Denver Intl Arpt (DEN)
নভেম্বার এর ২২ তারিখ দুপুর ২ টা ৩৪ মিনিটে আমরা আবার ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজে করে সিয়াটল থেকে যাত্রা শুরু করি, প্রায় ১২ ঘন্টা জার্নি শেষে এসে পৌঁছাই বাল্টিমোর, ওয়াশিংটন! প্রায় ক্লান্ত হয়েই পৌছাই আমার আরেকটি প্রিয় জায়গায়! ট্যাক্সি করে চলে যাই আমাদের জন্য নির্ধারিত স্থান হোটেল ব্রুকসার ইন এ ! নিজের বিশ্ববিদ্যালয় বলে কথা ! মুগ্ধ হয়ে যাই আমার জন্য বরাদ্দ রুম আর থাকা খাওয়ার আয়োজন দেখে! মেয়েদের জন্য এইখানে ইস্পেশিয়াল রুম ! চারপাশ জুড়ে শুধু আয়না আর আয়না! আর আয়নার পিছনে লুকানো থাকে ----
কি লুকানো থাকে বলুন তো ?! ভুত ---হাআহাহাহা---
মজা নিলাম ---ধুর ভুত আসবে কোথা থেকে?! আয়নার পিছনে লুকানো থাকে বেশ কিছু আসবা পত্র !! হুমন---একটু মাথা খাটিয়েই খুজেঁ বের করতে হয় তা! চলুন দেখি কিছু ছবি---
Denver Intl Arpt (DEN)
ডেনভারের এই এয়ারপোর্টে আমাকে অবশ্য বেশি হাটতেঁ হয়নি, টার্মিনাল ঘুরে ক্লান্ত হতে হয়নি আবার ফ্লাইট ধরার জন্য! কারন এইখানে প্রায় কিলোমিটারের মত আছে সচল রাস্তা! আমি শুধু আমার ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম, রাস্তা হেটেঁছে! ইস! সারা পৃথিবীটা যদি এমন হত! আর আমার বাংলাদেশের রাস্তাগুলো -কাচাঁবাজার গুলো ! কি যে মজা হতো!
Baltimore Washington Intl Arpt (BWI)
Seattle Tacoma Intl Arpt (SEA) থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা জার্নি শেষে আমরা পৌছাঁই ডেনভার এয়ারপোর্টে! সেখান থেকে আরো সাত ঘন্টা বোরিং জার্নি শেষ করে রাত প্রায় ১০টায় এসে পৌছাই বাল্টিমোরে!
জার্নি করতে করতে মোটামোটি লম্বা হয়ে গেছিলাম!
এসেই দেখি পুরা শহর আলোয় সাজানো ! থ্যাংক্স গিভিং এর আয়োজন চলছে!
রাত ১১টা বেজে যাওয়ায় প্রায় সব খাবার দোকান-ই বন্ধ ! তাই অগত্যা ঘুরাঘুরি করলাম, তারপর একটা ইটালিয়ান দোকানে চিকেন ব্রোস্ট, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ আর ড্রিঙ্কস খেয়ে রুমে দিলাম দৌড়! সকাল সাতটায় সাটল ধরে যেতে হবে ইউনিভার্সিটি !!
এত সুন্দর করে সাজানো রুম দেখে একটু মায়া হলো, ভাবলাম, ছেলেদের মত পুরা ঘর এলোমেলো করে ফেলার আগে, কয়টা ছবি তুলে রাখি---
আমার ঘুমের আয়োজন--আহারে এইটা যদি সত্য-ই আমার হতো!!
আমার সেকন্ড রুম--
স্টাডি কর্নারঃ
কফি কর্নারঃ
সকালে উঠে দিলাম দৌড়! উনিভার্সিটি !
তারপর ইন্ডিয়ান ফুড কর্নারে খাওয়া খেলাম গপ গপ করে !! রান্না মোটেও আমার হাতের রান্নার মতো, আমার মায়ের হাতের রান্নার মতো অথবা আমার দেশের যেকোন দেশি খাবারের মতো--কোনটাই হয় নি!!
তবুও খেয়েছি, কারন এইটাই ফাস্ট এন্ড লাস্ট চাঞ্চ!
এই সেই ইন্ডিয়ান ফুডের কর্নার! ভিতরের ছবি দিতে পারলাম না বিশেষ কারনে!!
তারপরে সপিং করলাম--সবাই মিলে এইখানে!
এডিডাস এর কালেকশন সহ স্পোর্স এর নামী দামী পোশাক, জুতো, অয়েস্টার্ন ক্যাপ, ডল, পারফিউম, ফুড ড্রিঙ্কস--কি চাই আপনার?! সব আছে এইখানে!! তবে দামটা একটু--- এই যা! তবে যদি ডলার কে টাকা দিয়ে গুন না দেন, তাইলে জলদি-ই কিনতে পারবেন!!
নাইলে কিন্তু লেইট হবে ! এমন কি ভয়ে কিছু কিনতে নাও পারেন !!
বিকালে চলে আসি আবার হোটেলে, জিনিস পত্র রেখে আবার দৌড় দেই ঘুরতে!
এই সেই জনপ্রিয় ইনার হারবার !
এইখানে স্লিপলেস ইন সিয়াটল মুভ্যির বেশ কিছু দৃশ্য ধারন করা হয়েছে!
হাটঁতে হাটঁতে দাডাঁলাম কিছুক্ষন! তারপর বসলাম! মানুষের বসার জন্য পেতে রাখা আয়রনের চেয়ারে বসতেই, বিকালের শ্রান্ত সমুদ্রের হাওয়ায় ভিজে গেলো মন! উদাসী এলোচুলেরা হাওয়ার সাথে মিতালি পাতালো ! হাতের কফিটা শেষ করলাম, নির্জন জায়গাটিতে একা বসে! মনে পড়লো মুভ্যিটার দৃশ্যগুলোর কথা !! মানুষের জীবন কত অদ্ভুত! একজীবনে চাইলেই মানুষ কত ছাড় দিতে পারে ভালোবাসার জন্য! দুঃখ হলো এমন মানুষের দেখা মিলেনি আজো ! এই দেশের মানুষের কাছে শুধু ভালোবাসার দাম নেই!! হায়রে আমার জন্মভূমি !!
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার উঠে দাড়াঁলাম! আমার সেই দীর্ঘশ্বাস বিকেলের সমুদ্রের মাতাল হাওয়ার কান্নার সাথে মিশে গেলো ! এক-দুই-তিন--হুম--নেই ! কিছু নেই মনে!! কোনো দুঃখ নেই !!
তারপর আরো একটু সময় ঘুরাঘুরি! এইখানে যাদুঘর আছে, সমুদ্র কে ঘিরে, তার সব উপাদান কে ঘিরে! আরো আছে দেখার মত---
রক এন্ড রোল সেন্টার---
সাথে কেউ থাকলে একটু ইয়ে করে আসা যেতো-- একা দেখে আর বেশি সাহস দেখাতে পারলাম না!!
তারপর ডিনার কিনে এনে, অলস হয়ে ফিরলাম আমার হোটেলে--
প্রথম দিনে আর পারিনি, আজকে তো প্রথম দিনের কাহিনি লিখেই টায়ার্ড হয়ে গেছি--
আরেকদিন সময় পেলে, আরো সাত দিনের গল্প লিখা যাবে!!
সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন---এই শুভ কামনায়---
আমেরিকা, স্বপ্নের যেখানে কোনো সীমা নেই !! পর্ব-২
আমেরিকা : স্বপ্নের যেখানে কোনো সীমা নেই। পর্ব-১
।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:০৩