যখন আমি ভীষণ অসুস্থ । জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকি । আগুনের মত লাল হয়ে থাকে আমার চোখ । জ্বরে আমার ভেতর বাহির পুড়ে যায় । হঠাৎ করেই প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে । এমন জ্বর নিয়ে কয়েকদিন কাজ করলাম । রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ালাম । ঠিক মারা যাবার আগ মুহূর্তে হাসপাতালে আসলাম । ডাক্তাররা জ্বর দেখে ভয় পেয়ে গেল, আমি অজ্ঞান ছিলাম অনেকক্ষণ । দুই দিন একবারও জ্বর ১০৪ এর নিচে নামেনি । বারবার শুকিয়ে যেত গলা প্রচণ্ড তৃষ্ণায়, তারচেয়ে বেশি তৃষ্ণা ছিল তোমাকে দেখার । কিন্তু কোথায় তুমি আর কোথায় আমি । বন্ধুদের বললাম যেন একবার তোমাকে খবর দেয়, তোমার ফোন বন্ধ, তোমার বাসা আরব্য রজনীর দুর্গ, তোমার পরিবারের সবাই জলদস্যু সুতরাং সবাই সব চেষ্টা করে ব্যর্থ । একদিন এরকম জ্বর নিয়ে ডাক্তারের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমিই বেরুলাম তোমাকে দেখতে । জ্বরের কারণে প্রায় জ্বলন্ত আগুন হয়ে তোমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম অনেকক্ষণ । চাইলেই তো আর চাঁদ উঠেনা তাই তোমার দেখা পেলাম না । অনেক চেষ্টার পর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তোমাকে খবর দেয়া সম্ভব হয়েছে । আজ তোমার আসার কথা ছিল । অপেক্ষা করতে করতে অসুস্থ আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম । খাবার বা ঔষধ কিছুই খাওয়া হয়নি । না খেয়েই বসে থাকলাম, তখনও তোমার আসার সময় পেড়িয়ে যায়নি ।
এখন হাসপাতালের বারান্দায় বসে যখন এই লেখাটা লিখছি তখন সূর্যটা ডুবে যাওয়ার আগে শেষ আলোটুকু দিয়ে যাচ্ছে । সেই আলোটা বলে গেল তুমি আসলেনা । নিজেকে শান্তনা দিয়ে অবোধ মন কে বোঝানোর জন্য আমি মাঝে মাঝে লিখি আজ কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা । এখন আজান হবে । প্রভু কে খুশি করতে যারা রোজা রেখেছিল তাঁদের তৃষ্ণা এখন পানি পান করে মিটে যাবে । শুধু আমি তৃষ্ণার্ত থেকে যাবো । তোমাকে দেখার তৃষ্ণা আমার মিটলনা...।
এটা ডায়রির পাতা থেকে উঠে আসা পুরনো আধ ছেঁড়া পাতা । যে সময় লিখা হয়েছে তখন মাহে রমজানের মাস ছিল । আর লেখক ভয়াবহ টাইফয়েডে ভুগছিল প্রায় ২৮ দিন



