The Great Gatsby দেখলাম। লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিও আর টবি ম্যাগুয়ার আছে বলে দেখতে গেসি। নায়িকার ছবিও উপ্রে দিয়ে দিলাম, সেও টানার মতই


১৯২০ সালের আম্রিকা। ওয়াল স্ট্রিট বুম বুম করতাসে। চারিদিকে শুধু টাকা। যত টাকা, তত উঠতি বড়লোক। তত তাদের মেকি দাপট, বড়লোকি দেখানোর জন্য। চারিদিকে তত পার্টি, জাক জমক। এর মধ্যেও সবাই একজনের পার্টির জন্য বসে থাকে প্রতি সপ্তাহে। সেই একজন কে?
তার নাম প্রতি মিনিটে একবার বলে মুভিতে Gatsby। ক্যাপ্রিও। হদাই পার্টি ডাকে সে। কিন্তু নিজে থাকে কম দিনই। কাউকে দাওয়াত দেয় না, কিন্তু সবাই আসে। তার কাহিনী টা কী? সে চায় কী?
এই মুভিতে ভালো দিক বলে শেষ করা যাবে না।
১) টমি ম্যাগুয়ের, ঐ যে স্পাইডারম্যানের গুড বয় নায়কটা - এখানেও গুড বয়ই থাকে। কিন্তু ও শিখায়া দিবে আপনাকে যে অভিনয় কী জিনিস। কাহিনীতে ওর ভূমিকা হলো ও জাস্ট স্টোরি টেইলার। এমনিতে কাহিনীর কোন টার্নিং এ তার তেমন কোন প্রভাব নেই। ওর জায়গায় আমি কাহিনী বললেও ঘটনা অই একই হত। অথচ, শুধু অভিনয়ের গুণে আর প্রেজেন্টেশনের জোরে পুরাটা টাইম মনে হবে টবি কাহিনীর অন্যতম মূল ভিত্তি।
২) ক্যাপ্রিও বরাবরের মতই সেইরকম অভিনয় করে। ও একটা লিজেন্ড পর্যায়ে চলে গেসে। তবে, ওর চরিত্রও খুব সুযোগ পেয়েছে। হাই কোয়ালিটির অন্য যেই নায়ককেই এত পাওয়ারফুল চরিত্রে বসাবেন, পুরা মুভিতে একেকজনের জন্য একেকরকম ফ্লেভার পাবেন।
৩) নায়িকাটা কিউট ছিলো। তবে আহামরি কিছু না। চরিত্রে তার যা সুযোগ ছিলো, তার তুলনায় মোটামুটি করেছে।
৪) এই মুভির সবচেয়ে আমেইজিং জিনিস হলো এর চিত্রায়ণ। মনে হয় পুরাটাই যেন গ্রিন স্ক্রিনের সামনে করা। প্রতি মিনিটে মিনিটে প্রচণ্ড সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ, মনে হয় যেন ডিজনির ফেইরি টেল টাইপ এনিমেশন দেখছেন তবে আরও বেশি বেশি দুন্দর। অনেক সুন্দর, চোখ জুড়িয়ে থাকে। চরিত্রগুলো জানালার পাশে বসে আছে, জানালা দিয়ে এত চমৎকার দৃশ্য দেখবেন যে পজ করে স্ক্রিন ওখানেই রেখে দিতে মনে চাইবে।
৫) আরেকটা দারুণ জিনিস হলো ১৯২০ সালের ওয়াল স্ট্রিট দেখবেন। তখনকার পোশাক আশাক, কালচার কোনটাই এখানে অথেনটিক বা বাস্তব দেখায় নি, কিন্তু আমেজটা চমৎকার করেছে। মুভির আর যুগের প্রয়োজনে একটু আঠা আঠা হটনেস জোর করে সে সময়ের পোশাকে আর পটভূমিতে দিয়েছে বটে, কিন্তু পটভূমি/ ব্যাকগ্রাউন্ড বেশ চমৎকার লাগে।
কিন্তু এই মুভি দেখতে গেলে আরও কিছু মাথায় রাখতে হবে।
১) এক মুভি দেখতে যেয়ে এর ফাঁকে আরও মুভি দেখা লাগছে। সময়ও লাগসে ৩ দিন। আমার মত বিশাআআআল মুভি ফ্রিক পর্যন্ত অধৈর্য হয়ে গেছে এর স্লো গতিতে।
এমন না যে খুব স্লো। কিন্তু অফিস টফিস করে এসে দেখতে বসলে স্লো লাগবে একটু। ২ ঘন্টা ২২ মিনিটের মুভি হলেও ১৫ মিনিট আগেই শেষ হয়। শেষ ১৫ মিনিট ক্রেডিটের জন্য।
২) ঐ যে পিছনের ফ্ল্যাপে পার্টির কাহিনী শুনে দেখতে বসে গেলেন ? ধুর, সিলি কারণ।মাঝেই বলে দেয় সব। মিস্ট্রি জেনার না, বরং চা টোস্ট বিস্কিট মার্কা শান্তিময় প্রেম কাহিনী।
৩) কাহিনীতে চরিত্রের প্রেজেন্টেশান বড়ো বেশি ফর্মাল। সবার ভাবখানা এমন যেন ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে আসছে। সবার এটিকোয়েট চালচলন সেরকম। আর ১৯২০ এ আম্রিকা যেন স্বর্গের টুকরা।
৪) প্রতি মিনিটে একবার করে সবাই Gatsby এর নাম নেয়। কান পঁচে যায় পুরা। আর কাহিনী ঠিক অত জমজমাট না।
এত কিছুর পর যদি আমাকে বলেন মুভিটা দেখবেন কীনা !
আমি বলবো, "অবশ্যই দেখবেন। তবে ছুটির দিনে। রিল্যাক্সে।"