'মাহমুদ, তুই একটা মদন'।
কি এক প্রসঙ্গে ফারিয়ার এ মন্তব্য।
শুনে মাহমুদের চোখ কি একটু চকচক করে উঠলো? ঠোঁটের কোনে হাসির ঝিলিকটা কি কারো নজরে পড়লো! হয়তো কয়েক মুহুর্তের জন্য। তারপরই স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্য। এবং তারও কিছুটা পরে বিষ্ফোরণ।
মাহমুদ: তুই জানিস মদন কে?
ফারিয়া: কে?
মাহমুদ: কামের দেবতা।
ফারিয়া কি একটু চুপসে গেলো? বিষয়টা হয়তো সেখানেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু, স্বর্গে বসে মদন যে তখন মুচকি মুচকি হাসছেন!
ঘটনা একটি জন্মদিনের পার্টির। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক বান্ধবীর জন্মদিন। বান্ধবীর বাসায় কেক-কাটাকাটি। এই সুযোগে নিজের বয়ফ্রেন্ডকেও বাসায় ঢোকানো। একটু ভালো মন্দ খাওয়া। যারা হলে থাকে তাদেরতো পোয়াবারো। তাই মধ্যবিত্ত সেই বান্ধবীর ছোট্ট ফ্লাটটির ড্রয়িংরুমটা সেদিন সন্ধ্যেতে উপচে পড়ার মতোই অবস্থা। ছেলে-মেয়ে, জুটি, সিঙ্গেল মিলে জনা কুড়ি বই কম না। ড্রয়িংরুমেই পাতা একটি খাটে শুয়ে বান্ধবীর অসুস্থ বাবা। একসময় তিনিও হয়ে গেলেন পার্টির অংশ।
এই পার্টির ফারিয়াও একজন। বলা যায় টপচার্টের নাম্বার ওয়ান। নিজেকে সিঙ্গেল দাবি করলেও তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি, ধারণা, গল্প এবং গুজব বিদ্যমান এবং প্রচারিত। তবে মিস ফারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হার্টথ্রবদের একজন, কোনো সন্দেহ নেই। যথারীতি স্নবিশ। সমবয়েসীরা তার কাছে পাত্তা পায় না। স্বাভাবিক। তার পেছনে বিসিএস আংকেলদের সিরিয়াল ঈর্ষা জাগার মতো। আংকেলরা তখন রীতিমতো তার হলের গেটে লাইন দেয়। হলের রুমে দীর্ঘসময় নিয়ে ম্যাডাম চোখে কাজল আঁকেন। বাইরে আংকেলদের ধৈর্যচ্যূতি ঘটে কিংবা ঘটে না।
সেই ফারিয়া মাহমুদের এই মন্তব্যে নিশ্চুপ। কিন্তু সদ্য টাইটেল পাওয়া মদন কি আর ছেড়ে দেয়ার লোক! চশমা পড়া গ্রন্থকীট মদনের বই পড়া জ্ঞানের এমনধারা বাস্তব অ্যাপ্লিকেশন থাকবে এটাই বা কে বুঝেছে।
কেক কাটা হবে। মোমবাতিতে অগ্নিসংযোগ হবে। সবার নজর তখন সেদিকে। এমন সময় দেখা গেলো মাহমুদ ভোঁ দৌড়। তার হাতে ফারিয়ার তৃতীয় বস্ত্রখানি। তার পেছনে ছুটছেন বস্ত্রখন্ডের মালিক। বস্ত্রখন্ড উদ্ধারের আগে মিনিটখানেক চললো সেই মেরি-গো-রাউন্ড।
দশ বছর পেরিয়ে গেছে তারপর। ফারিয়া কি এর পর আর কাউকে মদন বলে ডেকেছে?
(ডিসক্লেইমার: এই কাহিনী এবং এর সকল চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তব কোনো ঘটনার সাথে যদি এর কোনো মিল থাকে, তা অনভিপ্রেত কাকতালমাত্র।)