প্রেমিক অথবা হিমু হবার গল্প
গত সাড়ে তিন মিনিট ধরে দিপুর পাঞ্জাবীর বাঁ আস্তিন ধরে আছে মিলা। ঠোঁট উল্টে, ভ্রু কুঁচকে রেখেছে সে, পাঞ্জাবীর একটা বেরিয়ে থাকা সুতোকে দুই আঙুলে ডলে যাচ্ছে গভীর মনোযোগ দিয়ে।
দিপু তাকাচ্ছে না। সে তাকিয়ে আছে তার ডান হাতের দিকে। তালুতে ধরা সস্তা প্লাস্টিকের চশমাটা, যেটা সে দিবারাত্র নাকের ডগায় বসিয়ে রাখে। বাসে এক মহিলার ব্যাগের মধ্য থেকে ছাতার ডগা উঁকি দিচ্ছিলো, হার্ডব্রেক করতেই দিপু উড়ে গিয়ে ঠিক ছাতাটার উপরেই পড়লো। চশমার কাঁচের ঠিক মাঝ বরাবর ভয়াবহ একটা আঁচড় পড়ে গেছে। চোখে দিলেই একটা ব্লাইন্ড স্পট পড়ছে দৃষ্টির সামনে, মাথা ধরে যাচ্ছে।
মিলা অবশ্য বাচ্চাদের মতো মাথা নাড়তে নাড়তে মতামত জানিয়ে দিয়েছে তার। চশমা না থাকলে নাকি ঐ খোঁচাতে দিপুর চোখ “গলে ছানাবড়া” হয়ে যেতো। দিপুর জন্য অবশ্য ছানাবড়া হওয়াটাই বেশি সমীচীন মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে। চশমা ছাড়া সে তেমন কিছুই দেখতে পায় না, মিলার ভাষায় “আন্ধা পাতিলেখক”। পাক্কা সাড়ে তিনশো টাকা লাগবে এখন এই কাঁচ বদলাতে।
জুলফির চুলে চিমটি খেয়ে পাশ ফিরে তাকালো দিপু, মিলা মিটিমিটি হাসছে। চোখ ভর্তি দুষ্টুমি।
- “শেল অ্যান্ড কোর খাওয়াও।“
- একটু বসো। এখন উঠতে ইচ্ছা করছে না।
- দিপুউ, আমি এক্ষন শেল অ্যান্ড কোর খাবো। তুমি খাওয়াবা।
- মিলা আমার কাছে টাকা নাই, জ্বালিও না।
- আমি টাকা দিই, তুমি নিয়ে আসো নাহ।
- খেতে ইচ্ছে করলে নিজে খেয়ে আসো। আমি উঠতে পারবো না।
মিলার হাসি মুছে মুখ কালো হয়ে গেলো। দিপু ওকে বুঝতে না দিয়ে একটা নিঃশ্বাস গোপন করলো, তারপর নিঃস্পৃহ দৃষ্টিতে আবার চশমার কাঁচে মনোযোগ দিলো।
প্রেমের প্রথম দিকে দিপুও আহ্লাদী প্রেমিক ছিলো। এতো মিষ্টি আদুরে একটা মেয়েকে আহ্লাদ না করে, কি করে মানুষ বেঁচে থাকতে পারে, দিপু তা বুঝে পায় না। মিলাই বাধ সাধলো, অতি আবেগী ছেলেদের আবেগ নাকি পুরোটাই ছ্যাবলামো। ছেলেদের নাকি হতে হবে মহীরুহের মতো, বটবৃক্ষের মতো, সুবিশাল, ছায়াময়, উদার, আশ্রয়। মিলা চড়ুই পাখির মতো ছটফট করবে দিনমান ধরে, আর দিপু তার সন্ধ্যেকালে পাখ গুটিয়ে ফেরবার ঘর হবে।
দিপু আসলে এটাও বুঝে পায় না, ভালোবাসার মানুষের জন্য পাগলামী এলে পাগলামী করা যাবে না কেন? আচ্ছা বেশ, করলাম না কিছু। সে নিজেকে এমন দেয়ালের মাঝখানেই আটকে দিয়েছে, এখন আর চাইলেও মিলার আশেপাশে সে “দিপু” হয়ে উঠতে পারে না। মিলার পাশে রোজ বিকেলে অন্য কেউ বসে থাকে, দেখতে শুনতে ঠিক দিপুর মতোই। কিন্তু দিপু তাকে চেনে না। মিলা চিনতে পারে তো?
- শোনো টিউশনিতে যেতে হবে।
- এখনই যাবা?
- হুঁ। তুমি ফোন করে গাড়ি ডাকাও। গাড়ি এলেই আমি চলে যাবো।
- আরেকটু বসো।
- বাস দিয়ে যাবো, দেরি হবে।
- সিএনজি নিয়ে যেও, আমি ভাড়া দিয়ে দিচ্ছি।
- নাহ, স্টুডেন্টের পরীক্ষা। হাত ছাড়ো, গরমে গা আঠা আঠা লাগছে।
মিলা গাড়ির দিকে এগোচ্ছে। শ্রাবণের অন্ধকার আকাশকে দুচোখে জমিয়ে সে একটু একটু করে চলে যাচ্ছে। তার ওড়না দমকা হাওয়ায় ঢেউয়ের মতোন নড়ছে, মিলার পারফিউমের ঘ্রাণটুকু ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যার বাতাসে।
দিপুর ইচ্ছে করছে ছুটে গিয়ে মিলাকে থামায়, বুক ভরে টেনে নেয় মিলার ঘ্রাণ টুকু। তারপর বলে – তুমি একটু হাসো, আমি দেখবো।
কেন যেন নিজেকে হিমু হিমু মনে হচ্ছে আজকে দিপুর। দেবশিশুর মতোন নিষ্পাপ দেখতে কোন তরুণীকে এইভাবে উপেক্ষিত করতে পারে, শুধুমাত্র হিমুর পক্ষেই সম্ভব। কিন্তু মিলা তো এটাই চেয়েছিলো।
দিপুর মাথায় দুলাইন কবিতা খেলে যাচ্ছে।
আমি তাহাকে খুঁজি, আমি দিনমান তাহাকে খুঁজি।
সে যে বিষ, সেই অমৃত আমার, শুধু আমিই তা বুঝি।
দিপু কখনোই হিমু চরিত্রের প্রেমে পড়ে নি। দিপু শুধুই প্রেমিক হতে চেয়েছিলো, সে কখনোই হিমু হতে চায় নি।
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন