পোস্টে আলোচ্য বিষয়বস্তু দূর্নীতি, নৈতিকতার অবক্ষয়। আলোচনার সুবিধার্থে আমি সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ১. ক্রিকেটার আশরাফুল, ২. চিকিৎসকের অবহেলা এবং কম আলোচিত কিন্তু ভিষণভাবে ভীতিকর ৩. হেলথকেয়ার ফার্মার জালিয়াতি নিয়ে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি।
ইস্যু যখন স্পট ফিক্সিং, আমাদের ক্রিকেট প্রেম ও আবেগী বাঙালীকে বোকা বানানো আশরাফুল
আমি ক্রিকেট ভক্ত। একসময় ক্রিকেট খেলেছি। না, জেলা পর্যায়ে বা থানা পর্যায়ে না, খেলেছি ঘরোয়া (মানে নিজের বাসা ও বন্ধুদের সাথে) পর্যায়ে। বাংলাদেশের খেলা মানে হয় মাঠ নয় টিভির দখল। চিৎকার করে গলা ফাটানো, আনন্দে চোখে পানি এসে যাওয়া আবার কখনো (আসলে বেশিরভাগ সময়েই) পরাজয়ে মন খারাপ।
বাঙালী ক্রিকেট প্রিয় জাতি। বিশ্বের এমন কোন স্টেডিয়াম সম্ভবত নেই যেখানে জিম্বাবুয়ে আর মালয়শিয়া ক্রিকেট ম্যাচ খেললে অনেক দর্শক উপস্থিত হবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত বাংলাদেশে ম্যাচ আয়োজন করলে দর্শক টিকেট কেটে খেলা দেখতে যাবে। এই অবস্থায় নিজের দেশের খেলা আর খেলোয়াড়দের নিয়ে আমাদের আবেগ যে কোন পর্যায়ের তা আমরা সবাই কম বেশি জানি।
আশরাফুল স্পট ফিক্সিং এর সাথে নিজেকে জড়িয়েছে। মানে সে টাকার বদলে ভালো-খারাপ খেলছে। সে আমাদের আবেগ নিয়ে খেলছে। এই অধিকার তার নেই। অনেকেই আশরাফুলের পক্ষে সাফাই গাইছেন। আমি মানতে পারিনা। আগে নিজের দেশ, সেই দেশের সাথে যে প্রতারণা করতে পারে তাকে বিশ্বাস করা যায়না।
মানবতার শপথ নেয়া চিকিৎসক আর আমাদের রেকটাল এরিয়ায় সুঁইয়ের খোঁচা
এখানে অনেক কথা বলার আছে, কিন্তু এক পোস্টে সব বলা সম্ভব নয়। ঘটনা সবাই জানেন। একটা ছেলে চিকিৎসা নিতে ডাক্তারের কাছে গিয়েছেন আর ডাক্তার তার "মেডিকেল এরর"এ অপেরেশনের জায়গায় রেখে এসেছেন সুঁই। এরপরও সেই ছেলেটা নাকি দু'বার ডাক্তার দেখিয়েছে। কোন সুরাহা হয়নি, অবশেষে তার ভারত গমন এবং আইন-আদালত!!
কোন ব্যক্তিকেই অপরাধ প্রমানের আগে অপরাধী বলা অনুচিত। কিন্তু বাংলাদেশে কোন চিকিৎসকই কখনো সম্ভবত অপরাধী বলে প্রমানিত হননা! কারণ তাঁরা জীবন বাচাঁন। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবেন? হুম, সেবা বন্ধ যাবেন কোথায়!!
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাকি ঝড়ুদার, ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা ইমার্জেন্সি সার্জারি করে থাকেন। সত্যি সেলুকাস কি সহজ এই সার্জারি আর কি বিচিত্র আমাদের চিকিৎসক সমাজ!!!
হেলথকেয়ার ফার্মার সই জাল এবং যেখানে ইথিকস ১০০% মার খেয়ে চুপসে গেল
আজ বাংলাদেশ প্রতিদিনে নিউজটা দেখে চমকে গেলাম। সরাদিনে ভুলতে পারিনি। ওষুধ প্রশাসন ডিজির সই জাল করে বিপুল ভ্যাকসিন আমদানি করেছে কোম্পানিটি। ছিঃ কি লজ্জা!
ফার্মাসিউটিকাল সেক্টরে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির কারণে এবং বিদ্যমান প্রতিযোগিতার কারণে আন ইথিকাল মার্কেটিং হয় এটা অস্বীকার করা যাবেনা। সেটা বেশিরভাগ সময়ে ডাক্তার-কোম্পানী পর্যায়ে থাকে। কিন্তু ডিজির সই জাল করা!! এটাতো ভাই ফোর টুয়েন্টি কেস হয়ে গেল।
আমি লজ্জিত কারণ এই কাজের সাথে নিশ্চই এক বা একাধিক ফার্মাসিস্ট জড়িত আছেন। স্ব ইচ্ছায় না হলেও জানতেন বিষয়টা অথবা কেউ স্ব ইচ্ছায় হয়ত জড়িত এই জালিয়াতি বিষয়ে। এটা ভিষণ লজ্জার হলো।