১) দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং ডুবিয়েছে বাংলাদেশকে । ইমরুল, জুনাযেত, আশরাফুল,রহিম,রিয়াদ কেউ ভাল বলে উইকেট না দিয়ে বরং উইকেট বিলিয়ে এসেছে । বাংলাদেশের হারার পেছনে এটা বড় একটা কারন । এছাড়া চারটি রান আউট দায়িত্বজ্ঞানহীনতারই পরিচয় । সাকিবের ম্যাচটা বের করা উচিত ছিল । কেন যে এভাবে স্কুপ খেলতে গেল, বড় মাশুল দিতে হযেছে বাংলাদেশকে সেই শর্টটাতে । রিয়াদের ৩৮ বলে ১৪ রান করে এভাবে আউট হওয়া, হারের পিছনেও একটি কারন ।
২) জিম্বাবুয়ের সাথে ১৫ জনের দলে শাহারিয়ার নাফিজ নাই । একাদশে তার অভাবটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বাংলাদেশ । জিম্বাবুয়ের এরকম রানের জবাবে তার অপরাজিত তিনটি সেঞ্চুরিসহ ১৫ ম্যাচে ৬২.৪১ গড়ে ৭৪৯ রান আছে তার। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে তার পারফার্মেন্স খারাপ ছিল না । শাহারিয়ার নাফিজকে না নেয়া বাংলাদেশ হারের একটি বড় কারন ।
৩) আশরাফুলকে দলে নেয়াও একটা বড় ভুল । আশরাফুল জাতীয় লিগে ব্যাট-বলে দারুন পারফার্মেন্স করে । এই যুক্তিতে তাকে দলে রাখা হয় । জাতীয় লীগের খেলা না দেখলেও এস এ গেমসের ফাইনাল টেন স্পোর্ট-এর কল্যানে দেখে আমার মনে হয়েছে আশরাফুলকে দলে নেয়া ভুল হযেছে । আর এই ম্যাচের আউটতো এস এ গেমসের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি । আশরাফুল দশ বছর ধরে ক্রিকেট খেলে একই ভুল যদি বার বার করে , তাই তাকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হবে বড় ভুল । আশরাফুল একটা ভাল ইনিংস খেললে কযেক ইনিংস আর খেলতে পারে না । আজকের ম্যাচের পর মনে হয়েছে তার সাত আট ম্যাচ পর পর একটি ইনিংস খেলার অভ্যাস যায়নি এখনো । একটা ক্যাচ ড্রপ করেছে আর কয়েকটা ফিল্ডিংও মিস করেছে ।আর একটা কথা জাতীয় লীগে যারা ভাল ব্যাটিং পারফার্মেন্স করেছিল তারা (আশরাফুল,রহিম,রিযাদ,জুনায়েত) কেউ এই ম্যাচে ভাল করতে পারেনি । জাতীয় লীগের মানের উপর তাই প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক ।
৪) শুধুকি বাংলাদেশের খেলেয়াররা দায়ী , বাংলাদেশের আম্পিয়ার দায়ী নয় কি ? এনামুল হক মনি যখন নেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে তামিমকে আউট দেয় শুধু জিম্বাবুয়ান বলার এবং ফিল্ডারদের আবেদনের চাপে। ক্রিক ইনফো থেকে “10.5 Mpofu belts out an appeal for leg before, and continues to shout till the umpire belatedly raises his finger, it pitched about half a foot outside leg, and struck Tamim on the pads, but he has to walk back, what a decision to get on your comeback 44/1 “ । মনির এটাই ভুল সিদ্ধান্ত নয়, এর আগেও ইংল্যান্ডের সাথে সাকিবকে ভুল আউট দিয়েছিল । বাংলাদেশর আম্পায়াররা, এমনকি থার্ড আম্পায়ার যখন ভুল সিধান্ত নেই তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্নই থেকে যায় । ( বাংলাদেশের আম্পায়াদের নিয়ে আমার আগের একটি পোষ্টঃ নিউজিল্যান্ড, সরফুদৌল্লা, নাদির শাহ, আলিমদারও পারল না বাংলাদেশের জয়রথ থামাতে !!!! )
৫) বাংলাদেশের ফিল্ডিং আজকে খুব খারাপ হয়েছে । ভাল ফিল্ডিং হতে আরও অন্তত ২০ টা রান সেভ করা যেত । একটা ওভার থ্রোয়িং- এর জন্য চার রান পেযেছে । দুই দুটা রান আউট মিস করেছে, একটা ক্যাচও মিস করেছে আশরাফুল । বাংলাদেশ দলের পরাজযের পিছনে তাই ফিল্ডিংকে দায়ি করলে ভুল বলা হবে না । (যদিও বাংলাদেশর স্পিনাররা খুব বেশী বড় টার্গেট সেট করতে দেয়নি জিম্বাবুয়েকে ।)
৬) বিসিবির দায়িত্বজ্ঞানহীনতাও বাংলাদেশ হারার পিছনে অনেক বড় কারন । শাহারিয়ার নাফিজকে দল না নেয়া, জহরুলকে দলের বাইরে রাখা আর আশরাফুল, রকিবুল ও জুনায়েতকে দলে নেয়া সত্যিই বড় ভুল । শুধু কি তাই দল ঘোষনা নিয়েও কি কম নাটক করেছে বিসিবি । আর ক্যাপ্টেন নির্বাচন নিয়ে দেরী, সাকিবের নিউজিল্যান্ডের সাথে এত ভাল কাপ্টেন্সি করার পরও তাকে কাপ্টেন্সি দিতে যদি এত দেরি হয় তাহলে কাঠগড়াতে দাড় করানো যেতেই পারে বিসিবিকে । মাশরাফি ফিরে এলেও একটাও ম্যাচ খেলতে পারেনি । তাকে কোন যুক্তিতে যে ক্যাপ্টেন রাখার জন্য এত দেরীতে ক্যাপ্টেন্সি ঘোষনা তা আমার বোধগম্য নয় । সাকিবকে কাপ্টেন্সি দেওয়াও আগে বা নিউজল্যান্ড সফরের পর তার সাথে যোগাযোগ না করে হঠ্যাৎ তার নাম ঘোষনা করা বোকামিরই লক্ষণ । সাকিবকে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিতে দেয়া হয়নি ক্যাপ্টেন্সির ব্যাপারে ।
৭) বাংলাদেশ ব্যাটিং-এ নেমে দুই ওপেনার অতি সাবধানী সূচনা করে । মিরপুরের উইকেটে পুরাতন বলে স্পিনারদের খেলা একটু কঠিন হয় । পরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা (সাকিব বাদে) জিম্বাবুয়ের স্পিনারদের সাচ্ছন্দে খেলতে পারেনি । আমার মনে হয় এটাও ভুল ডিসিশন ।
৮) বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসন টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিধান্ত নেয় । বিসিবি একাদশের ম্যাচ সাকিবকে এ সিধান্ত নিতে বাধ্য করে । সেই ম্যাচে সকালের শিশির ভেজা পিচে জিম্বাবুয়ান পেস বলাররা সেভাবে বলিং করেছে (৯উকেটের ৭ টি নিয়েছিল তারা) তাতে বাংলাদেশ কাপ্টেন প্রথমে ব্যাট করার সিধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকে । (যদিও মিরপুরের উইকেটে রান চেস করা করা কঠিন ।) সকালের শিশির ভেজা পিচে বাংলাদেশ পেস বলারদের বলিং করার সুযোগ করে দেয় । কিন্তু বাংলাদেশ পেস বলাররা কাপ্টেনকে সম্পূর্ন রূপে আশাহত করে । উইকেট নেওয়াতো দূরের কথা রানটারও লাগাম টেনে ধরতে পারে নি । ভাবতে অবাক লাগে বাংলাদেশের পেস বলাররা যেখানে পুরোপুরি ব্যর্থ, সেখানে জিম্বাবুয়ান পেস বলার কিনা হয় ম্যাচ সেরা । (ধন্যবাদ বাদ সাকিব, তোমার প্রথমে বলিং করার ডিসিশনকে । কারন ব্যাটিং নিলে শিশির ভেজা পিচে না জানি জিম্বাবুয়ান পেস বলাররা আরও কত ভাল করে ফেলত !)