মেয়েটা কোন ক্লাশে পড়ে !!! সেভেন - এইট, বড় জোড় নাইন হতে পারে এর বেশী হবার কোন কারন নেই । মায়া কাড়া চেহারা আর ঢাকার বিখ্যাত এক স্কুলের ড্রেস গায়ে চাপানো । ফার্মেসীর সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেটের শেষ টান দিচ্ছিলাম। ভার্সিটি পড়ুয়া হবে এমন একটা ছেলে মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে ফার্মেসীর সামনে, ইতস্তত এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর নিচু গলায় কথা বলছে।
মেয়েটা ব্যাগ খুলে ছেলেটার হাতে টাকা ধরিয়ে দিয়ে বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকল, আমি এমন জায়গায় দাঁড়ানো চোখে না পড়ে উপায় নেই। সিগারেট শেষ হওয়ায় আমিও ফার্মেসীতে ঢুকে পড়লাম, ছেলেটি সেখানে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে । বিশেষ জিনিসগুলো সব সামনেই ঝোলানো থাকে।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট দেখিয়ে ছেলেটা দাম জানতে চাইল, তারপর বলল একটা দিন। নিয়ে বের হয়ে গেল, মেয়েটাকে দেয়ায় সে ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখল।
পুরোটা সময় আমি মনে হয় ভাষা হারিয়ে ফেলছিলাম, এ কি দেখছি আমি !!!
এই টুকুন মেয়ে, যাকে বাসায় এখনও হয়ত সকালের নাস্তা আর রাতের খাবার মা না খাইলে দিলে সে খেতে চায়না। এই মেয়ে এই প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট নিয়ে বাসায় যাচ্ছে ! সে কি জানে সে কি করে বসেছে, যদি পজেটিভ হয় তাহলে? যে কাজের জন্য এই প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট সে কিনল ওটায় বা কতটুকু বোঝে সে?
সম্বিত পেলাম দোকানদারের কথায়, কি লাগবে আপনার?
দুটো ওরস্যালাইন কিনে নিয়ে বাইরে আসলাম, আরেকটা সিগারেট ধরালাম । শরীর পানি শূন্য হয়ে যাচ্ছে, চিন্তা চেতনায়ও শূন্যতা বোধ করলাম। বড্ড বেশী পিছিয়ে পড়ছি এই সমাজের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে.তথাকথিত আধুনিকতা, প্রগতিশীলতা, মুক্ত চিন্তা এবং মুক্ত সংস্কৃতির চর্চা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাদের? মিডিয়া এই অবক্ষয়গুলি তুলে ধরেনা। তাই আমরাও এগুলি খেয়াল করিনা। লক্ষ করে দেখবেন, মানুষ তার আই লেভেলের সবকিছুই আগে দেখে এবং খেয়াল করে। সাইডের ইনসিডেন্ট ১০% ও চোখে পডেনা! ধীরে ধীরে আমরা ডুবে যাচ্ছি পঙ্কিলতা এবং ধ্বংসের অতল গহীনে।
জাগবো কবে? সব শেষ হবার পর?
উৎসঃ রিফাত বিন শরিফ শিশির এর ফেসবুক স্ট্যাটাস।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮