বিছানা থেইকা গড়ান দিয়া উইঠা কয়ডা আধময়লা কাপড় পইড়া কোনরকমে চুলডা আঁচড়াইয়া বাইর হৈয়া গেলেন- মাইয়ারা কিন্তু আপনের মতো না! তাঁরা কয়েকশ ঘন্টা টাইম আর হাজার হাজার টাকা খরচ করতে রাজি তাঁদের দেখনদারির উপরে। এই কথা সত্য যে তাঁরা সাজগোজ করেন মূলত নিজেদের স্বস্তির জন্য, তারপরো তাঁদের মন থেইকা আপনের মন কাড়নের কথাডা কিন্তু তাঁরা ফালায়া দেন না! দুখেঃর কথা হৈলো, আপনে সেইগুলার দিকে ফিরেও তাকান না! সবকিছু মিলায়া তাঁরে হয়তো আপনের ভালো লাগতেছে, কিন্তু ছোট ছোট কিছু জিনিস, যার কারণেই তার এই পরিবর্তন- সেইদিকে আপনে নজরই দেন না! এইডা কি ঠিক, কন?
ব্রিটেনের নর্দাম্ব্রিয়া ইউনিভার্সিটি থেইকা করা ২০১০ সালের একটা গবেষণায় দেখা গেছে যে, পুরুষ মানুষরা মেয়েদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এই সব পরিবর্তন, যেমন ফ্লাট হিল পরলো, কি হাই হিল পরলো, এইদিকে মোটেও নজর নাই!
আপনে তাঁর মন জয় করতে চান? ইম্প্রেস করতে চান? তাইলে এই দশটা জিনিষের দিকে নজর দেন, যেইদিকে তিনি চান আপনে নজর দিবেন! এর মাঝে দেখনদারি, ব্যাবহার এমনকি প্রচেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত আছে, খুব খিয়াল কৈরা! সবগুলা ক্ষেত্রেই যে আপনে "হায় আল্লাহ! কি চমৎকার!" কৈরা ফাল দিয়া উঠবেন আর তিনি খুশ হৈয়া যাইবো, এইডা ভাইবেন না! পছন্দ আরো মেলাভাবেই প্রকাশ করা যায়। সতর্ক হৈয়া এইগুলা প্রয়োগ করলেই পাইবেন দিলখুশ একটা গার্লফ্রেন্ড/বৌ!
আসেন, নাম্বার দশ থেইকাই শুরু করি-

নাম্বার দশ- জুতাঃ ভয় পাইয়েন না, আপনেরে জুতার মাইর খাইতে কৈনাই। তিনার জুতার দিকে নজর রাইখেন। একটি মেয়ের এ্যাটিচুড, চলাফেরা, সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যায় যখন তিনি হাইহিল পরেন (গবেষণালব্ধ)। ওগুলো তাঁর পা গুলোকে লম্বা, পিছন দিকটা উঁচু ও দেহের উপরিভাগ কে নতুন করে বিন্যস্ত করতে সাহায্য করে। মোটামুটি বিশ্বের সবাই (ছেলে মেয়ে উভয়ই) ধারণা করে যে হাই হিল তাকে সেক্সি এবং এবং আকর্ষনীয় করে তুলতে সাহায্য করে। অখন কথা হৈলো গিয়া, মেয়েরা হাই হিল পরেই ছেলেদের জন্য, কারণ পায়ের আরামের কথা মাথায় রাখলে কোন মেয়েই এইডা পরতে চাইবো না! একটা মেয়ের পকেটের টাকা আর পায়ের গোড়ালী, দুইডাই হাই হিলের লাইগা মুখ ব্যাজার করে! সুতরাং, যার লেইগা এতো কষ্ট, সেই যদি সেই জুতার দিকে নজর না দেয়, তাইলে কেমন লাগে? নিজেই ভাবেন!

নাম্বার নয়- তিনি হাসাতে পারেনঃ বেশিরভাগ মানুষ মানবিক গুনাবলী বিচার করতে গিয়া কন, সেন্স অফ হিউমার বা হাস্যরস সংবেদনশীলতা মানুষের ভালো গুন গুলোর একটি। সুতরাং, তিনি যখন আপনারে বা আপনার বন্ধুদের একখান ভালো জোকস বলেছেন, আপনার উচিত সেই ভালো জোকের সম্মানে যথোপযুক্ত একখান দিলখোলা হাসি দেওয়া! কিংবা তাঁরে পরে বলতেও পারেন, "ওফ! যা হাসালে আজকে!" কেমনে তার প্রচেষ্টারে দাম দিলেন, সেইডা কথা না! কথা হৈলো, তার এই উদ্যোগ গুলারে স্বাগত জানানো।

নাম্বার আট- তাঁর গন্ধটা ভিন্নঃ না না! দূর্গন্ধের কথা কৈতেছি না! তিনি চান আপনি তাঁর গন্ধটা খেয়াল করেন। গন্ধ মানুষকে আকর্ষণ করার ক্ষেত্র খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং এটাও হতে পারে, তাঁর গন্ধই আপনাকে তার প্রতি আপনার নিজের অজান্তেই আকর্ষণ করিয়েছে। মেয়েরা সাধারণতঃ তাঁদের নিজস্ব গন্ধ নিয়ে খুব সচেতন। পারফিউম, লোশন ইত্যাদির সংমিশ্রণে যে গন্ধটা তৈরি হয়, সেটা খুব সযত্নে তৈরি একটি মেয়ের। যখন তিনি সেই স্থায়ী গন্ধটা পরিবর্তন করেন, তিনি চান আপনি সেটা খেয়াল করুন। চোখ বন্ধ কৈরা নাকটা আগায়া দেন, আর জিগান- "দারুণ লাগছে তো! তুমি কি আজ ভিন্ন কিছু ইউজ করেছো?"

নাম্বার সাত- তিনি গোছালোঃ এইবেলা তিনি সরাসরিই শুনতে চান, কারণ তিনি এইটা আপনের কাছ থেকেই আশা করতেছেন! সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটনি খেটেছেন, তারপরও তিনি সবকিছু গোছায়া রেখেছেন, সেইডা আপনের রুম হোক আর তাঁর পার্সোনাল রুম, খালি বলেন- "বাব্বাহ! সবকিছু গুছিয়ে সুন্দর করে রেখেছো দেখি!" ব্যাস! তিনি খুশ! মনের আনন্দে চাইলে তাঁর পা টাও টিইপ্যা দিতে পারেন, আহা! লজ্জা কিসের? আমরা তো আর উঁকি মারতে যাইতেছি না!
নাম্বার ছয়- তিনি ব্যায়াম করতেছেনঃ ওজন কমানো, সুস্বাস্থ্যের অধিকারিনী হওয়া, মাসল বানানো বা সুস্থ এবং সুন্দর বোধ করা যাই হোক না কেনো, আপনার উচিত তাঁর এই প্রয়াস কে স্বাগত জানানো এবং জিমে যেতে বা ব্যায়াম করতে উৎসাহিত করা। এবং যখনই আপনি দেখবেন তিনি সোজা বাংলায় চিকন হওয়া শুরু করেছেন, তখনই তার এই প্রচেষ্টা নিয়ে প্রশংসা করা। বলতে পারেন, তার দেহবল্লরী দিন দিন বড়ই চমৎকার হইতেছে এবং আগের তুলনায় তার পিছনে পোলাদের লাইন আরো বাড়বে!

নাম্বার পাঁচ- তিনি অপ্রয়োজনীয় লোম ছেঁটে ফেলেছেনঃ লোম ওঠাইতে বড়ই ব্যাথা! যতই আয়াস-সিদ্ধ কাম হোক না কেনো, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাথা লাগবেই (চেষ্টা কৈরা দেইখেন)। একজন মেয়ে কোনদিন তাঁর দেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় লোম ছাঁটবেন না তাঁর নিজের জন্য! এইটা আপনার জন্যই, সেজন্যই এইটা আমাদের সেরা দশ লিস্টে। এইটা সত্যি করে বলতে, একজন পুরুষকে খুশি করতেই করেন! তাঁর সুন্দর নরম, মসৃণ ত্বক ছুঁয়ে তাকে জানান আপনার ভালো লাগা, চাইলে দুচারটা চুমুও...

নাম্বার চার- তাকে আকর্ষনীয় দেখাচ্ছেঃ একজন মেয়ে যখন সাজেন, সেটা সবমিলিয়ে একটা আর্টই বলা যেতে পারে! বেশ কয়েকঘন্টা ধরে পরিশ্রমের ফলাফল তাঁর সম্পূর্ণ রূপ! চুল, মেকআপ, ড্রেস, জুতা এবং ব্যাগ, সবকিছুর মিলিত রূপ তাঁর কাছে এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ, আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না! সুতরাং, যখন তিনি আপনার সামনে, এই পরিশ্রমের ফলাফল জানতে তিনি কিন্তু উৎসুক, মাগার চুপ করে থাকবেন! আপনার কাছ থেকে সামান্য দুটো প্রসংশা সূচক কথাই তাঁর জন্য এই পরিশ্রমের পুরস্কার! সুতরাং, দিল খুলে প্রসংশা করুন! এখনো সরকার প্রসংশা করার উপর ট্যাক্স ধরেনি!

নাম্বার তিন- তিনি সুন্দর একটা ক্ষণ তৈরী করেছেনঃ আপনার জন্য তিনি হয়তো একটা ক্যান্ডেললাইট ডিনার এর আয়োজন করেছেন, কিংবা শোবার ঘরে কতগুলো মোমবাতি সাজিয়ে তৈরী করেছেন ভালোবাসার স্বপ্নময় একটি ক্ষণ, শুধুমাত্র আপনাদের দুজনের জন্য! আপনার করনীয় হলো, পরে আপনারেও করতে হবে, এমন একটি ক্ষণ, যা তিনি অনেকদিন মনে রাখবেন।

নাম্বার দুই- তিনি নয়া স্টাইলে চুল কেটেছেনঃ মেয়েরা তাদের চুল কে আকর্ষনীয় ও সযত্নে রাখেন খুব সময় ও পরিচর্যা নিয়ে, কাটা, স্টাইল করা, রং করা, কোঁকড়া করা, সোজা করা (স্ট্রেইট করা), উল্টো করে আঁচড়ানো- এসবই তার মাঝে পড়ে...এবং এগুলো করতে তার প্রচুর সময় যায়, কার লাইগা? আপনেরে দেখানোর লাইগা! তা তিনি কাটেন, ঝাড়েন আর ন্যাড়া করেন, আপনের দ্বায়িত্ব হৈলো-"তুমার নয়া চুলের স্টাইল টা জোস লাগতেছে!" বৈলা প্রসংশা করা। না কৈছেন তো মরছেন! হু হু!

নাম্বার এক- অন্দরমহল কি বাতঃ হে হে, খালি বাহিরের খবর রাখলে চলবো? অন্দরের দিকেও নজর দিয়েন! মানে অন্তর্বাস বা আন্ডারওয়্যার যাই বলেন না কেন, তার কথাই কৈতাছি! তা আপনে তো ঐদিকে নজর দেন-ই, নয়া কৈরা কি আর বলমু, তাই না? উহু! ঠিক না, নজর মোটেও দেন না! ঠাস কৈরা খুইলে ফেলনের আগে একটু ভালো কৈরা দেখেন, তারপর বলেন, "ওহ! হলি কাউ! এই (ব্রা/পেন্টি....) তে তো তোমারে সেইরকম লাগতেছে! মনে চাইতেছে...." মনে রাইখেন, এইটা সে আপনে দেখবেন ভাইবাই পরছে!
উপরে বলা উপায়গুলো বাদেও, নিজের মতো করে যদি আপনি মানিয়ে নিতে পারেন, তাহলে তো সোনায় সোহাগা! আফটার অল আপনার মুরগী, আপনে কাটবেন!
