মানুষের মতনই ঈগল পাখী নাকি ৭০ বছরের মতো সময় বেঁচে থাকে। কিন্তু ৪০ বছরে তার শরীরের প্রধান অঙ্গগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন তার ডানা ভারী হয়ে যায়, পায়ের নখ লম্বা ও নরম হয়ে যায় এবং ঠোঁট সামনের দিকে মুড়িয়ে যায়। এসবের ফলে ঈগলের উড়াউরি সীমিত হয়ে যায়, শিকার করতে বেগ পেতে হয়, খাবার ছিড়ে খেতে কষ্ট হয়। উড়তে না পারে, শিকার করতে না পেরে, খেতে না পেরে ঈগল পাখী নাকি তিনটি পথ বিবেচনা করে - আত্নহত্যা করা, শকুনের মত মৃতদেহ খেয়ে বেচে থাকা অথবা কষ্টদায়ক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেকে পুনরূদ্ধার করা।
বাঁচার মতন বাঁচার প্রয়াসে ঈগল তৃতীয় পথ বেছে নেয়। সে যায় উচু কোন পাহাড়ে। কয়েক মাসের জন্য সেখানে সে নীড় বাধে। প্রথমে ঈগল তার ঠোঁট অনবরত পাথরে ঠোকরাতে থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত তা ভেঙ্গে যায়। এরপর সে অপেক্ষা করে নতুন ঠোঁট গজানোর। নতুন ঠোঁট গজালে সে দুই থাবার নখ গুলো উপড়ে ফেলে। এবার অপেক্ষা নতুন নখ গজাবার। নখ গজালে সে ডানার সমস্ত পালক গুলো ছিড়ে ফেলে। এবার অপেক্ষা নতুন পালকের। ডানায় নতুন পালক আসলে ঈগলের নিজেকে পুনরূদ্ধার করার প্রক্রিয়া শেষ হয়। সে তখন শক্তিধর হয়ে, গতিশীল হয়ে, ক্ষিপ্র হয়ে পাহাড় থেকে ফিরে আসে। পাঁচ মাসের কষ্টের মধ্য দিয়ে সে নিজেকে পরের ৩০ বছরের জন্য তৈরি করে। বাঁচার মতন বাঁচে সেই ৩০ বছর।
মানুষকে ঈগল পাখীর মতন এত কষ্টকর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। তবে মানুষ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলার জন্য নিজেকে তৈরি করতে পারে। ৪০ একটা ভাইটাল বয়েস। অনেক কিছু বদলে যায়। বদল যে গ্রহণ করতে পারে তার জন্য এগিয়ে যাওয়া সহজ হয়। মনের মধ্য উৎসাহ, আকাঙ্খা পুনরায় জাগ্রত করে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:০৭