সেবার ছিল প্রথম বার।বাহারীণে নেমে হাতে পাস পোর্ট আর ভিসার কপি নিয়ে দ্বিধাশঙ্কিত চিত্তে এগোচ্ছি,এমন সময় ভারতীয় চেহারার,বরং বলা ভাল দক্ষিণী চেহারার এক ভদ্রলোক এগিয়ে এসে বললেন “মিঃ ভট্টাচারিয়া?”আমি মাথা নেড়ে কাগজপত্র দেখাতেই ভিসার কপিটি নিয়ে আসল ভিসা এবং একটি পাঁচ দিনারের নোট দিয়ে আমাকে একটি গেট এর দিকে যেতে বল্লেন।আমি ছেলে-বউ কে দেখার আনন্দে গুটি গুটি এগোচ্ছি এমন সময় হল আসল মজা।মজার কথা এখন থাক বরং এবারের কথা বলি।ঘটনা হুবহু এক শুধু গতবারের মজাটি না হয়ে ব্যাপারটি সোজা হল,আমি নিরুপদ্রবে বেরিয়ে আমার তৄতীয় পুরুষ শ্রীমান অভ্র কে এই প্রথম বার বুকে জড়িয়ে নিলাম।
বাঙালের এই দ্বিতীয় বার বাহরীণ এ পা। প্রথম বার ও অচেনা লাগেনি,এবারো নয়। দিল্লী বম্বের সঙ্গে তুলনীয়,কিন্তূ হায় কলকাতা!তুমি নাকি একদিন কল্লোলিনী তিলোত্তমা হবে? কল্লোলিনী ত হয়েছ, তিলোত্তমা হওয়া আর হলনা বুঝি এ জীবনে!যাক,ফিরে আসি বাহরীণে।
বাহারীণ,ছোট্ট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র।একটি বড় দ্বীপ এবং ৩৯টি ছোট।মোট আয়তন ৭১২ বঃকিলোমিটার।মোট জনসংখ্যা ৬.৫ লক্ষ,নাতিশীতোষ্ণই বলা যায় ১৫ থেকে ৪৬ডিঃসেন্টিগ্রেড।বৄষ্টি প্রায় নেই,মোট ৭৭ মিঃমিঃ,দ্বীপের চারধারে জলের গভীরতাও কম মেরেকেটে ৩৫ মিটার, এখানেই হয় এদের বিখ্যাত মুক্তা।বাহরীণের মানে নাকি “দুটি সমুদ্র”,একটি বাইরের আন্যটি ভেতরের,ভেতরে মানে মিষ্টি জলের দিঘি,এবংকয়েকটি মিষ্টি জলের প্রস্রবন।এই মিষ্টি জলের জন্যই প্রাচীন কাল থেকে লোকেদের আনাগোনা।দ্বীপ টি প্রায় সমতল,একটি ছোট্ট পাহাড় মাত্র ১৩৪মিঃ উঁচু।তার চার পাশে তেলের কূপ।মুক্তা,তেল,ব্যাংক আর ভ্রমণপিপাসুদের নিয়েই এদের কারবার। ইতিহাস পুরাতন,সিন্ধু-সভ্যতা এবং মেসোপোটামিয়া-সভ্যতার মাঝের যোগাযোগ এখানের উত্তরের বন্দর বাহরীণের সদর মানামা।খ্রীষ্ট পূর্ব ২০০০এ এখানে আসিরীয় রাজত্ব ছিলো,আদিবাসীরা ছিল কৃষ্ণবর্ণ এবং স্বাভাবিক ভাবেই অমুসলমান ছিল।তারপর পঞ্চম বা ষষ্ঠ শতাব্দীতে আসে মুসলমান,আরো হাজার বছর পর পোর্তুগীজ্ এবং শেষে আরো একশো বছর পর আসে বর্ত্তমান শাসকরা যারা ইরাণী বংশোদ্ভুত ।
১. ১৮ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৪৫ ০
ওপেষ্ট বাংলা- http://www.opest.net