দূর বহুদূর থেমে থাকা আকাশে
লীন আকাশে,
সাদাকালো মেঘ ভেসে যায় হারিয়ে
নীলে হারিয়ে
ধুলো জমা স্মৃতি উড়ে যায় বাতাসে
ঝড়ো বাতাসে!
ঝড় বাঁধা পড়ে ভাঙা মানুষে।
(আর্টসেল এর একটি গানের কিছু অংশ দিয়ে শুরু করলাম।)
আমরা আজকাল টেলিভিশন খুললেই নানারকম আলোচনা, সমালোচনা অনুষ্ঠান দেখে থাকি। সেই সব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন বিভিন্ন দলের নেতা নেত্রীরা কিংবা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরা। এরকম কিছু কিছু অনুষ্ঠান যেমন “তৃতীয় মাত্রা” সাধারণ দর্শকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এই অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে যারা অতিথী হয়ে আসেন তারা নিজেদের মাঝে বিতর্কে জড়িয়ে পরেন। ফলে মাঝে মাঝে সেখানে চলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়।
সে যাই হোক, এরকম একটি অনুষ্ঠানে যদি আমাদের এরশাদ দাদা, ফুল মিয়া আর ইভা আফাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় তাহলে কি হতে পারে সেখানে! আসুন কাল্পনিক এই ব্যপারটি জেনে নেই।
সঞ্চালক প্রথমেই অনুষ্ঠানের শুরু ঘোষনা করবেন।
সঞ্চালকঃ সুধি, আজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন আমাদের সকলের প্রিয় ......
এরশাদ দাদাঃ (লাল গোলাপ হাতে) আজ তুমি কোথায় হারিয়েছো? আমাকে না জানিয়ে কি আর একজনকে খুজে নিয়েছো?
সঞ্চালকঃ ইয়ে মানে...... এরশাদ সাহেব......।। বুঝতেই পারছেন এটা পাবলিক শো। এখানে এসব ...... চলবে না।
এরশাদ দাদাঃ তাতে কি? এই যা! আর একটা প্রসব করবো এখন -
একদা রাতে নবীন যৌবনে
স্বপ্ন হতে উঠিনু চমকিয়া,
বাহিরে এসে দাঁড়ানু একবার
ধরার পানে দেখিনু নিরখিয়া।
শীর্ণ হয়ে এসেছে শুকতারা,
পূর্বতটে হতেছে নিশিভোর।
ফুল মিয়াঃ আহেম! আহেম! এই যে সঞ্চালক সাহেব, আমারে কি চোখে দেখেন না?
সঞ্চালকঃ কে বলেছে? এইতো এখনই আপনার কাছেই আসতাম
ফুল মিয়াঃ থাক! আর পাম মারতে হবে না। কি জন্য ডাকসেন হেইটা কন দেহি।
ইভা আফাঃ (ফোনে) ওহহ! মাই জান মাহু, কেন এত টেনশন করছো আমার জন্য? আমি ঠিকমত চলে আসবো।
সঞ্চালকঃ এখন যাকে পরিচয় করিয়ে দেবো উনি আর কেউ নন। উনি এদেশের এবং বিদেশের নামকরা (!) শিল্পী ইভা রহমান!
এরশাদ দাদাঃ আহা! কি তোমার রূপ, আমি যে হয়ে যাই বেকুব।
ইভা আফাঃ
ইচ্ছে করে তোমার বুকে বানাই স্বপ্ন বাড়ি
সেই বাড়িতে একটা সুখের স্বর্গ রচনা করি
হাজার বছর থাকবো সেথায় কোথাও যাবো না
সেই বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে দিয়ো না।
এরশাদ দাদাঃ না, না, কাউকে দেবো না! শুধু.........।
ফুল মিয়াঃ excuse me! I am খুব ব্যস্থ। এসব শুনতে চাচ্ছি না।
সঞ্চালকঃ কই যাবেন? আজকে তো কোন খেলা নেই।
ফুল মিয়াঃ ইয়ে মানে...... ইয়ে...... জানেনই তো যে আমরা কয়েকজন মিলে একটা হোটেল দিয়েছি। ওখানে ইদানিং যেতে হয়। বুঝেনই তো, কত কাজ! আজকাল তো খেলাটা চলছে না!

এরশাদ দাদাঃ
তোমারে বন্দনা করি
স্বপ্ন-সহচরী
লো আমার অনাগত প্রিয়া,
আমার পাওয়ার বুকে না-পাওয়ার তৃষ্ণা-জাগানিয়া!
তোমারে বন্দনা করি….
হে আমার মানস-রঙ্গিণী,
অনন্ত-যৌবনা বালা, চিরন্তন বাসনা-সঙ্গিনী!
ইভা আফাঃ উফফ! আপনি থামবেন? এই বয়সেও আপনার ............।
এরশাদ দাদাঃ কে তুমি সুন্দরী?
সঞ্চালকঃ আপনারা এসব কবিতা, গান বন্ধ করেন। আপনাদের যে কারণে আজ ডাকা হয়েছে .........
ইভা আফাঃ
চোখেরই আয়নাতে তোমারই মুখ ভাসে
তুমি কাছে আসলে, তুমি ভালবাসলে
জীবনে সুখ আসে, সুখ আসে।
ফুল মিয়াঃ আফা, আপনি এক কাম করেন। আপনি আমার হোটেলে আইসা পরেন। প্রতি শুক্রবার, শনিবার আমার হোটেলে আইসা গান গাইবেন।
ইভা আফাঃ চুপ কর বেয়াদব! জানো না, আমি মাহু ছাড়া অচল।

এরশাদ দাদাঃ
সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়োনাকো তুমি,
বোলোনাকো কথা ওই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা:
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;
ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূরে - আরও দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়োনাকো আর।
ফুল মিয়াঃ সে কার সাথে যাবে কি না যাবে এইটা আপনার চিন্তা কেন এত দাদা ভাই?
সঞ্চালকঃ দেখুন, আপনারা কিন্তু টপিকের বাহিরে কথা বলেই যাচ্ছেন। আজকের টপিক.........
ফুল মিয়াঃ রাখেন আপনার টপিক! আমি গেলাম গা। প্রভা আজকে আমার হোটেলে আইবো তার বর নিয়া। আমি যাইগা!
ইভা আফাঃ আমি বিদায় আজ -
জল পড়ে, পাতা নড়ে, ঝিরিঝিরি হাওয়া বয়
মেঘলা দিনে নিরোজনে তোমার কথা মনে হয়
এমন দিনে বন্ধুবীনে কেউ কি দূরে সরে রয়
আইসো আইসো আমার বাড়ি, বসতে দেবো পিড়ায়,
খাইতে দেবো বগুড়ার দই, দিনাজপুরের চিড়া।
এরশাদ দাদাঃ
মনে কি পড়ে গো সেই প্রথম চুম্বন!
যবে তুমি মুক্ত কেশে
ফুলরাণী বেশে এসে,
করেছিলে মোরে প্রিয় স্নেহ-আলিঙ্গন!
মনে কি পড়ে গো সেই প্রথম চুম্বন?
ফুল মিয়াঃ আস্তাগফিরুল্লাহ! এইসব কি। আমি গেলাম গা।

সঞ্চালকঃ শেষ পর্যন্ত বিদায় নিলেন ফুল মিয়া। ইভা আফা আগেই বিদায় নিয়েছেন। স্যার আপনি ………
এরশাদ দাদাঃ
আমি আজ রবো তারই মনের মাঝে
চলে যাওয়া কি আমার সাঝে!
সঞ্চালকঃ সুধি দর্শকবৃন্দ, বুঝতেই পারছেন কি হচ্ছে এখানে। তাই আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে আমাকে। আগামী দিন কথা হবে।
এটি একটি ১০০% ফান পোস্ট। বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নাই। কেউ মিল খুজে পেলে লেখক দায়ী নয়। এই পোস্টে ব্যবহার করা হয়েছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজি নজরুল ইসলাম, এবং কায়কোবাদের কবিতা। আরও রয়েছে ইভা রহমান এর কন্ঠে গাওয়া গান।
বিঃদ্রঃ ১টি এম ১৫৪ ধারা পরিবেশনা