
গতদিন তো প্লেইনেই দিছিলাম এক ঘুম! অনেকের ডাকাডাকিতে আজকে আবার ঘুম ভাংলো!



ঘুম চোখেই নামিয়ে দিলো মাঠে! যাহ! একি! অমাগো--বিমানের একদম কাছে! খুব কাছে!


তারপর এই বাসে করে গেলাম টার্মিনালে! অদ্ভুত এক ট্রাডিশনাল এবং ক্ল্যাসিকাল ভাব, চারপাশের সবকিছুতেই!!
কড়া নজরদারি চলে এইখানে ধুমপানে, নো-ফুড, নো ড্রিঙ্কস ! এভ্রিথিং স্যুড বি ইন দ্য ডাস্টবিন! নট ইন দ্য ব্যাগ!!



খুব-ই বিরক্তিকর! পায়ের জুতো থেকে ল্যাপ্টপের পকেট কিছু-ই চেকিং বাকি রাখেনি! অপেন চেকিং ইনফ্রন্ট এবাউট ২০০ পিপ্যল!!


কি আর করা! চেক আপ শেষে, প্রায় ২ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছিল অখানেই!!
বসে বসে কফি খেয়েছি, বার্গার খেয়েছি আর চারপাশের মানুষ দেখেছি! যখন মানুষ দেখতে দেখতে বিরক্ত লাগছিলো, তখন উপড়ে তাকিয়ে এইগুলা দেখেছি!


জার্নি করে খুব-ই ক্লান্ত ছিলাম, লন্ডনে গিয়ে যে কারো সাথে একটু ঘুরবো, তার-ও উপায় নেই! কারন, আমরা যখন জানলাম যে ফ্লাইট লেইট হবে, তখন হাতে সময় ছিলো খুব কম!! টীমে সবার সাথে থাকতে গিয়ে, কিছুই হলো না!!
অগ্যতা ঘুরলাম, ছবি তুললাম!


অবশেষে আবার বিমানে উঠলাম! আবার ! বসে বসে অনসেটে ম্যুভি দেখলাম, গেইম খেললাম! সুন্দর সুন্দর ছেলে দেখে সুন্দর করে হাসলাম! সবচেয়ে মজার বিষয় ছিলো পাইলটের ঘোষনা দেয়ার স্টাইল! যে কিনা, নিজের ফ্লাইট নাম্বার ভুল বলে সবাই কে হাসাতে হাসাতে নির্মল আনন্দ দিতে জানে!!

আর---ডিসপ্লে তে বসে বসে, ফ্লাইয়িং রুট দেখা! বিমান এখন কত উচুতেঁ আছে তা জানা! আমরা যখন আটলান্টিক পাড়ি দিচ্ছিলাম, তখন একটু ভয়-ই লাগছিলো! ইউরোপ থেকে আমেরিকার মাঝখানের এই জল দুরত্ব পাড়ি দিতে সময় লেগেছিল অনেক ক্ষন, হয়তঃ যতক্ষন, তারচেয়ে ভয়ের কারনেই, আপেক্ষিকভাবে সময় মনে হয়েছে, অনেক বেশি লাগছিলো!
অবশেষে, সিয়াটল সময় সন্ধ্যা ৬।৩০ মিনিটের দিকে আমরা নামলাম আকাশ থেকে! শিডিউলের লেইটের কারনে, নামার আগে প্রায় ১০ মিনিট আকাশে ঊড়েছে বিমান, শুধুমাত্র নিরাপদে অবতরনের জন্য! আমাদের দেশের ঢাকার মহাখালির ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তার মত, আকাশেও জ্যাম লাগে দেখে খুব-ই রোমাঞ্চিত বোধ করছিলাম!!


অবশেষে, নেমে খেলাম ধরা!!


মেজাজটা যে কেমুন খারাপ হইছিলো!! কওয়নের মত না!

এক মহিলা, পুলিশ আমারে কইলো--ইজ দেয়ার এন্য ফ্যড, ড্রিঙ্কস ?? ইন্সাইড দ্য ব্যাগ??


আমি লগে লগে কইলাম--না, মনে মনে কইলাম, ছাইড়া দে! যাইগা!

এক মিনিট পড়ে, অই মহিলা আইয়্যা আমারে এক ধমকের সুরে কইলো--বি কেয়ারফুল, আবাউট মেকিং এনি কমেন্টস!!



আমার চোখে তখন পানি প্রায় টল টল করছে---আমি আমার সাথের ভাইয়ারে বললাম, ভাইয়া, আমি বাসায় যাবো---আমি সিয়াটল যাবো না! রিক্সা ডাকেন!!


এত কষ্ট করে, সখ করে সিয়াটল এসেছি, কই বলবে--অয়েলকাম ট্যু সিয়াটল--দ্য সিটি অফ রেইনস!! তা না ধমক দিসে! খেলমু না!!

আরে আমার কি দোষ??!! এই এক-ই ব্যাগ বাংলাদেশে চেয়ক হইছে! হিথ্রো তে হইছে!!! কেউ কিছু দেখে নাই, পায় নাই!! উনি পাইছেন!! ওরা তাইলে কি দেখছে??


যাই হউক, ভাইয়ারো মন খারাপ, টায়ার্ড, তাই উনিচলে গেলেন ট্যাক্সি ডাকতে!
একটু পরে, ভারতীয় একজন শিখ ড্রাইভারের গাড়িতে করে আমরা গেলাম, আমাদের জন্য নির্ধারিত হোটেল আন্দ্রা তে!
ইউনিভার্সিটির লোকজন আমাদের স্বাগত জানালো!,



ক্লান্তির কারনে ক্যামেরা নিয়ে যেতে ভুলে গেসিলাম!!

আমার ট্রেনিং চলাকালীন সময়ে, আমি এই অদ্ভুত সুন্দর রুমটাতে থেকেছি---


আমার রুমঃ

আমার জন্য ভুল আপ্যায়নঃ

আমার টিভিরুম প্লাস স্টাডি কর্নারঃ

আমার কফি কর্নারঃ

হোটেলের ফায়ার প্লেইসঃ

আর এইটা হলো সেই বিখ্যাত সিয়াটল টাওয়ার!!

আজকে অনেক হলো, শরীরে জ্বর নিয়ে



আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন! শুভ রাত্রি---


আমেরিকাঃ স্বপ্নের যেখানে কোনো সীমা নেই (পর্ব-১)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫২