somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নামায সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বানীঃ

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইসলামের পাঁচটি ভিত্তিঃ

ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর স্থাপিত। (১) এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন সত্য মা’বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। (২) সালাত প্রতিষ্ঠা করা। (৩) যাকাত দেয়া। (৪) হজ্জ করা। (৫) রমাদানে সওম সাধনা করা। [বুখারী: ৮]

ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে সালাত বা নামাযের অবস্থান দ্বিতীয়। সালাত বা নামায সম্পর্কে হাদিসঃ

নামায সম্পর্কে

১৪৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “(হে মুহাম্মদ)! আমি তোমার উম্মতের প্রতি পাঁচটি নামায ফরজ করেছি। আর স্বয়ং আমি এ ওয়াদা করেছি যে, যে লোক এ নামাযগুলো সঠিক সময়ে যত্নসহকারে রক্ষনাবেক্ষন(আদায়) করবে, আমি তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাব। আর যে সেগুলো রক্ষনা-বেক্ষন করবে না, তার জন্য আমার কোন প্রতিশ্রুতি নেই।”
ইবনু মাজা এ হাদীসটি হযরত আবূ কাতাদা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৪৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমার প্রতিপালনকারী সেই বকরীর রাখালের প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট, যে কোন পাহাড় চুড়ায় বকরী চড়ায়, নামাযের জন্য আযান দেয় এবং নামায আদায় করে। অতঃপর মহান ও প্রতাপশালী আল্লাহ বলেন -“তোমরা আমার এ বান্দার প্রতি খেয়াল কর; সে আযান দেয়, নামায আদায় করে ও আমাকে ভয় করে। আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিয়েছি এবং তাকে বেহেশতে প্রবেশ করার অধিকার দিলাম।”
এ হাদীসটি হযরত উকবা ইবনে আমের (রাঃ) থেকে আহমদ সংগ্রহ করেছেন।

১৪৯. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- বান্দার কাছ থেকে কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে বিষয়ের হিসেব গ্রহণ করা হবে তা হল তার নামায। সে যদি তা পুরোপুরীভাবে আদায় করে থাকে তবে তা পুরো লেখা হবে। আর সে যদি তা পুরোপুরী আদায় না করে থাকে, তবে মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বলবেন -“দেখ, আমার বান্দার কোন নফল নামায আছে কিনা, যার দ্বারা তোমরা তার ফরজ পুরো করে নিতে পার।” অতঃপর যাকাত সম্বন্ধে অনুরূপভাবে হিসেব গ্রহণ করা হবে। তারপর তার সমূদয় আমলের হিসেব অনুরূপভাবে নেয়া হবে।”
আহমদ ও আবূ দাউদ এ হাদীসটি তামীনদারী ও হযরত আবনে আবি শায়বা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৫০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- রক্ষণাবেক্ষণকারী উভয় ফেরেশতা কারো নামাযের সাথে যুক্ত নামায আল্লাহর কাছে উঠিয়ে নেন না, বরং সুমহান আল্লাহ বলেন, “আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রাখছি যে, আমি আমার বান্দার দু’নামাযের মধ্যবর্তী পাপ সমূহ ক্ষমা করে দিয়েছি।”
বায়হাকী এ হাদীসটি হযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করছেন।

১৫১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ বলেন- নামাযকে অর্ধেক অর্ধেক করে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। আমার বান্দা আমার কাছে যা যাচ্ঞা করে তা তার জন্য। অনন্তর বান্দা যখন বলে -“সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্ব পালনকর্তা” তখন আল্লাহ বলেন - আমার বান্দা আমার যথাযথ প্রশংসা করেছে। অতঃপর সে যখন বলে- “তিনি করুনাময় ও অসীম দয়ালু”, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণকীর্তন করেছে। এরপর সে যখন বলে -“তিনি বিচার দিনের মালিক”, তখন আল্লাহ বলেন - আমার বান্দা আমার মর্যাদা প্রকাশ করেছে। সে যখন বলে - “আমরা তোমারই এবাদত করি আর তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি”, তখন আল্লাহ বলেন, “এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে অর্ধাঅর্ধি। আমার বান্দা যা চায় তা তার জন্য।” অতঃপর যখন সে বলে- “আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত কর তাদের পথে, যাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ, অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টদের পথে নয়” তখন আল্লাহ বলেন - “এটা আমার বান্দার অংশ। আর আমার কাছে আমার বান্দা যা চায় তা তার জন্য।”
আহমদ ও মুসলিম এ হাদীসটি হযরত আবূ হোরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৫২. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- তোমরা কি জান তোমাদের প্রভূ কি বলেন? তিনি বলেন, “যে লোক নামাযগুলো তাদের সুনিদিষ্ট সময়ে আদায় করে, তাদের রক্ষণাবেক্ষণ করে, আর তাদের প্রতি ন্যাস্ত দায়িত্ব অগ্রাহ্য করে বিনষ্ট করে না, তার প্রতি আমার কর্তব্য এই যে, আমি তাকে বেহেশতে প্রবশে করাব। আর যে লোক এ নামাযগুলো তাদের নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করে না, তাদের রক্ষনা-বেক্ষন করে না, আর তাদের দায়িত্ব উপেক্ষা করে তা বিনষ্ট করে ফেলে, তার জন্য আমার কোন প্রতিশ্রুতি নেই। আমি যদি ইচ্ছা করি তাকে শাস্তি দিতে পারি, আর যদি ইচ্ছা করি তাকে ক্ষমা করে দিতে পারি।”
তাবরানী এ হাদীসটি হযরত কাব ইবনে উজরাহ (রা) থেকে সংগ্রহ করছেন।

১৫৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, তিনটি বস্তু আছে, যে লোক এগুলোর রক্ষনাবেক্ষণ করে, সে আমার প্রকৃত বন্ধু। আর সেগুলো যে বিনষ্ট করে, সে আমার শত্রু। তা হচ্ছে- নামায, রোজা ও ফরজ গোসল।”
এ হাদীসটি ইবনুন নাজ্জার হযরত আনাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

ফযর নামাযের তা’কীদ

১৫৪. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান আল্লাহ্ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! দিনের প্রথমাংশে চার রাকাআ’ত নামায আদায়ে অপারাগ হয়ো না, ওর শেষে আমি তোমাকে যথেষ্ট সাহায্য করব।”
তিবরানী এ হাদীসটি হযরত আবুদ্ দারদা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

নামাযের কথা ভুলে গেলে

১৫৫. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- যে লোক নামাযের কথা ভূলে যায়, তার দায়িত্ব হল- যখন তা স্মরণ হবে তখনই সে তা আদায় করে নেবে। কারণ আল্লাহ বলেছেন, “নামায কায়েম কর আমার স্বরণে।”
মুসলিম এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।




শেষে রাতের নামায ও এবাদাতঃ

১৫৬. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- আমার উম্মতের জন্য আমি যদি এটা কষ্টকর মনে না করতাম তবে নিশ্চয় আমি এশার নামায রাতের এক-তৃতীয়াংশ কিংবা অর্ধেকের পরে সরিয়ে দিতাম। কারণ, যখন রাতের অর্ধেক অতিক্রান্ত হয়, তখন মহান আল্লাহ্ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, “কোন ক্ষমা কামনাকারী আছে কি, যেন আমি তাকে ক্ষমা করতে পারি? কোন তওবাকারী আছে কি, যেন আমি তার তওবা মঞ্জুর করতে পারি? কোন প্রার্থনাকারী আছে কি, যেন আমি তার প্রার্থনা কবুল করতে পারি?” (ততক্ষণ পর্যন্ত এ আহবান চলতে থাকে) যে পর্যন্ত না ফজরের উদয় হয়।
আহমদ এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৫৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে, তখন মহান আল্লাহ্ বলেন, “কে সে ব্যক্তি, যে বিপদ দুরীকরণ কামনা করে যেন আমি তার বিপদ দূর করতে পারি? কে সে ব্যক্তি, যে আমার কাছে জীবিকা প্রার্থনা করে যেন আমি তাকে তা প্রদান করতে পারি।”
আবূ দাঊদ এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা(রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৫৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- প্রত্যেক রাতে আমাদের মহান ও মুবারক প্রতিপালক পৃথিবীর নিকটতম আসমানে নেমে আসেন। কারণ যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকে, তখন তিনি বলেন, “কে আমাকে আহবান করবে,, আমি যেন তার ডাকে সাড়া দিতে পারি? কে আমার কাছে চাইবে, যেন আমি তাকে প্রার্থিত বস্তু দিতে পারি? কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যেন আমি তাকে মাফ করতে পারি?
মালিক ও শায়খাইন এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৫৯. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকে, তখন আল্লাহ্ পৃথিবীর নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন- “কে আছ, যে আমাকে ডাকবে যাতে আমি তার ডাকে শাড়া দিতে পারি? কে আছ, যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে যাতে আমি ক্ষমা করতে পারি? কে আছ, যে আমার কাছে বিপদ মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে, যাতে আমি তার বিপদ দূর করতে পারি? কে আছ, যে আমার কাছে জীবিকা চাইবে, যাতে আমি তাকে জীবিকা দিতে পারি?” সকাল না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ্ এরূপ বলতে থাকেন।
ইবনুুন নাজ্জার এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

প্রকৃত গোলাম

১৬০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয় কোন বান্দা যখন প্রকাশ্যে নামায পড়ে এবং তা ভালভাবে সম্পন্ন করে, আর সে যখন গোপনে নামায (নফল) আদায় করে তখন আল্লাহ্ বলেন, “এ আমার প্রকৃত গোলাম।”
ইবনে মাজা এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

আরো বিস্তারিত জানতে হলে....................
নামায সম্পর্কে

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৪৯
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×