিক দলিলকে মানতে রাজি নয়। ভগবানের সন্মান নিয়ে কোন আপোষ নয়। রাওয়ের সরকারও জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে তাঁদের কোন বাধা দিলনা।
মসজিদ ভাঙ্গার পর পরিকল্পনা মোতাবেক সারা ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে দেয়া হল। সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে মুসলমানরাই বেশি নিপীড়িত হল। বিজেপিরই আরেক জ্ঞাতিভাই জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার তখন বাংলাদেশে ক্ষমতায়। এই ইসলামী জাতীয়তাবাদী সরকারের আমলে আমরা ভারত অপেক্ষা কোন অংশে পিছে থাকবো এমনটা আশা করা অস্বাভাবিক ছিল। ফলশ্রুতিতে সম্ভবতো সরকারী মদদেই এদেশেরও বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেয়া হলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। লোকজনের কথাবার্তাতে আমাদের মহল্লাতেও সেরকমের কিছু একটা সংঘঠিত হওয়ার আঁচ পেলাম। একটা অজানা আশংকায় মনটা ছেয়ে গেল। শংকাটা আরো জোরদার হলো যখন পরপর দু'দিন হিমাংশুকে স্কুলে অনুপস্থিত পেলাম। বিকেলে ওর বাড়িতে গিয়ে দেখলাম বাড়ির চারপাশে পুলিশ প্রহরা। বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাঁধা দেয়া হলো। বাড়ির বাসিন্দাদের বিষয়ে জানতে চাইলে জানানো হলো, তাঁরা কেউ বাড়িতে নেই। কোন এক আত্বীযের বাড়িতে গেছেন। যাহোক পুলিশ প্রহরার কারণে ওরা আপাতত নিরাপদ আছে ভেবে স্বস্তি পেলাম।
এর ঠিক দিন দু'য়েক পরে রাত্র দশটা কি এগারটার দিকে রাস্তায় বিরাট ধরণের একটা শোরগোল শুনতে পেলাম। কি হয়েছে, বিষয়টা জানার আগ্রহে বাড়ির বের হবার পূর্ব মুহুর্তেই বাবার ধমক খেয়ে ঘরে প্রবেশ করলাম। নিজের ঘরে ঢুকার মুহুর্তে লক্ষ্য করলাম বাবা যেন মাকে নীচু স্বরে করে কিছু একটা বলছে। একটু পরে বাবা বাইরে চলে গেলে আমি মার কাছে জানতে চাইলাম, কি হয়েছে। মলিন মুখে মা বলল, কিছু না। মায়ের চেহারার প্রকাশ আমাকে নিশ্চিন্ত করল যে, অনাকাংখিত কিছু একটা ঘটে গেছে। মনে মনে প্রার্থনা করলাম যে, ঘটনাটির সাথে হিমাংশুদের যেন কোন সংশ্লিষ্টতা না থাকে।
পরের দিন ঘুম থেকে জেগেই ছুটলাম হিমাংশুদের বাড়ির দিকে। দেখলাম বাড়ির চারপাশে অনেক লোকের সমারোহ। সমারোহে নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যও ছিল। লোকের ভীড় ঠেলে সামনে এগিয়ে যেয়ে আমি যা দেখলাম তা কোনক্রমেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। হিমাংশুদের ছোট ছোট সেই মাটির ঘরগুলোর কোন নিশানাও অবশিষ্ট নেই। কোন আসবাবপত্র বা ঘরের চালাগুলোও নজরে এলোনা। পুরো জমি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ভঙ্গুর মাটির কণাগুলো। কণাগুলোর নীচে স্থানে স্থানে ছড়িয়ে আছে মহাদেবের প্রতিকৃতির ছেঁড়া টুকরাগুলো। বুঝলাম, শক্তিমান মহাদেব কোন তান্ডব করার সুযোগ পাননি। বরং তান্ডবটা তাঁর নিজের উপর দিয়েই বয়ে গেছে। আমার সমস্ত জমায়িত ক্ষোভগুলো তখন মহাদেবের প্রতিকৃতির ছেঁড়া টুকরাগুলো উপর আঁচরে পড়ল। টুকরাগুলো দিকে তাকিয়ে স্বগত স্বরে বললাম "ধিক মহাদেব! কি অপদার্থ তুমি! নিজেকেই রক্ষা করতো পারোনা। অথচ তুমিই নাকি অসহায়ের সম্বল। লজ্জা থাকলে এখনই নিজেকে অসহায় ঘোষণা করে অবসরে যেতে"। মহাদেবের কাছ থেকে কোন উত্তর আসেনা। মনে হয় তিনি মহাধ্যানে নিমগ্ন।
ধ্বংসস্তুপের মাঝে বেশিক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না। মনে হলো আমার পুরো শরীরটি নিথর হয়ে আসছে। সেই নিথর দেহটাকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। ফিরবার পথে মনে হলো ধিক্কারটা আসলে মহাদেবের প্রাপ্য ছিলনা। ধিক্কারটা আসলেই আমারই প্রাপ্য। কাগজের একটি মূর্তির উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে নিজে কেমন অপদার্থের মতো সাধু সাজার চেষ্টা করেছি। বছরের পর বছর সে যাদের বন্ধু মনে করতো সেই আমরাইতো তার জন্য মহাদেব হতে পারতাম। অথচ, আমরা তা না করে বিষয়টাকে সামাজিক ঝামেলা মনে করে নিজেদেরকে নিরাপদ দুরত্বে রেখেছি।
হিমাংশুদের রক্ষা করার জন্য সরকার পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করেছিলো। ধর্মরক্ষক সমিতি যখন তাদের বাড়িটি ধরিত্রির মাঝে মিশিয়ে দিচ্ছিলো হয়তো তখনো পুলিশ প্রহরা ছিলো। ধরিত্রির মাঝে বিলীন হওয়ার পরেও এর চারপাশে পুলিশ প্রহরা দেখেছি। পুলিশ প্রহরা এখনো আছে। তবে সেই পুলিশ এখন আর কোন ধ্বংস স্তুপ পাহারা দেয় না। পাহারা দেয় বিশাল উঁচু এক সুপার মার্কেট। সেই মার্কেট কমপ্লেক্সে একখানা মসজিদও স্থাপন করা হয়েছে। মুয়াজ্জীনের সুললিত আহবানে তাড়িত হয়ে এলাকবাসী এখানে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে খোদার শুকরিয়া আদায় করে।
এর পর বহু খুঁজেও হিমাংশুর কোন খোঁজ পাইনি। হিমাংশুও কোন যোগাযোগ করেনি। এমন একজন অপদার্থ বন্ধুর সাথে পুনরায় কেউ যোগাযোগ করবে এমনটা আশা করাও বোকামী। হিমাংশু এখন কোথায় আছে, ক্যামন আছে, তার কোন খবর আমার জানা নেই। হয়তো কলকাতার আশে পাশের কোন বস্তিতে বড় হয়ে হিমাংশু এখন পরিপূর্ণ যুবক। এতাদিনে হয়তো সে শিবসেনা কিংবা বজরং দলের হয়ে দাদাগিরি করছে। আর এই দাদা হওয়ার সুবাদে যদি সুযোগ বুঝে কোনদিন কোন মুসলমানকে ভিটে বাড়ি ছাড়া করে, যদি কোরআনের পাতাগুলোরে ছিড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভিটার উপরে ফেলে রাখে, তবে কী আমরা আমরা তাকে খুব বেশি দায়ী করতে পারবো? অন্তত আমি পারবোনা।
আমাকে লেখাটি পড়ে যারা বলবেন ভারতে কিংবা পৃথিবীর অন্যান্য অংশে মুসলমানরাও অনুরূপ আচরণের শিকার হচ্ছেন আমি তাদের বক্তব্যকেও সত্য বলে স্বীকার করি। আমি জানি পৃথিবীর সব অংশেই সংখ্যলঘুরা কতোটা অত্যচারিত, কতোটা বঞ্চিত, কতোটা অবহেলিত। সংখ্যালঘু আপনি ধর্মের কারণেও হতে পারেন, ভাষার কারণেও হতে পারেন, বর্ণের কারণেও হতে পারেন কিংবা জাতীয়তার কারণেও হতে পারেন। আমার শুধু একটাই প্রশ্ন এই সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে আর কতোকাল স্বার্থান্বেষী মহল ধর্ম, বর্ণ, জাতীয়তা,ভাষাকে পুঁজি করে মানুষকে ঘরছাড়া করবে? আর কতোকাল বাহ্যিক অবয়ব বা কৃষ্টির কারণে মানুষকে নিজ ভূমিতে পরবাসীর মতো বসবাস করতে হবে? কবে ধর্মের চেয়ে মানুষ বড় হবে? কবে মানব ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হবে?