somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেই ১০ টি উপায়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো যেত

১১ ই এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক কালে জামায়াতি লবি, জামায়াতের হাজার কোটি টাকা ঢালার কেচ্ছা-কাহিনী শোনা যেত । বি এন পিকেও দায়ী করা হয়েছে অসংখ্যবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার দায়ে। সত্যিকারভাবে আজকের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে যে ঐতিহাসিক ঘটনা গুলো ভূমিকা রাখতে পারতো তা তুলে ধরা হলো।

১. ১৯৭৫ এর আগেই জিয়াউর রহমানের মৃত্যু হলে

জিয়া এবং তার দল বি এন পি খাল কেটে যুদ্ধাপরাধী কুমিরগুলোকে দেশে প্রবেশাধিকার দিয়েই প্রথমবারের মত 'একাত্তরের দালালরা কে কোথায়' জাতীয় গবেষণা করার সুযোগ করে দিয়েছে। পাকিস্তানকে ভালোবেসে পাকিস্তানে থেকে যাওয়া রাজাকারদের নিয়ে বাংলার মানুষ মাথা ঘামাতো না।

২. জামায়তে ইসলামী চিরকাল নিষিদ্ধ থাকলে

শীর্ষ রাজাকাররা যদি পাকিস্তানেই থেকে যেত, জামায়াত বাংলার মাটিতে আজন্ম নিষিদ্ধ থাকলে গ্রাম-গঞ্জ ঘুরে ঘুরে অচেনা-অজানা মলা-ঢেলা রাজাকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানকে ধরে ধরে ফাঁসি দেবার মত আগ্রহ থাকতোনা। বরং স্বাধীনতা-উত্তর দালাল আইনে টাটকা স্মৃতি নিয়ে তৈরি করা চিহ্নিত দালালদের তালিকা অনুযায়ীই বিচার হতো। অনেক সাক্ষী ও কার্যকর দলিলও পাওয়া যেত মামলাতে।

৩. জামায়াত বি এন পির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে সবসময় আলাদা-স্বতন্ত্র থাকলে

জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার চাইতে তাদের বি এন পি থেকে দশ হাত দূরে থাকাটা একটা গণবিবেকের দাবি এবং সেই গণবিবেকের জন্মদাতা হলো আওয়ামীলীগ। জামায়াত আলাদাভাবে নিজেদের মার্কা নিয়ে নির্বাচন করলে বি এন পিকে কলঙ্কিত হতে হয়না, জামায়াতকে আওয়ামীলীগের রোষানলে পড়তে হয়না।

৪. নিজামী-মুজাহিদকে মন্ত্রিত্ব না দিলে

নিজামী-মুজাহিদের মন্ত্রিত্বের ব্যাপারটিই মূলত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পিছনে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছে। এতই শক্তিশালী যে এর জন্য দায়ী বি এন পিকেই উল্টো বিচারের কাঠ গড়ায় দাড় করানোর প্রসঙ্গ এসেছে। রাগ-ঘৃণা-জিঘাংসাগুলোর জন্ম বা পুনর্জন্ম হয়েছে রাজাকারের গাড়িতে পতাকা দেখার পর থেকেই।

৫. ভোটের রাজনীতিতে রাজাকারা কোণঠাসা থাকলে

জামায়াত যদি এককভাবে নির্বাচন করে ১৯৯৬ এর নির্বাচনের মতই ২-৩ টা আসন পেতো, সেটা কারো রোষ-ক্রোধের কারণ হতোনা। ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামীলীগের শাসন আমলেও হয়নি।


৬. বাচ্চু রাজাকাররা টিভিতে ধর্ম ব্যবসা করতে না আসলে

ধর্ম ব্যবসার সূত্রে খুজে পাওয়া বাচ্চু রাজাকারকে হয়তো কেউ কোনদিন চিনতই না, ধার্তব্যের মাঝেই আনতো না। যারাই টিভিতে মুখ দেখাতে গেছে, রাজনীতিতে আওয়ামীলীগের বিরোধী রাজনৈতিক দলে নাম লিখিয়ে জনগণের সামনে এসেছে তাদের রাজাকারগিরিও ধরা পড়ে গেছে।

৭. গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব না দেয়া এবং বাংলার মাটি থেকে ৮০ দশকেই তাড়িয়ে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া

গণ আদালত বা জাহানারা ইমামকে কেউ চিনতোনা। মুক্তিযুদ্ধের ২০ বছর পরে সেই আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব । জাফর ইকবালের ভাষায় রাজাকারদের হাতে বাংলার পাসপোর্ট-পতাকা তুলে দিতে পেরেছি বলেই তাদের বিচার করা সম্ভব হয়েছে।

৮. রাজাকাররা গরিব, সমাজে দুঃস্থ অপ্রতিষ্ঠিত হলে

ব্যাংক, হাসপাতাল, হাজার-হাজার কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসা করে রাজাকাররা মানুষের চোখে পড়ে গেছে। এই হাজার কোটি কালো টাকা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধ রাজনীতিতে ব্যয় হয় বলে, সেটিও ভীষণ দুশ্চিন্তার কারণ । ইসলামী ব্যাংকের সাথে লুটপাটে সোনালি-রূপালিরা পেরে না ওঠাও একটা অশনি সংকেত।

৯. শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলা না হলে, জঙ্গিবাদের উত্থান না ঘটলে

গৌণ কারণ, কিন্তু এসব কিছুর জন্য জামায়তকেও দায়ী করা হয়। বাংলা ভাইও জামায়াতের সৃষ্টি। জঙ্গিবাদ দমন করতেও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে গণ্য করা যায়।

১০. দেশের মানুষ নির্বাচনে সবসময় জামাত-বি এন পিকে বর্জন করলে

একদল মানুষ জামায়াতকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তাদের নেতাদের জীবনই বিপন্ন করে তুলেছে। আওয়ামীলীগ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জেতার শতভাগ নিশ্চয়তা পেলে, জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা বা জামায়াতকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে দলের বিচার করার প্রসঙ্গটা বল পেতোনা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবার পিছনে বি এন পির ভোটার সমর্থকদেরও পরোক্ষ ভূমিকা আছে যাতে করে তারা আওয়ামীলীগের প্রকৃত দেশপ্রেমকে জাগিয়ে দিতে পেরেছে, প্রথম দফায় না হলেও দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৯
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা যদি পুড়ি, তবে তোমরাও আমাদের সঙ্গে পুড়বে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৮ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:০১


২২ বছর ধরে একচ্ছত্র ক্ষমতা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখল, বিরোধীদের দমন—এরদোয়ানের শাসনযন্ত্র এতদিন অপ্রতিরোধ্য মনে হতো। কিন্তু এবার রাজপথের তরুণরা সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। তুরস্ক এখন বিদ্রোহের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চেংগিস খান: ব্লগের এক আত্মম্ভরী, অহংকারী জঞ্জাল

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ২৮ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৪৪

ব্লগ জগতে অনেক ধরনের মানুষের দেখা মেলে—কেউ লেখে আনন্দের জন্য, কেউ লেখে ভাবনা শেয়ার করতে, আর কেউ লেখে শুধু নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে। কিন্তু তারপর আছে চেংগিস খানের মতো একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তান প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া নষ্ট প্রজন্ম

লিখেছেন Sujon Mahmud, ২৮ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৩৬

৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর ধর্ষিতা বাঙালি নারীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত অস্ট্রেলীয় ডাক্তার জেফ্রি ডেভিস গণধর্ষণের ভয়াবহ মাত্রা দেখে হতবাক হয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে আটক পাক অফিসারকে জেরা করেছিলেন যে, তারা কীভাবে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন মিলনকে ধর্ষণ বলা হবে, না প্রতারণা বলা হবে?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৪১

আমাদের দেশে এবং ভারতের আইনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন মিলনকে ধর্ষণ হিসাবে গণ্য করা হয়। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এই ধরণের বিধান আছে বলে আমার মনে হয় না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ, চীন ও ভারত: বিনিয়োগ, কূটনীতি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:১০


প্রতিকী ছবি

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সমীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×