আমাদের তিউড়ি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সাজ্জাদ সাঈফ এর কবি নেবে যিশুর যন্ত্রণা
মুজিব মেহেদীর ওয়াল থেকে
দূর থেকে এফবিতে, লাজুক, নীরিহপ্রায়, কারো সাতে-পাঁচে নেই মেজাজের যে সাজ্জাদ সাঈফকে দেখতে পাওয়া যায়, ওর প্রথম বই 'কবি নেবে যীশুর যন্ত্রণা' পড়ে ওই অবয়বের খানিকটা ব্যাখ্যা পাওয়া গেল বলে মনে হয়।
কবিতার শরীরে ওর যে মগ্নতা, যে সমর্পণ, বাক্যে বাক্যে নানা রং লাগানোর যে অভিনিবেশ মূর্ত হয়ে আছে, সেসব যে পাঠকাগ্রহ দাবি করে তার কোথাও হয়ত কোনো ঘাটতি আছে, উপেক্ষা আছে, গোনা-গুনতিতে না-ধরার প্রবণতা আছে। এই বাস্তবতা শাপে বর হয়ে ওকে সংগত অভিমান দিয়েছে, সংঘহীনতা থেকে দূরে কাগজ-কলমের কাছে বসিয়ে দিয়েছে :
'গান ছিলো, আজ সংঘবহির্ভূত, স্মৃতির দম্ভে শুধু খসখসে পাতা ঝরে পড়ে!'
'আমাকে ডেকেছে আজ নীরবতা-রাগ/ পায়ে পায়ে মল বাজে এমন রাতের!/ তবু তো অভ্যাসগুলো, মেলেছে পরাগ;/ রাঙা মন, খুলি জুড়ে আঁচড় দাঁতের'।
দেখা যায়, জগতের শব্দ-নৈঃশব্দ্য ও সৌন্দর্যকে নিজের মতো করে বুঝে ওঠবার একটা প্রয়াস আছে ওর মধ্যে। দ্রষ্টা হয়ে নিবিষ্ট মনে এসব দেখে যাওয়া ও কথায় কথা বুনে যাবার প্রক্রিয়ায় ওর স্বর তার রূপ গড়ে নিয়েছে নিম্নগ্রামে :
'যেভাবে শিশিরের ভারে নুয়ে থাকে ঘাসফুলের পাতা, সাঁকোর হাতল ধরে ধরে সন্ধ্যা নেমে আসে গ্রামে, সেরকম গুচ্ছ ধানের মঞ্চে স্থির হয়ে আমি শুধু বয়সটাকে থেতলে যাওয়া দেখি...'।
'পতনের পর বৃহৎ বৃক্ষেরও থাকে ভ্যাবাচেকা মুখ, করাতঘূর্ণি শেষে কাঠুরেরও থাকে হাহাকার।'
'স্কুল মাঠে খুনির হাতের মতো শীতল অন্ধকার পাতে নিয়ে বসে আছে রাত'।
প্রমিত ভাষার লেখালেখিতেও ক্রিয়ার অপ্রমিত রূপ ব্যবহারের একটা প্রবণতা কারো কারো লেখায় দেখা যায়; সাজ্জাদ সাঈফেও ক্রিয়ার ঘটমান বর্তমান রূপের তেমন প্রয়োগ দেখা গেল : ভিজতেছে, ঝরতেছে, প্রভৃতি।
প্রকাশক : তিউড়ি
প্রচ্ছদ : রাজীব দত্ত
রকমারি.কম থেকে কিনতে