আমি ঈদের ২/৩ দিন পরই ঢাকা আসবো বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু বাবা বলেছিল যে তারও নাকি ঢাকায় কিছু অফিসিয়াল কাজ আছে। সেই কারনে সেও ঢাকায় আসবে। তাই আমাকে বলল যে "আর কয়েকদিন পর যা, তাহলে একসাথে যেতে পারবো।" আমিও বললাম ঠিক আছে।
তো আমরা ২৭ আগস্ট বিকেলে বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেই। চলতি পথে হঠাৎ আমার মনে পরে যে অনেক দিন পর বাবা'র সাথে এটা আমার লং ড্রাইভ।






কিছুদুর আসার পর আমি পিছনের সিটে বাবা'র সাথে গিয়ে বসে কথা বলি আর গান শুনতে থাকি। গান শুনতে শুনতে একসময় আমি ঘুমিয়ে পরি। কতক্ষন ঘুমিয়ে ছিলাম তা মনে নেই। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখি বাবা'র কাধে আমার মাথা। আর বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তখন যে কেমন লাগছিল তা লিখে বোঝাতে পারবো না। মা হয়তো তার ভালোবাসা কোন না কোন ভাবে প্রকাশ করে, কিন্তু বাবা যে আমাকে এতো আদর করে তা আমি আগে বুঝিনি।




ফেরিতে বসে বাবা আমাকে বলে "তোর যখন যা দরকার হয় আমাকে বলবি। টাকা-পয়সা বা অন্য কিছুর জন্য কখনো হেসিটেট করবি না।" আমিও সুযোগ পেয়ে বললাম "ঠিক আছে বাবা। মাঝে মাঝে টাকা একটু বেশী লাগতে পারে। লাগলে আমি ফোন দিবো নে। কিন্তু তুমি আবার এই কথা মা'কে বলবা না।"






ফেরি থেকে নেমে ২ জন চা-নাস্তা খেয়ে আবার যাত্রা আরম্ভ করি। রাতে ঢাকা এসে বাবা আমাকে আমার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে যায়।
আমার কথাঃ
বাবাও যেমন আমাকে অনেক ভালবাসে তেমনি আমিও বাবা'কে ভালোবাসি। মায়ের প্রতি ভালোবাসাটা বেশী থাকলেও বাবা'র প্রতিও একদম কম নেই। আসলে বাবা-মা এর সাথে সম্পর্কটাই বুঝি এমন মধুর।
মাঝে মাঝে ভাবতে খুব কষ্ট হয় তারা যখন এই দুনিয়াতে থাকবেন না তখন কি করবো? কার কাছে যাবো?

যাত্রাপথে আমার তোলা কিছু ছবিঃ
০১. যে দেশে টাকা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় সেই দেশে এরকম অবস্থা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিকঃ


০২. বরিশাল-ঢাকা হাইওয়েঃ
০৩. নদীর মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ন্ত বিকেলের একটি ছবিঃ
----------------------------------------------------------------------------
মা'কে নিয়ে একটি লেখা