আগের পোষ্ট লিখেছিলাম আলু পোড়া খেতে কত মজা তাই নিয়ে। সৌদি সরকার কল্লা কাটলো আর দোষ হলো ইসলামের। ইসলাম মানে বর্বরতা, ইসলাম মানে কল্লা কাটা আরো কত কি! যস্মিন দেশে যদাচার। বাংলাদেশে আমরা দেই রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফাঁসী, আমেরিকা দেয় ইলেকট্রিক শক অথবা পয়জন সৌদিরা কাটে কল্লা। এগুলো অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান।অপরাধ ছাড়াও সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান আমরা বিভিন্ন দেশে দেখতে পাই। যেমন ধরুন, ৭১ এ পাকি আর্মিরা যা করেছে, আমিনবাজার হত্যাকান্ড, ইসরাইল কতৃক ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে, আমেরিকা, ফ্রান্স, বৃটেন এদের কথা বাদ ই দিলাম , এদের কাছেতো মানুষ মারার সার্টিফিকেটই আছ। যেকোন দেশে যেকোন সময় এরা দিনে হাজার মানুষ ও মেরে ফেলার অধিকার রাখে। এছাড়া আছে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী এরাও এদের ইচ্ছানুযায়ী কেবল নিরপরাধ মানুষই বেছে বেছে মারে। ফিরে আসি কল্লাকাটা প্রসংগে।
একজন মানুষ খুনের বদলে ৮ জনকে শিরোচ্ছেদ কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। সঠিক বিচার হলে কখনই শাস্তিটা এমন হতে পারেনা। এমনকি আমি এখনও সন্দিহান তারা আসলেই প্রকৃত অপরাধী ছিলো কিনা। তারা তো নিজেদেরকে ডিফেন্ড ই করেনি (কতটা অসহায় ছিলো তারা!) সাদাচোখে আমরা যেটা দেখতে পেয়েছি সেটা হলো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ২০০৭ সালে। তখন থেকেই বিচারকার্য শুরু হয়ছে। অপরাধীরা শাস্তি পেয়েছে ২০১১ সালে। তার মানে মাঝখানে ৪ টি বছর পার হয়েছে। এবং আমরা জানতে পেরেছি শিরোচ্ছেদ কার্যকর হবার পর। তাও ভালো যে আ্যমেনেস্টি বলে কিছু একটা ছিলো। নাহলে আমাদের সরকার ঘটনাটা বেমালুম চেপে যেত। সৌদিতে সব বিচারকার্য চলে আরবীতে। অপরাধীর দায়িত্ব দোভাষী এবং আইনজীবি যোগাড় করে নিজেকে ডিফেন্ড করা। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে অপরাধীরা ছিলো গরীব এবং দোভাষীতো দুরে থাক তাদের কোন আইনজীবিও ছিলোনা। আর আমাদের অক্ষম সৌদি রাষ্ট্রদূত ব্যস্ত ছিলেন আরাম আয়েশে (আমার জানা নাই তিনি ওখানে কি করেন)।
Most of the defendants have no defense lawyer, have insufficient hold of the Arabic language to follow proceedings and in many cases are not informed of the progress of legal proceedings against them. They have no access to influential figures or money, both of which might have secured them pardons. Saudi applies the death penalty for a wide range of offences, the Amnesty International said.
টেলিগ্রাফের কলাম
আমার মনে ঘটনাটার যে চিত্র দাড়ায় তা এরকম:
৮ বাংলাদেশির বিচার হচ্ছে আরবীতে । তারা তার আগামাথা কিছুই বোঝেনা।হয়তো কোনভাবে তাদের আত্মীয়দের কাছে খবর গিয়েছে। দোভাষী নিয়োগ দিতে হবে। আইনজীবি যোগাড় করতে হবে। তাহলে তারা নির্দোষ প্রমানিত হবে (নিশ্চয়ই আটজন ই খুনি না। আটজন ডাকাত হতে পারে কিন্তু একজনের খুনি আটজন হতে পারেনা)। তার আত্মীয়রা দৌড়িয়েছে সরকারের কাছে।বাংলাদেশ তখন উত্তাল। দুই দেশদরদী নেত্রী তখন জেলে। কে শোনে কার কথা! হয়তো সৌদিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ঘটনার রিপোর্ট এসেছে (অবশ্যই এসেছে) তারা তেমন পাত্তা দেয়নি আউল ফাউল ঘটনা ভেবে। হয়তো তারা ভেবেছে আছি মাত্র কয়দিন, আগে লুটেপুটে খেয়ে নিই পরে হজম করা যাবে। ভিকটিমরা আশায় আশায় দিন গুনেছে কবে নির্বাচিত সরকার আসবে। তখন হয়তো তাদের কথা কেউ শুনবে। নির্বাচিত সরকারও এসেছে।সরকার প্রধান সৌদি বাদশার সাথে প্রথমবারের মতো সাক্ষাতে গদগদ হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেই গর্বে গর্ভবতী (রূপক) হয়েছেন। কিন্তু হায়! আট বাংলাদেশীর আর্তনাদ কেউ শোনেনি। নিয়োগ হয়নি কোন দোভাষীর ,নিয়োগ হয়নি কোন আইনজীবির। ব্লাড মানি তো বহুদূরের কথা। আদালত আরবীতে তাদেরকে হয়তো বলেছে
"তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে খুনের , এর বিরুদ্ধে তোমাদের কিছু বলার থাকলে বলো। অভিযুক্ত নিরব থেকেছে। আদলত বলেছে তোমাদের নিরবতাকে সম্মতি হিসাবে ধরে নেয়া হবে। অভিযুক্ত নিরব থেকেছে কারন তারা বিচারকের কথার আগামাথা কিছুই বোঝেনা। আদালত হয়তো অনেকবার মূলতবী হয়েছে এই চার বছরে। কিন্তু নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আমাদের মোটা বেতনের রাষ্ট্রদূত কোন আপিল করার সময় পাননি। হায়রে মানবতা!!!"
তারেক, কোকো, মামুন কত শত কোটি টাকা মেরে দিলো , আমার আবুল অল্প কয়দিনে শত কোটি টাকা মেরে দিলো, দরবেশরা মিলে কত হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিলো দেশের রিজার্ভ খালি করে দিয়ে..কিন্তু হায় এই আট হতভাগার ব্লাড মানি দেওয়ার সামর্থ কারো নাই। আমাদের গরীব জনগনকে অন্তত এক মাস আগে তোর জানতে দিতি। আমরাই তুলে দিতাম ব্লাড মানি।
পররাষ্ট্র সচীব বলে অযৌক্তিক কিছু হয়নি (গালাগালি)
দেখুন কত অসহায় বাংলাদেশিরা
সৌদি আরব -- প্রসন্গ কল্লা কাটা এবং আলুপোড়া খাওয়া