সেই পত্রিকা-টির জন্মলগ্ন থেকে আমি এর পাঠক। রোজ ঘুম থেকে জেগে 'জনকন্ঠ' হাতে না পেলে অস্হির হয়ে যেতাম। মাঝেমধ্যে হকার অন্যকোন পত্রিকা দিয়ে গেলে কিছুক্ষণ উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে ছুড়ে ফেলে দিতাম। সকালে কার আগে কে জনকন্ঠ পড়বে তা নিয়ে বাবার আর আমার মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেত। অনেক সময় সকালে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে দেখতাম বাবার হাতে পত্রিকা। অপেক্ষা করতাম। বাবা ঘন্টার পর ঘন্টা পড়েই যেত। এনিয়ে বাবার সাথে ঝগড়া লেগে যেত।
একটি আধুনিক পত্রিকা যাকে বলে জনকন্ঠ তা-ই। সত্যি কথা বলতে দ্বিধা করেনা। অনেকে জনকন্ঠকে বলে আওয়ামীলিগের পত্রিকা। কিন্তু আমি দেখেছি আওয়ামীলিগ সরকারের আমলে জনকন্ঠ আওয়ামীলিগকে ছেড়ে কথা বলতো না।
আজ পত্রিকাটি বন্ধের উপক্রম। সম্পাদক জেলে। গতকাল জনকন্ঠ ভবনের ছয়তলা সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। যেন তিলে তিলে শেষ করে দেয়া হচ্ছে আমার প্রিয় জনকন্ঠ। বিদেশের মাটিতে বসে আমার প্রিয়জনদের মতো প্রিয় জনকন্ঠকেও মিস্ করি। প্রতিদিন ইন্টারনেট সংস্করনে দেখতে পাই ছোট হয়ে যাচ্ছে আয়োজন।
দূর্নীতিবাজ, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং সম্প্রদায়িক কিছু পত্রিকা যখন খুব জোরেসোরে পত্রিকা প্রকাশ করে যাচ্ছে, তখন জনকন্ঠের গলা কেন টিপে ধরা হচ্ছে, আমি বুঝতে পারিনা।
সামহয়ারে কিছু ব্লগারের উল্লাস দেখয়ে পাচ্ছি। তারা কেন জনকন্ঠে পছন্দ করেনা তা জানি, কিন্তু জানিনা এই সরকার কেন জনকন্ঠেকে সহ্য করতে পারছেনা। তাহলে কারণ কি একই!!!!!!
আমি আশাবাদী, জনকন্ঠের কন্ঠ কখনো বন্ধ করা যাবেনা। কারণ এটা তো জনগনেরই কন্ঠ। আমার প্রিয় জনকন্ঠ আজীবন গেয়ে যাক সাম্যের গান..........।