somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি ও একজন সন্দেহভাজন...

১৩ ই এপ্রিল, ২০১১ ভোর ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনার ঘটনকাল কিছুক্ষন আগে (রাত ২.১৫, ১৩ এপ্রিল ২০১১)। আমার খালার কাছে ভুতের এক লোমহর্ষক কাহিনী শোনার পর, দীর্ঘ দুদিন পর রাতে ছাদে যাই। জেনে রাখা ভাল, রাতে ছাদে পাইচারি করতে করতে দর্শন চর্চা না করলে আমার রাত ফুরায় না (সাথে ২ থেকে ৩ টা সিগারেট)। মুল ঘটনায় আসি, মাত্র একটা সিগারেট শেষ করে এক রমনির দর্শন বোঝার চেষ্টা করছিলাম, থিক তখনি লক্ষ করলাম পাশের বাড়ির ছাদ থেকে কেউ একজন আমার ছাদে এসে পরেছে। সে যে মানুষ এটা বিশ্বাস করতে আমার প্রায় ৩০ সেকেন্ডের মত (নার্ভাস মোমেন্টে ৩০ সেকেন্ডও অনেক সময়)

সন্দেহভাজনঃ স্লামুলাইকুম ভাই, ভাল আছেন?
আমিঃ তুমি কে? (যথেষ্ট স্বভাবিক ভাবে)
সন্দেহভাজনঃ আমি মিজান, এডভোকেট শামসুল হকের বাসায় থাকি।
আমিঃ এত রাতে কি করো ছাদে?
সন্দেহভাজনঃ আপনাদের বাসার গেইট আজকে সাড়ে ১১টায় বন্ধ কইরা দিছে তাই বাসায় যাইতে পারি নাই। পাশের ছাদে শুইয়া ছিলাম।
(আমি বাসা যাত্রাবাড়ীতে। এখানকার মানুষগুলো খুবই আন্তরিক। তা ছাদে উঠলেই বোঝা যায়। একটা বাসা থেকে আরেকটা বাসার দুরুত্ত ৩ ফুটেরও কম। তাই এক ছাদ দিয়ে আরেক ছাদে যাওয়া যায়। আমাদের বাড়ি ৪তলা। মিজানদের বাড়িও চার তলা। দুরভাগ্যবশত মাজখানে দুইটা ২তলা ও ১ তলা বাড়ি আছে, তা না হলে সে পাশের ছাদে শুয়ে থাকতো না। তারপরও তার বক্তব্যে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সন্দেহর কারন পরে ব্যাখ্যা করছি...)

- ছাদে কয়টা বাজে আসছো?
- ১০ টা।
- বাসায় জানে?
- ন। মোবাইল টা বাসায় ফালায়া আসছি।
- বাসায় টেনশন করছে না?
- হুম।
- এত রাতে ছাদে আসো ক্যান?
- এইবার ফাইসা গেছি। আর আসমু না ভাই।
- এই বাসায় কার কাছে আসো?
- আপনেগো চাইরতালায়। আফসার ভাইগো বাসায়।
- তুমি এইখানে আফসার ভাই জানে?
- না, হ্যায় জানলো মারব আমারে।
- কি করো?
- রডের দোকানে কাজ করি। (*সন্দেহ-১)
- কোন রডের দোকানে? (ছেলেটার আসলেই বুদ্ধি কম, যাত্রাবাড়ীতে অনেক রডের দোকান আছে। যেকোনো একটা নাম বললেই হতো। আমি চিনতাম না।)
- সুতিখাল পারে। মহাজনের নামটা মনে নাই। (*সন্দেহ-২)
- যার দোকানে কাজ করো তার নামই জানো না?
- আমি নতুন। (অযৌক্তিক)
- লেখাপরা করো নাই?
- ম্যাট্রিক পাশ করছি।

(আমার আবার সিগারেটে আগুন দেবার সময় হয়েছে। তাই ইগনোর করার চেষ্টা করলাম। ম্যাচ ধরাতে দেখেই...)
- ভাই, ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড একটা কথা বলি?
- হুম, বলো
- আরেকটা সিগারেট হবে?
(পুরাই থ খাইয়া গেলাম)
- না, একটাই ছিলো (প্যাকেট ফুল। বিকেলে কিনে আনাছি। মাত্র ৩/৪টা শেষ হইছে।)
সিগারেট খুব খারাপ জিনিষ। ছাইরা দাও।
- চেষ্টা করছি পারি না।
- আজকে আরেকবার চেষ্টা কর।
(আবার এভয়েড করার চেষ্টা। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো অর্ধেক পুরতেই মিজান পাশে এসে হাজির।)

- তোমার জুতা কই?
- আছে। ঐ ছাদে মাথায় দিয়া ঘুমাইছিলাম। ক্যান?
- যাও নিআসো। আফসার রে কইয়া গেইট খোলার ব্যাবস্থা করতাছি।
- ভাই, প্লিজ ভাই, আফসার ভাইরে ডাইকেন না। আমারে মারব।
- মারবো না। আমি বইলা দিতাছি। আমি বললে কিছু কইব না। যাও জুতা নিআসো।
(এই ফাঁকে আমার সিগারেট খাওায়াও শেষ।)

(আফসারদের দরজায় খুব আস্তে আস্তে টোকা দিলাম। এতো তারাতারি রেস্পন্স করবে ভাবি নাই। আফসার দরজা খুলল )

- এই ছেলেকে চিনো?
- মিজান! (আফসারও থ)
- এত রাইতে কি করছ?
- ভাই আপনেগ নিচতলার বিডি আজকে সাড়ে ১১টায় গেইট লাগায়া দিছে। আর বাইর অইতে পারি নাই।
- ব্যাপার না, তোমার কাছে এক্সট্রা চাবি আছে? ওকে গেইট টা খুলে দাও।
- আছে।
- বোকা। ডাকবি না আমারে।


সন্দেহের কারন বর্ণনাঃ

সন্দেহ-১

আমাদের ছাদে প্রায়ই রড চুরি হয়। একদিন আমি নিজে চুরির রড উদ্ধার করেছিলাম। আমার ছাদে যাওয়ার শব্দ পেয়ে রড ফেলে চোর পাশের ছাদ দিয়ে 'পগার পার'।

সন্দেহ-২

সে রডের দোকানে কাজ করলে অবশ্যই মালিকের নাম জানত। তার সাথে মালিকদের সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা সীমিত, কারন সে যদি চোরাই রড বিক্রি করে তাহলে নিশ্চই দোকানের পরিচিত কোন কর্মচারির কাছে করবে, মালিকের কাছে না।





(যদিও রড তেমন মুল্যবান কোন জিনিষ না। তবুও আমার মায়ের ধারনা এভাবেই বড় কোন চুরির ঘটনা ঘটতে পারে। তাই, ঘটনা টা আপাতত তার কাছে গোপন থাকুক। তাতেও মঙ্গল।)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১১ ভোর ৪:৫২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা যদি পুড়ি, তবে তোমরাও আমাদের সঙ্গে পুড়বে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৮ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:০১


২২ বছর ধরে একচ্ছত্র ক্ষমতা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দখল, বিরোধীদের দমন—এরদোয়ানের শাসনযন্ত্র এতদিন অপ্রতিরোধ্য মনে হতো। কিন্তু এবার রাজপথের তরুণরা সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। তুরস্ক এখন বিদ্রোহের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চেংগিস খান: ব্লগের এক আত্মম্ভরী, অহংকারী জঞ্জাল

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ২৮ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৪৪

ব্লগ জগতে অনেক ধরনের মানুষের দেখা মেলে—কেউ লেখে আনন্দের জন্য, কেউ লেখে ভাবনা শেয়ার করতে, আর কেউ লেখে শুধু নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে। কিন্তু তারপর আছে চেংগিস খানের মতো একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তান প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া নষ্ট প্রজন্ম

লিখেছেন Sujon Mahmud, ২৮ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:৩৬

৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর ধর্ষিতা বাঙালি নারীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত অস্ট্রেলীয় ডাক্তার জেফ্রি ডেভিস গণধর্ষণের ভয়াবহ মাত্রা দেখে হতবাক হয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে আটক পাক অফিসারকে জেরা করেছিলেন যে, তারা কীভাবে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন মিলনকে ধর্ষণ বলা হবে, না প্রতারণা বলা হবে?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৪১

আমাদের দেশে এবং ভারতের আইনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন মিলনকে ধর্ষণ হিসাবে গণ্য করা হয়। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এই ধরণের বিধান আছে বলে আমার মনে হয় না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ, চীন ও ভারত: বিনিয়োগ, কূটনীতি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:১০


প্রতিকী ছবি

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সমীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×