মোটর সাইকেল বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় ও বহূল ব্যবহৃত বাহন। ঢাকার জ্যাম এর রাস্তায় এটি একটি অনবদ্য যান যা কিনা খুব অল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে আপনাকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিবে।যেখানে বাস , গাড়ি অথবা সিএনজি দিয়ে যেতে লাগবে তিন ঘন্টা সেখানে বাইক আপনাকে পৌঁছে দিবে এক ঘন্টায় । এজন্য পাঠাও এর মতো সার্ভিস গুলো এদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এছাড়া তরুণদের কাছে এর স্টাইল এবং রোমান্টিক ভেলু অপরিসীম। আমি নিজেও বেক্তিগত ভাবে বাইক চালাতে পছন্দ করি , ইনফ্যাক্ট আমি একজন ভালো বাইক চালকও বটে।
আজকে আমি ঢাকার রাস্তায় বাইকের চলাচলের কিছু অসামঞ্জস্যতা নিয়ে লিখতে চাই যা আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা। এটা মানে এই নয় যে অন্নান্য যানবাহন খুব ভদ্র ভাবে চলছে , বিশেষত বাস গুলার অবস্থাতো ভয়াবহ।
১) লেন না মানা ও বিপজ্জনক ম্যানুভারিং:
রাস্তায় চলার সময় লেন না মানা এবং ফাঁক পেলেই কোনো গাড়ির সামনে দিয়ে হঠাৎ ঢুকে পড়ার প্রবণতা এখনকার বাইক চালকদের মধ্যে বেশ দেখা যায়। চালক এখানে ধরেই নেয় কোনো কিছু হলে পেছনের গাড়ি তো ব্রেক করবেই, আর যদি একান্তই না করে গাড়ির ড্রাইভাররে এমন মাইর দিমু....... । ভাই কোনো কারণে তো গাড়িটি ব্রেক নাও করতে পারে এবং এতে আপনার ঠেঙ ভাঙার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে এবং অবশই গাড়ির ড্রাইভারকে মেরে আপনার ভাঙা পা জোড়া লাগাতে পারবেন না। মনে রাখবেন আপনার ঠেঙ এর দেখভাল আপনাকেই করতে হবে , অন্য গাড়িআলা সেই দায়িত্ব নেবে না। বরং ভাগ্য খারাপ হলে গাড়ির ড্রাইভার যদি কোনো নব্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা মাস্তান হন তখন ভাঙ্গা ঠেঙের সাথে মাইর ফ্রি পেয়ে যাবেন।
২) সিগন্যাল না মেনে চলা
প্রায় সময় দেখা যায় যখন কোনো রাস্তায় সিগন্যাল পরে তখন অনেক বাইকার ভাই বা পাঠাও ভাই ঠেলেঠুলে সামনের দিকে চলে আসেন এবং যখনি অন্যদিক থেকে আসা দুইটা গাড়ি মাঝখানে রেসানেবল ফাঁক দেখেন বা দুই সিগন্যাল অন্তর্বর্তী সময়ের ফাঁক দেখেন তখন হঠাৎ হুন্ডা টান মেরে চলে যান। ভাই সাবধান ঢাকার বেশিরভাগ গাড়িঅলাই সিগন্যাল এর হলুদ লাইটকে স্পিড আপ সিগন্যাল মনে করেন।
৩) ফুটপাথএর উপর দিয়ে চলা
সাধারণ মানুষেরা খুব চাপের মধ্যে আছে। ফকিন্নি , হকার আর শিল্পপতিদের গাড়ির চাপে ফুটপাত এমনেই চিকন হইয়া গেছে , এইখানেও যদি আপ্নে বাইক উঠায়দেন তাইলে এরা কোই যাবে ?
৪) সেফটি ছাড়া চলা , বিশেষকরে পরিবার এর সদস্যদের :
আমি একটা জিনিস খেয়াল করছি , খুব ভালো মানুষও বাইকে উঠার পর কেমন জানি মনস্টার হইয়া যায় (সবাই না )। তখন তাদের মনে থাকে না পিছে তাদের স্ত্রী - সন্তানরা তার উপর ভরসা করে বসে আছে হেলমেট ছাড়া। সেই অবস্থায় বাইক নিয়া তেলেসমাতি করা কি ঠিক ? অরে ভাই এক্সিডেন্ট হইলে আপনার চেয়ে তাদের ক্ষতি আরো বেশি হবে, অথচ তারা কোনো দোষ করে নাই। আমি অনেক প্রেমিক ভাইকে দেখছি পিছনে বান্ধবী বসাইয়া হাইওয়েতে বাইক ডান -বাম করতে করতে যান এবং ইহাকে পুরুষত্বের লক্ষন হিসাবে গণ্য করেন। ভাইরে এমনে যদি পুরুষ হওয়া যায় তাইলে ধরতে হবে বাইক ছাড়া যতক্ষণ থাকেন ততক্ষন আপনি অন্য কিছু।
আজকাল ত্রিশ-চল্লিশ হাজার টাকা হইলেই বাইক কিনা যায়। কিন্তু একজন সত্যিকারের বাইকার হইতে লাগে পেসন। লাগে কিছু নিয়ম মেনে চলা। জীবনের প্রশ্ন যেখানে জড়িত সেখানে একটু নিয়ম মেনেতো আমরা চলতেই পারি , কি বলেন ভাই !!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:২৫