বড় কাটরা ঢাকার চক বাজারের কাছে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে অবস্থিত। এটি মুগল স্থাপনা। কাটরা আরবি ও ফারসি সাহিত্যে ‘ক্যারাভান সরাই’ বা ‘সরাইখানা’ বা 'অবকাশযাপন কেন্দ্র' হিসেবে উল্লেখিত আছে।
বাংলার সুবাদার শাহ সুজার বসবাস করার কথা থাকলেও পরে এটি মুসাফিরখানা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পথচারী, বিশেষ করে প্রভাবশালী বনিকরা এসে এখানে থাকতেন।
শাহ সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের পুত্র। ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলার সুবাদার ছিলেন। বাবার মতন স্থাপত্যকর্মের প্রতি তাঁরও বিশেষ অনুরাগ ছিল
বড় কাটরায় ফারসি ভাষায় লিখিত দুটি শিলালিপি আছে। এর একটিতে লেখা আছে যে, এ দালান আবুল কাসেম কর্তৃক ১৬৪৪ সালে নির্মিত হয়েছে। অন্যটিতে দেখা যায় যে, ১৬৪৬ সালে শাহ সুজা স্থাপত্যটি কাটরা হিসেবে ব্যবহারের জন্য মীর আবুল কাসেমকে দিয়েছিলেন এই শর্তে যে, কাটরায় অবস্থান করা কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো ভাড়া গ্রহণ করা হবে না। কাটরার ব্যয় নির্বাহের জন্য ২২ টি দোকান ওয়ক্ফ করে দেওয়া হয়।
বর্তমানে বড় কাটরা হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ফটকের নিচে গড়ে উঠেছে খাবার হোটেলসহ বিভিন্ন দোকান।
শাহ সুজা বাংলা শাসন করেছেন সুশাসনকর্তার মতো কিন্তু সম্রাট শাহজাহান অসুস্থ হয়ে যাবার পর চার ভাইয়ের যে লড়াই শুরু হয় দিল্লীর মসনাদ দখলের, তাতে তিনি পরাজিত হন আড়ঙ্গজেবের কাছে এবং পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় আরাকান রাজ্যে। শাহ সুজার চূড়ান্ত পরিণতি ধোঁয়াশা ঘেরা, কবে তার মৃত্য হয়েছে তা জানা যায় না, উপায়ও নেই। কারো কারো মতে আরাকান রাজা তাকে ধাওয়া করে জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে, কারো কারো মতে তাকে শেষ জীবনে মক্কায় দেখা গেছে, কারো কারো মতে তিনি আরাকান থেকে ফের পালিয়ে চট্টগ্রামে এসে সাধারণ মানুষ হিসাবে জীবন পার করেন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৪৯