১. আমি আমার জীবনকে অনেক বেশি ভালোবাসি। এতটাই বেশি ভালোবাসি যে ছোটখাট কোন রোগ বালাই হলেই মোটামুটি ভয় পেয়ে যাই, আতংকে হাত-পা অবশ হয়ে আসে, পালস্ বেড়ে যায় (আমি এমনিতেই টেকিকার্ডিয়ার রোগী), অস্থির হয়ে পরি। বেশ কিছুদিন ধরে বাম পায়ে যন্ত্রনা হচ্ছে। তো কেন হচ্ছে সেটা বোঝার চেষ্টা করলাম অনেকভাবে। ক্যালসিয়াম-ভিটামিন ডি খেলাম। কিন্তু ঠিক হচ্ছেনা।
এই অবস্থায় আমার এংজাইটি স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে গেল। আমার মনে হলো আমার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হচ্ছে, নয়ত ডায়াবেটিস অথবা ... মোটামুটি সব নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গেলাম। ডাক্তার ভদ্রলোক বয়ষ্ক, রাশভারি চেহারা। তো অনেক কথা হচ্ছিল তার সাথে। কথায় কথায় আমি লেফট লেগ সিনড্রোম বিষয়ে আমার হাইপোথিসিসটা মানে আমার রোগটা ব্যাখ্যা করতেই উনি ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলেন। ওনার হাসি দেখে আমার বিব্রত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু হইনি, আমি আস্বস্ত হয়েছি

২. ছেলেটার নাম বখতিয়ার, বখতিয়ার মাহমুদ। হিসেবে আমাকে ওর স্যার বলে সম্বোধন করার কথা নয়, ভাই বলে ডাকার কথা। তবু পড়াশোনায় অনিয়মিত, অমোনোযোগিতার কারণে ঠিক সময়ে নিজের ব্যাচের সাথে পাশ করে বের হয়ে যেতে পারেনি। তাই আমার ক্লাস করতে হয়েছে। যাহোক আমি ওর ওপর মহা বিরক্ত ছিলাম। অনেক কষ্টে পাশ করে একটা চাকুরীও পেয়েছিল।
হঠাৎ সেদিন এক সহকর্মী বললো "ভাই বখতিয়ার কে চেনেন?" আমি বললাম "হ্যা, ডামিশ, ওকে পার করতে আমার জান বেড়িয়ে গেছে!" "ও গতকাল রাতে মারা গিয়েছে!!"
আমি স্তব্ধ। ওর অ্যাজমার সমস্যা ছিল। রাত তিনটায় সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করে, ডাক্তারের কাছে নেয়ার সুযোগ হয়নি। আমি ভীষণ ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। ঠিক বোঝানো সম্ভব নয় অনুভুতিটা। ও আমার ছাত্র ছিল!!!
৩. আজ অনেকদিন বিশ্রাম নিয়ে (এখনো আমি বেশ অসুস্থ্য) একটু বাইরে বের হয়েছিলাম। বাসায় এসে শুনি সাভার রানা প্লাজা থেকে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অবাক ব্যাপার। আমি নিজেকে ১৭ দিন ঐরকম একটা অবস্থায় কল্পনা করতে গিয়ে শিউরে উঠেছি। আমি নিশ্চিৎ ২ দিনও টিকতামনা, প্যানিক অ্যাটাকে মারা পরতাম।
রেশমা বেঁচে থাকুক।
ও, খবরটা শুনেই কোথা থেকে নিজের অজান্তেই কেন জানি বলে উঠেছিলাম সুবাহানাল্লাহ্!