মৃত্যু সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের বানী ঃ
" মৃত্যুর লক্ষ্য হলো সবাইকে আল্লাহতায়ালার কাছে ফিরিয়ে নেয়া এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।" (সূরা-আম্বিয়া, আয়াত-৩৫)
"তোমরা যেখানেই থাকো না কেন মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গের ভেতরও অবস্থান করো, তবুও।" (সূরা-নিসা, আয়াত-৭৮)
"আমি তোমাদের মাঝে মৃত্যুকে নির্ধারণ করেছি।" (সূরা-ওয়াকিয়াহ, আয়াত-৬০)
মৃত্যু যন্ত্রনা সম্পর্কে নবী করিম (সাঃ) এরশাদ করেন ঃ
" তরবারীর তিন শ'টি আঘাতের যন্ত্রনা একত্র করলে যা দাঁড়াবে, মৃত্যু যন্ত্রনা তার চেয়েও অনেক বেশী কষ্ট দায়ক বিবেচিত হবে।" (ইবনে আবিদ-দুনিয়া)
শিক্ষা ঃ আমাদেরকে প্রতিদিন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। মনে করতে হবে আজকের নামাযই শেষ নামায, আজকের দিনই শেষ দিন। আর প্রতিদিন মৃত্যুকে স্বরণ করতে হবে।
পুলসিরাত কি?
হাশরের ময়দানে বেহেশত ও দোযখ এনে উপস্থিত করা হবে। বেহেশত উঁচু স্থানে আর দোযখ রাখা হবে গভীর নিম্নে। দোযখের উপর পুল স্থাপন করা হবে সেটিই পুলসিরাত নামে পরিচিত।
ঐ পুলের শেষ প্রান্তে বেহেশত অবস্থিত। বেহেশতে যেতে হলে সেই পুলটি পেরিয়ে যেতে হবে। মানুষের নেকি-বদি ওজন এবং হিসাব-নিকাশের পর সকল লোকজনকে বলা হবে, তোমরা এখন নিজ নিজ স্থানে চলে যাও। ফিরিস্তাগন আল্লাহর নির্দেশে বান্দাগনকে পুলসিরাত দেখিয়ে দিয়ে বলবে এই তোমাদের পথ। এই পুল পেরিয়েই তোমাদেরকে যেতে হবে। কিন্তু সবার জন্য ঐ পুল পার হওয়া সম্ভব হবে না। পাপীরা সেটাকে চুল থেকেও চিকন দেখতে পাবে। তাদের জন্য সেটি হবে অত্যন্ত ধারালো। তারা ঐ পুলে আরোহণ করা মাত্রই তাদের পদদ্বয় কেটে তারা নিন্মস্থ দোযখে পড়ে যাবে। আর নেককারদের জন্য হবে সুপ্রশস্থ সুগম পথ। তারা তাদের নেকীর তারতম্যানুয়াযী কেউবা বিজলীর মত মুহুত্বে পুলসিরাত অতিক্রম করবে। কেউ বা বায়ূ বেগে, আবার কেউবা দ্রত দৌড়ে, কেউবা ধীর মন্তর গতিতে হেঁটে হেঁটে পুল পার হয়ে তাদের গন্তব্স্থল বেহেশতে পৌঁছে যাবে।
আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেন- " যেদিন আমি পরহেগারদিগকে মেহেরবান আল্লাপাকের কাছে মেহমানের ন্যায় জামাত জমাত সমবেত করিব এবং অপরাধী দিগকে পিপাসিত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে চালিত করিব।" (সূরা মারইয়াম, আয়াত ৮৫-৮৬)
আল্লাহপাক আরো বলেন-" তাহাদিগকে জাহান্নামের পথে চালিত কর এবং তাহাদিগকে থামাও কারণ তাহাদিগকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইবে।" (সূরা ছাফফাত, আয়াত ২৪)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- পুলসিরাত জাহান্নামের মধ্যখানে স্থাপন করা হইবে। রাসুলের মধ্য আমিই সর্ব প্রথম স্বীয় উম্মত লইয়া ইহা অতিক্রম করিব। সে দিন নবী রাসুলগন ব্যতীত অন্য কেহ কথা বলিবে না। প্রত্যেক নবী বলিতে থাকিবে হায় আল্লাহ! নিরাপত্তা দান করুন। হায় আল্লাহ! নিরাপত্তা দান করুন।
পুলসিরাত পার হতে হলে আমাদের করণীয় কি কিঃ
* অবশ্যই আল্লাহ ও তার রাসুল (স.) উপর ঈমান আনতে হবে, আখিরাতকে বিশ্বাস করতে হবে।
* আমৃত্যু পাঁচ ওয়াক্ত নামায অবশ্যই পড়তে হবে।
* রমযান মাসে রোযা রাখতে হবে।
* যাকাত প্রদান করতে হবে।
* হজ্জ ফরজ হলে হজ্ব পালন করতে হবে।
* হালাল উপার্জন করতে হবে ও হারামকে বর্জন করতে হবে।
* সুদ, ঘুষ, দুর্ণিতি থেকে নিজেকে ও পরিবারকে রক্ষা করতে হবে।
* আত্বীয়-স্বজনের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। বিপদাপদে তাদের সাহায্য এগিয়ে আসবে হবে।
* সর্বোপরি কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবনকে পরিচালিত করতে পারলেই পুলসিরাত পার হওয়া যাবে।
হে আল্লাহ !আমাদেরকে সঠিক পথে চলার তওফিক দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১০ রাত ৮:১৭