মিনমিনে বৃষ্টি। বর্ষার জানানটা লাজুকভাবেই এলো। চলতি গাড়ির হেডলাইটে বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যার রাস্তায় রঙের উল্লাস। জামে আটকে পড়া রজ্জব অনেকক্ষন ধরেই সুরাইয়াকে খেয়াল করছে। সুরাইয়া কদম নিয়ে এ গাড়ি সে গাড়ি ছুটছে। চলতি পথে যতো বারই মেয়েটাকে দেখে ততোবারই তার ঘর বাঁধতে মন চায়।
এমন বউ পেলে সারাদিন শেষে ডিম ভুনা কি ডাল চচ্চড়ি দিয়ে জীবনটা বেশ কেটে যেতো।
ফুল লইবেন?
সুরাইয়ার প্রশ্নটা একটু ঘুরিয়ে শুনতে পায় রজ্জব। তার মনে হয়, কিশোরীটি যেন বলছে, আমারে লইবেন?
টেনিস বলের মতো রোঁয়া ওঠা নরম ফুলগুলোকে দেখে রজ্জব। বৃষ্টি ভেজা সুরাইয়াকেও দেখে নেয় প্রাণ ভরে।
কতোগুলা আছে তোমার কাছে?
পাশ থেকে আতিক আওয়াজ দেয়, ওস্তাদ সিগনাল ছাড়ছে।
চুপ থাক।
আতিক চুপ মেরে যায়, কিন্তু পেছনের গাড়িগুলো চুপ থাকে না। সমানে হর্ন দিতে থাকে। সুরাইয়া দ্রুত রজ্জবের গাড়ি ঘেষে দাঁড়ায়। পাশ দিয়ে একটা মাইক্রো বেরিয়ে যায় এক ঝলক কাদা পানি ছিটিয়ে। সুরাইয়ার চোখে ময়লা পানি ঢোকে। সে একবার উহ শব্দ করে পাশে সরে যায়।
দীর্ঘ জামে আটকে পড়া গাড়িগুলো সিগনাল পেয়ে রুদ্ধশ্বাসে ছুটতে থাকে। একটা মিনিবাস পাশ থেকে জব্বরের পিকআপকে বাড়ি দেয়। জব্বর তাকিয়ে ছিলো সুরাইয়ার দিকে, সে টাল সামলাতে পারে না। তার গাড়িটা সোজা সুরাইয়ার শরীরের উপর উপুড় হয়ে পড়ে। কদম ফুলগুলো ছিটকে পড়ে রাস্তায়, গাড়ির চাকার নীচে থেতলে যায় তাদের নরম শরীর।