হরতালকে ঘিরে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেই চলছে। আর এতে হরতাল আহ্বানকারী, সরকারি দল ও পুলিশের রোষানলে পড়ে সাধারণ মানুষ বরাবরই বলির পাঁঠা হচ্ছেন। হরতালকে ঘিরে বাসে অগ্নিসংযোগ ও বোমা হামলার ঘটনায় গত একযুগে কমপক্ষে ৪০ জনের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হরতাল কেন্দ্রিক সংঘর্ষ ও পুলিশি হামলায় নিহত হয়েছেন আরো অর্ধশতাধিক।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় হোটেল রূপসী বাংলার (সাবেক শেরাটন) সামনে বিআরটিসির দোতলা বাসে গানপাউডার ছিটিয়ে আগুন দেয়ার ঘটনায় ২২ যাত্রী জীবন্ত দগ্ধ হন। একই সময় খিলগাঁও তালতলায় সিএনজিতে আগুন দেয়া হলে এর চালক জীবন্ত দগ্ধ হন।
বর্তমান সরকারের সময় ২০১০ সালের জুলাই মাসে বিএনপি-জামাত জোটের ডাকা হরতালের আগের রাতে মগবাজারে ট্যাক্সিক্যাবে আগুন দেয়া হলে এর চালক ফারুক হোসেন (৩০) ও যাত্রী মোশারফ হোসেনের (২৮) করুণ মৃত্যু হয়। একই সময়ে সিলেটে আগুনে পুড়ে কঙ্কাল হন চিত্রনায়িকা শাবনুরের বাবা। অগ্নিদগ্ধ হন সুমন নামে এক বাসযাত্রী। অফিসে যাওয়ার পথে পিকেটারদের ইটের আঘাতে আহত হন প্রকৌশলী আবুল কাশেম। সর্বশেষ গতকাল শনিবার বিকালে খিলগাঁওয়ে ঈগল পরিবহনের আগুন দেয়া হলে এর চালক বদর আলী জীবন্ত দগ্ধ হন। এরা কেউই কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নন। অথচ হরতাল ঘিরে এরা হতাহত হয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ হরতালের আগের দিন ও রাতে বাসে অগ্নিসংযোগ ও বোমাবাজির মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে হরতাল সফলের কৌশল বেছে নিয়েছে বিএনপি। আগের দিনের নাশকতার কারণে হরতালের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়ায় তারা আর রাস্তায় নামতে পারে না। এ অবস্থায় আগের রাতের আতঙ্কেই হরতাল ‘সফল’ হয়। বিএনপির আগের সব হরতালের মতো আজকের হরতালকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার বিকালে ৬টি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে খিলগাঁওয়ে এক বাসচালকের করুণ ও নির্মম মৃত্যু হয়। বাসে আগুন আতঙ্কে শনিবার ছুটির দিনেও সন্ধ্যার আগেই ঢাকার রাস্তায় প্রায় যানবাহনশূন্য হয়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।