অনেকদিন পর আজ ব্র্যাক ব্যাংকের বনানী শাখায় গিয়েছিলাম একটি একাউন্ট পে-চেক জমা দেবার জন্য। অনেকদিন পরে যেহেতু গিয়েছি তাই কোথায় চেকটি জমা দিতে হবে জানি না। তাই প্রথম ডেস্কে যে ভদ্র মহিলা বসে ছিল তাকেই জিজ্ঞাসা করলাম। একাউন্ট পে-চেক কোথায় জমা দিব ? ভদ্র মহিলা বিরক্ত ভঙ্গিতে ক্যাশ কাউন্টার দেখিয়ে দিল। আমি বললাম ক্যাশ চেক না, একাউন্ট পে-চেক। এবার উনি আরও বিরক্তি ভঙ্গিতে বলল একাউন্ট পে-চেক কি ? জানিনা বলে, আবারও ক্যাশ কাউন্টার দেখিয়ে বলল ওখানে জিজ্ঞাসা করেন। এবার আমার মেজাজটা হয়ে গেল খারাপ, বললাম একাউন্ট পে-চেক কি চেনেন না, আবার ব্যাংকের চেয়ারে বসে আছেন কি জন্যে ? বলে ক্যাশ কাউন্টারের দিকে হাটা দিলাম।
ঘটনাটা গত বছরের জানুয়ারির। স্থান একই ব্র্যাক ব্যাংক বনানী শাখা। আমার একটা পারসোনাল লোন ছিল। যেটা ক্লোজ হয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু সময়রে অভাবে ক্লোজিং লেটার এবং গ্যারান্টি চেক গুলো ফেরত আনতে পারি নাই। তাই গেলাম ব্যাংকে, গিয়ে দেখি বিশাল কাহিনী। টোকেন নিয়ে সিরিয়াল দিতে হয়। তারপর একজন একজন করে ডাক পরে। আমার সামনে আরও পাচঁজন আছে, অপেক্ষা করতে লাগলাম। দেখলাম ব্যাংকের চারজন কাস্টমার সার্ভিস কমকর্তাদের মধ্যে একজন মাত্র ছেলে বাকীরা সবাই মেয়ে। মেয়েদের মধ্যে আবার একজন একজন বেশ সুন্দরী। আমি মনে মনে ভাবছি আমার ডাকটা যেন ছেলেটার কাছ থেকে আসে। আর যদি মেয়েদের কাছ থেকে আসে, তবে যেন সেটা অবশ্যই সুন্দরী মেয়েটির কাছ থেকে না আসে। (কারন আমার অতীত অভিজ্ঞতা হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে যত সুন্দরী মেয়ে তত ভোগান্তী)। আমার কপাল খারাপ আমার ডাকটা আসলো সেই সুন্দরী মেয়ের কাছেই। অনেক সময় লাগলো তাকে বোঝাতে আমার প্রয়োজনীতা। তারপর উনি তার কাছে দূরে থাকা ভাইয়া আপুদের কাছ গিয়ে ম্যারাথন পরামর্শ নিতে লাগলো। পরামর্শ শেষে তার পার্স থেকে তার মতো সুন্দর একটা পানির পট বের করে ধীরে ধীরে পানি পান করার পর বলল, আপনাকে একটা এপ্লিকেশন দিতে হবে। আমি এপ্লিকেশন লিখে তার কাছ থেকে সিল এবং সিগনেচার সহ রিসিভ করিয়ে নিলাম। আমাকে ৭দিন পরে আবার আসতে বলল। আমি ৭দিন পরে আবার সেই সুন্দরীর সামনে হাজির। আমাকে তার কাছে আসার ইতিহাস ব্যাখা করতে হলো। উনি সব শুনার পর দীর্ঘ সময় নিয়ে বিভিন্ন রেজিষ্টার, ফাইল, তার আসে পাশের টেবিলের ড্রয়ার তন্নতন্ন করে খুজে বিফল হয়ে। যে মহামূল্যবান তথ্য আমাকে দিলেন তা শুনে কিছুক্ষনের জন্য টাস্কি খাইয়া গেলাম। উনি বললেন স্যার আপনার মনে হয় কোন ভুল হচ্ছে আপনি মনে হয় এপ্লিকেশনটা অন্য কাউকে দিয়ে গেছেন ! আমি বললাম আমার কোন ভুল হচ্ছে না আমি আপনাকে দিয়ে গেছি। উনি অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কিন্তু আমি রিসিভ করলে তো এখানেই থাকতো ? আমি উনার কাছ থেকে ব্যাংকের ফ্যাক্স নাম্বার নিয়ে আমার অফিসের এক সহকর্মীকে রিসিভ কপিটা ফ্যাক্স করতে বললাম। কিছুক্ষন পরেই রিসিভ কপি হাজির, কপিটা দেখেও সুন্দরী অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তারপর উনি আবার তার কাছে দূরে থাকা ভাইয়া আপুদের কাছ গিয়ে ম্যারাথন পরামর্শ নিতে লাগলো। এবং ফিরে এসে বেশ কয়েকবার সরি বলে, আবার ২/৩দিন পরে আসতে বলল। কি আর করা, আবার গেলাম ৩দিন পর। তবে এবার মনে মনে প্রস্তুতি নিয়ে গেলাম এবার কোন ঘাপলা হলে সুন্দরী তোমার খরব আছে। কিন্তু কপাল খারাপ এবার নতুন ঘাপলা সুন্দরী হাসি মুখে বলল স্যার লোন এপ্রোভাল পেপার টা লাগবে সেটা ছাড়া হবে না। বললাম একাজটার জন্য এবার নিয়ে তিন বার আসলাম কিন্তু আগে বলেন নি কেন এটা লাগবে? মেজাজ গেল চরম খারাপ হয়ে উচ্চস্বরে বললাম আপনার ম্যানেজারকে ডাকেন। এবার সুন্দরী গেল ভীত হয়ে, বলল স্যার আমি নতুন তো তাই ভুল হয়েছে। আমি বললাম আপনার কোন কথা শুনতে চাচ্ছি না। ম্যানেজারকে ডাকেন, আমি এ ব্যাপারে এক্ষুনি সমাধান চাচ্ছি। আমার উচ্চস্বরে কথা শুনে ম্যানেজার রুম থেকে বের হয়ে আসলো। আমি তাকে সব খুলে বললাম, ইনি সব শুনে সরি, বলে সমাধানের ব্যবস্থা করলেন...........
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১২