বলিভিয়ার জঙ্গলের নিদারুণ লণ্ডভণ্ড ল্যান্ডস্কেপ,
হাভানা চুরুটের খসে পড়া কিছু ছাই,
নতুন একটি ভোরের অপেক্ষায় থাকা সূর্য
গা ঢাকা দিয়ে আছে কোনো বিপ্লবীর মতো দুর্নিবার প্রত্যাশায় –
এইটুকু দৃশ্য শুধু পড়ে আছে আমার স্বপ্নকাঠের টেবিলে।
মধ্যরাতের বুক চিরে এক পৃথিবী আকাশ বাতাস হাহাকার
তোমার নাম ধরে ডাকতে থাকে বারংবার।
কবিতার প্রতিটি কালো অক্ষরগুলো
আর্তনাদ করতে করতে হঠাৎ বিপ্লবী হয়ে উঠে।
তোমার জন্য, শুধু তোমারই জন্য
হে একটি বিষণ্ণ হাসিমাখা মুখ –
যার বীরোচিত সব লড়াইয়ে অস্ত্রের পাশে
ঠাই পেতো পাবলো নেরুদা’র কবিতা।
আরবানো’র মতো আমাকেও তুমি ভাবতে শিখিয়েছো,
শিখিয়েছো পৃথিবীর সর্বোত্তম বিষয় –
মানুষের মতো একজন মানুষ হতে।
স্বাধীনচেতা প্রতিটি মানুষের জন্য তোমার জীবন একটি প্রেরণা।
কে বলে তোমার মৃত্যু হয়েছে?
ব্রহ্মাণ্ডের অতীত বিশালতা নিয়ে
আজো তুমি আছো বেঁচে।
তোমার হাতের চুরুট নিভেছে কে বলে?
সেই অতি পরিচিত চুরুটের আগুন
আজ কোটি হৃদয়ের গভীরে জ্বলে।
কোনো এক নিভৃত ভাষায়
দুঃখ তোমার নাম লিখে রাখে শূন্যতায়।
এই পৃথিবীর সাধ্য আছে কার
বঞ্চিত করে তোমাকে আলিঙ্গন থেকে অমরতার?
কোনো কোনো মৃত্যু জীবনের চেয়েও মহিমান্বিত –
জানতো না তারা তোমার শব নিয়ে টানাটানি যারা
করেছে সেসব কুকুর আর শেয়ালের পাল।
ওরা না জেনে তোমায় ছুঁড়ে ফেলেছিলো অবহেলায়
ছোট্ট একটি কফিনে পুরে, জানতো না
তাতে তোমার বিস্তৃতি হবে সমস্ত ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে।
ঘটনাটি যতো বিরাট – পৃথিবীর কোনো কবিতা
সেই উচ্চতা ছুঁতে না পেরে নতজানু হয়ে
তোমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে।
কোনো কবিতার সাধ্য কি আছে সেই উচ্চতা ছোঁয়!
© অদ্রি অপূর্ব