খুব সুন্দরী এক লাস্যময়ী নায়িকা তুফান গতিতে গাড়ি ড্রাইভ করে চলছে।সামনে যাই পড়ছে তাই শূন্যে উড়ে যাচ্ছে।পথচারী,ফেরীওয়ালা সবাই ভয়ে থর থর করে কাপছে।আজ আর কারও রক্ষ্যে নেই!

এমন সময় একদল গুন্ডা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে নায়িকাকে ধাওয়া করল।একসময় গুন্ডার দল নায়িকার পথ অবরোধ করল।তারপর তাকে গাড়ি থেকে শরীরের স্পর্শকাতর যায়গায় ধরাধরি করে নামিয়ে কাধে তুলে নিল।এর পর সেই মোক্ষম সময়ের আগমন। গুন্ডাদের লুলীয় ভাবনা ‘আজকে পাইসি!’

তখন নায়িকা গগণবিদারী চিৎকার করে উঠল, ‘বাঁচাও! বাঁচাও!’ গুন্ডা তখন নায়িকার সাথে পরিচালকের নির্দেষ অনুযায়ী আপত্তিকর ভাবে ধস্তাধস্তি করে যাচ্ছে।
নায়িকা তখনও চিৎকার করে চলেছে, ‘ছেড়ে দে শয়তান। তোর ঘরে কি মা-বোন নেই।’
গুন্ডার নিষ্পাপ উত্তর, ‘মা-বোন তো ঠিকই আছে।কিন্তু বউ তো নাইক্কা!’

গুন্ডা দলপতি তখন নায়িকার সাথে বিশেষ(!) কাজে অনেক দূর অগ্রসর হয়ে গেছে।
ঠিক তখনই আকাশ-বাতাসে ঘূর্ণিঝড় তুলে নায়কের আগমন।নায়ক নায়িকাকে বাঁচাতে গুন্ডাদের উপর লং লাম্প দিল। কিছুক্ষণ ‘ঢিসুম,ঢিসুম’ শব্দ হল এরপর গুন্ডাদের দল নায়কের শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করল।
তখন নায়িকা ভাবল ‘যাক!এবারের মত সতী নারীর(!) সতীত্ব রক্ষা পেল!’ :#>
নায়িকা ভালবাসার চোখে নায়কের দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠল, ‘একি!এ দেখি আরেক মাতাল! আরে,ও আমার দিকে এভাবে এগিয়ে আসছে কেন? না, এ হতে পারে না!’ নায়িকা আকাশ-বাতাস কাপিয়ে চিৎকার করে উঠল, ‘গুন্ডারা আমাকে বাঁচাও।নায়ক আমাকে...’ ।কিন্তু ততক্ষণে...

খুব সস্তা মার্কা বাংলা সিনেমার একটি প্যারোডি হল,তাইনা?
যিনি পড়ছেন,তাকেই বলছি...আমরা প্রত্যেকেই এই প্যারোডির অংশ। ১৯৪৭-৭১ সাল পর্যন্ত আমরা ছিলাম লুটেরা গুন্ডাদের হাতে।আমাদের দেশটা কোন রকমে রক্ষা পেল নায়ক(!) ভারতের সহায়তায়।তারপর কি হল? তাওপর যে আমাদের রক্ষা করল সেই ভারতই ঝাপিয়ে পরল বাংলা মায়ের ইজ্জতের উপর। তাহলে মাতাল গুন্ডা নায়িকাকে যে উদ্দশ্যে রক্ষা করল আর ভারত ১৯৭১ এ আমাদের যে জন্য সহায়তা করল তাদের মধ্যে কি আসলেও কোন পার্থক্যে আছে? পাকিস্তানকে বঞ্চিত করে ভারত নিজেই যেন তার ভোগ করার ব্যাবস্থা পাকাপোক্ত করল।
আজ সীমান্তের কাটাতারে ঝুলে থাকে ফেলানীর লাশ,হাবীবের নগ্ন দেহে বি এস এফ এর প্রহারের আঘাত যেন নগ্ন লাঞ্ছিত বাংলাদেশের এক বাস্তব রূপ।ট্রানজিট নামের প্রহসনে আল মাহমুদের ‘তিতাস’ নদী পরিণত হয় শুকনো শীর্ণ খালে।ফারাক্কা-টিপাইমুখ বাঁধের ফলাফল ভোগ করে পদ্মা-সুরমা-মেঘনা তার কঙ্কালসার বক্ষ উন্মোচন করে ‘বালুচর’ দিয়ে। আর কত? আর কত বেশি শোষণ করলে তাকে শোষণ বলা যাবে?
আর কত ফেলানী-হাবিবের দেখা পেলে আমাদের আমলারা ‘সীমান্তের ঘটনা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই’ বলতে একটুকু লজ্জা বোধ করবে?আর কত?
ধিক্কার সেসব বেজন্মাদের যারা এতকিছুর পরও ‘ভারত মাতার’প্রেমে ডুবে থাকে। ধিক্কার তাদের যারা নিজ দেশের ভাষা ভুলে হিন্দিতে কথা বলে গর্বিত বোধ করে। ধিক্কার সেসব মা বোনদের যারা এদেশীয় নাটক-সিনেমা বাদ দিয়ে ভারতীয় চ্যানেল গুলোতে সমস্তদিন আকণ্ঠ নিমজ্জত থাকে!
ধিক্কার তাদের ধিক্কার...