এমন মন্তব্য করেছেন বাংলার কাল মার্ক্স ফরহাদ মজহার সাহেবের স্ত্রী মৎস উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। তিনি বরাবরই ইলিশ মাছের প্রতি বেশি যত্নবান। সাধারণ মানুষ যাতে বড়ো ইলিশ মাছ খেতে পারে তার জন্য তিনি জাটকা ইলিশ খেতে নিষেধ করেছেন। এর আগেও তিনি ভারতে ইলিশ মাছ পাঠাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। দেশের মানুষের প্রতি উনার টান আছে। গত ৭ই এপ্রিল থেকে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখতে বলেছে সরকার। অন্যদিকে পহেলা বৈশাখ আসন্ন প্রায়। সব মিলিয়ে ফরিদা আক্তার এমন বক্তব্য দিয়েছেন। পান্তা-ইলিশ কোনো বাঙালির সংস্কৃতি ছিলো না। ঢাকায় এর প্রচলন শুরু হয় ১৯৯০ সালে। সাধারণত চৈত্র সংক্রানির দিনে মুড়ি-মুড়কি, বাতাসা, নাড়ু এসব ছিলো বাঙালির প্রধান খাদ্য। সময়ের বিবর্তনে আজ তা অনেকটাই হারিয়ে গেছে।
ইলিশ বাঙালির খুব প্রিয় একটি মাছ। শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকায় ছেলেবেলা কাটানোর ফলে দরিদ্র শ্রেণীর ইলিশ মাছ কিনে খাওয়ার যে আকাঙ্খা আছে তা বুঝতে পেরেছিলাম। শ্রমিক পরিবারে জাটকা ইলিশ কেনা হলে সে কি আনন্দ ! সেদিন বাচ্চারা ভাত একটু বেশি খেত। তাদের জিজ্ঞাসা করলে খুব গর্ব করে বলতো ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খাইসি। ইলিশ মাছের প্রতি বাঙালির এই অকৃত্রিম টান কখনো যাবে না। যারা এখন টিনেজ সময় পার করছে এরা মাংস জাতীয় খাবার বেশি পছন্দ করে। বাসায় মাছ রান্না হলে তাদের ভাত গলা দিয়ে নামতে কষ্ট হয়।
ইলিশ মাছের অত্যধিক দাম হওয়ায় অনেক বাচ্চারা ইলিশ মাছ কি বস্তু তা চিনে না। একবার টিভিতে মাদরাসা পড়ুয়া এক বাচ্চাকে জাতীয় মাছের নাম জিজ্ঞাসা করা হলে সে উত্তর দিয়েছিলো পাঙাশ আমাদের জাতীয় মাছ । বাচ্চাটা কি ভুল উত্তর দিয়েছে ? যে মাছ খেতে তুলনামুলক ভাবে সহজলভ্য সেটাই তো জাতীয় মাছ হওয়া উচিত। এত দামী একটি মাছকে ইলিশ মাছ ঘোষণা করা উচিত হয় নি !
মৎস উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে অনেকে হাসি ঠাট্টা করছে। পূর্বে কোনো উৎসব চলার সময়, দাম বাড়লে বিকল্প পণ্য ব্যবহারের জন্য যারা পরামর্শ দিতেন তাদের সাথে উনার বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়। বিগত বছরগুলোতে আমরা এধরণের যেসব বক্তব্য শুনেছিলাম :
১- ভাতের বদলে আলু খান।
২- ভাত কম খান। সাথে আলু বেশি খান।
৩- বেগুনিতে বেগুনের পরিবর্তে কুমড়ো ব্যবহার করুন।
৪- গোরুর মাংসের বদলে কাঠালের বার্গার খান।
৫- পেয়াজ ছাড়া রান্না করুন।
৬- সারা বছর সিদ্ধ ডিম সংরক্ষণ করুন।
৭- রমজানে খেজুরের বদলে বড়ই খান।
কোনো ডায়ালগ কি বাদ গেল ? পাঠক চাইলে কমেন্টে জানাতে পারেন কারা কারা উল্লেখিত মন্তব্য করে জনসাধারণ কে বিনোদন দিতেন।
