কল্পনা করুন তো আপনি একদিন ঘুম থেকে জেগে দেখলেন আপনি ৩০০০ সালে পৌছে গেছেন। কিন্তু দুঃখিত হওয়ার বদলে আপনি হলেন আনন্দিত, কারণ এই একবিংশ শতকেও আপনি খুব একটি সফল মানুষ ছিলেন না। তাই ভাবলেন যদি ভবিষ্যতে গিয়ে সফল হওয়া যায়! কিন্তু হায়, আপনি আগেও ছিলেন পিজা ডেলিভারী বয় আর এখন হলেন স্পেস ডেলিভারী বয়।- এমন কাহিনী নিয়ে বানানো হয়েছে ভবিষ্যতের রামায়ন ফিউচারামা (Futurama)। যার নায়ক ফ্রাই আর নায়িকা তুরাঙ্গা লীলা।
মজার ব্যপার হলো, এই ফিউচারামা সারা বিশ্বে এতই জনপ্রিয় এক আমেরিকান কার্টুন ছবি যে এর প্রচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও চারটি ডাইরেক্ট-টু-ডিভিডি ছবি বানানো হয় এবং হিটও হয় তুমুল!
সাম্প্রতিক এর ২৬টি পর্ব নতুন করে বানানো হয়েছে এবং কমেডি সেন্ট্রাল চ্যানেলে সম্প্রচার শুরু হয়েছে।
ফিউচারামা কার্টুনটি ইতিহাসের সবচেয়ে নেরডি (মানে আতেঁল প্রকৃতির) সিটকম (মানে সিচুয়েশন বুঝে হাস্যরস) শো হিসেবে পরিচিত। এটি বানিয়েছেন ডেভিড এক্স কোহেন ও ম্যাট গ্রোয়িং (সিম্পসন নামক জনপ্রিয় কার্টুন ছবির জনক)।
ডেভিড এক্স কোহেন আমেরিকার বিখ্যাত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের গ্রাজুয়েট হলেও (প্যানকেক সর্টিং নিয়ে তার একটি কাজ বিশ্ববিখ্যাত) কমেডি কার্টুন লিখেই তিনি জীবন চালান।
অন্যদিকে ফিউচারামার আরেক দিকপাল পরিচালক হলেন কিন কিলার । যিনি গণিতের পিএইচডি এবং হার্ভাডের ছাত্র ছিলেন। ছবি ভাগ করার (ইমেজ সেগমেন্টশন) এর ব্যপারে তার বিশাল কাজ থাকলেও তিনি আজকাল ফিউচারামা নিয়েই ব্যস্ত।
জেফ ফিউচারামার আরেক লেখক। যিনি হাভার্ড থেকে পদার্থবিজ্ঞান ও প্রিন্সটন থেকে কম্পিউটারে পিএইচডি করেও ফিউচারামা টিভি শোয়ের লেখক বনে গেছেন বিলকুল!
সব মিলিয়ে ফিউচারামা আসলেই কঠিন পাবলিকদের লেখা এক সহজ কল্পবিজ্ঞান ভিত্তিক কার্টুন। যার পরতে পরতে আছে হাসি-ঠাট্টা আর জটিল বিজ্ঞান থিওরীর সহজ অবতারণা।
মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে ভাবতে এইসব মানুষেরা কত জেনেও সামান্য কার্টুন বানাতে ব্যস্ত!
ভবিষ্যতে আমাদের কম্পু জ্ঞানীরাও এমন কিছু বানাবে আশা করি। ফিউচারামা না হলেও অন্তত মান সম্মত একটি কল্প বিজ্ঞানের নাটক বানানোর প্রয়াস নিবে বাংলায়।
জয়তু ফিউচারামা।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:৩১