আলোর রঙ
যেভাবে গিয়েছিলাম আজমীরিগঞ্জ...
সেদিন ছিল নবমীর রাত, সন্ধ্যায় আজমীরিগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সে ঘোরাঘুরি করে বেরুলাম একসাথে সবাই পূজা দেখতে। বস্তুত গ্রামে পূজামন্ডপে ঘুরে পূজা দেখা আমার এই প্রথম, ধূপ আর আগুন নিয়ে নৃত্যও দেখলাম প্রথম পূজামন্ডপে।শুনলাম রাতে যাত্রাপালা হবে- যাত্রা এর আগে কখনো দেখি নি বলে চরম আগ্রহ হলো। ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের উপস্থিতির কারণে বিশেষ খাতির পেলাম সব জায়গায়, ট্রাইপড ছাড়া ছবি তোলার ব্যর্থ প্রচেষ্টাও চালালাম।
দুর্গতিনাশিনী
আলোর নাচন
পরদিন সকালে বাসার সামনের পুকুরের টলটলে জলে আমার ভাগ্নে আর ভাতিজা (হ্যা, দুই বছর চার মাসের ভাতিজা আমার সাঁতার জানে) সাঁতরাচ্ছিল, হিংসায় আমার গা জ্বলে যাচ্ছিল। একা একাই বের হয়েছিলাম (মাঝপথে ভাবী জোর করে পিয়ন একজন দিয়ে দিল সাথে), রাতে যেদিক গিয়েছিলাম তার উল্টোদিকে হাঁটতে হাঁটতে বার বারই চোখ চলে যাচ্ছিল রাস্তার পাশের ঝোঁপের ছোট্ট ছোট্ট বুনোফুলে (বুনোফুলের পোস্টের বেশীর ভাগ ছবি সে সময়ে তোলা)।
জল-কেলি
যে জীবন ফড়িং এর ১
যে জীবন ফড়িং এর ২
প্রতীক্ষা ১
জা-ল
ভাগ্নে আমার
বেলা বাড়লে রওয়ানা দিলাম ফুপির বাড়ীর উদ্দেশ্যে, নদীপথে চল্লিশ মিনিটের রাস্তা পিটুয়ারকান্দী। ফুপাতো বোনের বর এল আমাদের নিতে, যাকে এই প্রথম দেখলাম। খুব লজ্জা পেলাম এই ভেবে যে আমার ফুপাতো বোনের পিচ্চিটাকে অনেকক্ষণ ঘাটের দোকানে বসে দেখছিলাম, জানতাম না সে আমারই ভাগ্নে! যাই হোক, ফুপুর বাসায় কী আবেগঘন পরিবেশ তৈরী হয়েছিল তার বর্ণনা দেওয়ার দরকার নেই মনে হয়! বাড়ীর সামনে একটা পুকুর, পুকুর ছাড়িয়ে হাওর; বাড়ীর পেছনে আরেকটা পুকুর আর সেই পুকুর ছাড়িয়ে নদী- ভৈরবগামী ছোট্ট লঞ্চগুলোকে দেখা যায় দরজায় দাঁড়িয়ে!
একা ২
যুগলে
চাকা- সভ্যতার শুরু
একা ৩
আনন্দের সাথে ভয়ও পেয়েছিলাম অনেক, ফুপি আমাকে কিছুতেই আসতে দিবেন না। এই প্রথম এত কষ্ট করে গেলাম আর থাকব না!- এটা মেনেই নিতে পারছিলেন না তারা। দুপুরে খাওয়ার পর পেছনের পুকুরে বরশি দিয়ে মাছ ধরা আর সন্ধ্যায় সামনের পুকুরে চান্দের আলোয় চুপচাপ বসে থাকা, তারপর উচ্চস্বরে চাঁদের গান গাওয়া - সে এক অন্যরকম অনুভূতি! অনেক কষ্টে বুঝিয়ে সুজিয়ে আমাদের ফিরতে রাত হলো অনেক- কিন্তু সেটাই ছিল উপভোগ্য; নৌকায় শুয়ে মাথার উপর মস্ত চাঁদ, জলের কলকল শব্দ! কিন্তু কেন যেন ঠিকঠাকমত সব কিছু থেকে আনন্দ নিতে পারছিলাম না! কী যেন খচখচ করছিল মনে!
ভাগ্নী
আশা ১
পরদিন ভোরে নৌকার প্রথম ট্রিপ ধরার জন্যে ভোর পাঁচটায় দৌড়েও পারলাম না দু'মিনিটের জন্যে, বাংলাদেশে এরকম টাইমলি কোন যানবাহন ছাড়তে প্রথম দেখলাম, ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের ফোনও নৌকা দুমিনিটের জন্যে থামাতে পারে নি আমাদের জন্যে। কোথাও তাহলে একটু হলেও সময়ানুবর্তিতা আছে দেখে এই না পাওয়ার দুঃখ ভুলে গেলাম। ফেরার সময় আর ভুল করলাম না, নৌকার ছইয়ের উপরে উঠে আসলাম। হাওড়ের টলটল জল আর নীল আকাশ! দূরে কোথাও কোথাও নাম না জানা পাখি হাওড়ের জলে আধেক ডুবে থাকা গাছের উপর, লাল লাল শাপলা! সুন্দর! অদ্ভুত সুন্দর!
অন্য আলোয়
আশা ২
প্রত্যয়
বাসে ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় এসে ক্যামেরাটা ধরে থাকলাম বন্দুকের মতো, ট্রিগার চেপে; যাওয়ার পথে রাস্তার দুপাশে অনের মাছ ধরার জাল দেখে গিয়েছি ছবি তুলতে পারে নি। ঠাঠাঠা করে শাটার চাপলাম, যদি বাসের দুলুনী আর গাছের ডালের ফাঁক দিয়ে একটি হলেও গুলি লেগে যায়!
চির সবুজ
প্রতীক্ষা ২
একা ৪
আর তারপর আরো একটা সুন্দর জায়গা ঘুরে আসার আনন্দ বুকে নিয়ে আমি আমার ছোট্ট রাজ্যে!