প্রথমেই আমি রূপগঞ্জ নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি. যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মৃত্যুর কৈফিয়তে মৃত ও মৃতের স্বজনদের কোন ক্ষতিপূরণ হবে না. আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক, দোষীদের শাস্তি হোক – সে যেই হোক. তাৎক্ষণিক ঘটনাক্রমে সেনাবাহিনীর ভূমিকা ঠিক বা ভুল তাও বলব না. তবে সেনাবিদ্বষী একটি শ্রেণি আছে যারা বিষোদ্গারের জন্য কিবোর্ডে আঙ্গুল সেঁটে বসে থাকে, মওকা পাওয়া মাত্র অঙ্গুলিকর্মে মেতে উঠে মন ও মনের মাধুরি – দোষতো দোষই, না-দোষগুলোও অবলীলায় জঘন্য দোষে পর্যবসিত হয়. গত দুদিন ধরে ব্লগে ঐ সেনাবিদ্বষী শ্রেণিটির ঈদ গেছে, যাচ্ছে – তাদের মনের মাধুরিতে ভরে গেছে ব্লগ, হুজুগে বাঙ্গালির হুজুগও তাই ঈদরাঙ্গা! এমতাবস্থায়, ঐ তাৎক্ষণিক ঘটনাক্রমের বাইরের কিছু বাস্তবতা উপস্থাপন করব.
সঙ্গত কারণে সব অভিযোগের এক এক করে জবাব দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, প্রলাপগ্রস্থ অনেকের অভিযোগ আমলে নেয়াও নির্বুদ্ধুতা হবে. আমি শুধু দিনমজুর-এর এই Click This Link পোস্টের কিছু জবাব দেব.
------ ---------- ------
ক্যানটনমেন্টে কি কি পয়দা হয় তার তালিকা আমাগো জানা নাই।
- বিশ্বের কোন ক্যান্টনমেন্টে কী কী পয়দা হয় যা বাংলাদেশের ক্যান্টনমেন্টে পয়দা করতে চান?
জনগণের জমি বিনামূল্যে বিলায়া দিয়া...
- বিনামূল্যে হলে বিলিয়ে দেয়াই হত, কিন্তু সরকার কারও জমি বিনামূল্যে নেয়নি এবং ডিওএইচএস-এর জমি উন্নয়নের সব অর্থ নিজেকেই বহন করতে হয়.
সেনা কল্যাণের নাম কইরা সেনা কল্যাণ সংস্থা নামের এক অফিসার কল্যাণ সংস্থা কিংবা আর্মি ওয়েল ট্রাস্টের মতো মস্ত একটা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান গইড়া কারা ফুইলা ফাইপা কদলি কিংবা বটবৃক্ষ হইতাছে তাও আমরা জানি না। কারণ জাননের কোন উপায় নাই আমাগো। শুধু নেড়ি কুত্তার লাহান গন্ধ পাই,কি জানি হইতাছে কোথায়- ব্যাবসা,বাণিজ্য!
- জানি না মানে? এইতো জানলেন! দেশের কয়টা শিল্প-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের খবর জানেন আপনি? তারপরওতো সেনাকল্যাণের এতকিছু জানলেন, এত গোপন খবর, কোন গোয়েন্দার থেকে কিনে তবে জানলেন? ফুইলা ফাইপা কদলি কিংবা বটবৃক্ষ হলে আপনার কী সমস্যা? চুরি করে হচ্ছে নাকি? নিয়ম মাফিক ব্যবসা করে হচ্ছে. ব্যবসা করতে নিযেধ আছে? সেখানে চাকুরি করে অবসরপ্রাপ্ত সেনারা, তাদের ওয়েফেয়ার হচ্ছে, দেশের চাকুরির বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে, দেশের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে. মাঝখান থেকে আপনি ‘নেড়ি কুত্তার লাহান গন্ধ’ পেলে কার সাধ্য আপনাকে মানুষ বানায়? মানুষকে নিজে থেকেই মানুষ হতে হয়.
৫ কাঠার একেকটা প্লট। প্লটের মূল্য মোটামুটি ১৫ লক্ষ টাকা। বাজার দরের চেয়ে সস্তা হইলেও ক্যাপ্টেন সাহেবগো লাইগা কি একটু কষা হইয়া যায়?
- দালাল ছাড়া সরাসরি জমির মালিক থেকে জমি কিনলে যেখানে সেনাসদস্যরা লাভবান হয় আবার জমির মালিকরাও লাভবান হয়, সেখানে আপনার জ্বলুনির কী কারণ থাকতে পারে? জ্বলুনি হবার কথা দালালদের, ভূমিদস্যুদের – আপনি কোন দলে? রূপগঞ্জে জমি কিনে নিজেরা জমির উন্নয়ন করে (স্বরণে রাখুন বসুন্ধরারা নামমাত্র টাকায় জমি কিনে অথবা না-কিনে কতগুন লাভে বিক্রি করে থাকে) ১৫ লক্ষ টাকায় ৫ কাঠার প্লট – মানে কী দাড়াল? মানে দাড়াল, জমি খুবই ন্যায্যমূল্যে কেনা হচ্ছিল. আপনার ভাবখানা এমন – আর্মি মাগনা জমি নিচ্ছিল! এখানে দালাল ও ভূমিদস্যুদের কোন ভূমিকা আপনার তত্ত্বতালাশে এল না, যারা দেশের সরকারকে ধমক দিতে পারে, যারা দেশের মিডিয়া চালায়. স্যরি, এজন্য আমি আপনাকে ভূমিদস্যুদের দালাল হিসাবেই চিনছি.
মুশকিল আছান ট্রাস্ট ব্যাংক তো আছেই!একেকজন ৮ লক্ষ কইরা লোন নিতে পারবো ট্রাস্ট ব্যাংক থেইকা।
- তথ্য সঠিক. তো? ব্যাংকের লোনটা কি আপনি শোধ দেবেন? নাকি ভেবেছেন, আপনার ভূমিদস্যু অন্নদাতারা যেভাবে ঋনখেলাপি হয়ে পার পেয়ে গেছে সেভাবে তারাও পার পাবে? এখানে সুবিধা একটাই, অন্য ব্যাংক থেকে ১-শতাংষের মত সুদ কম আছে, ব্যাস.
প্রকল্পের জায়গা হইল গিয়া বসুন্ধরা ও পূর্বাচল হাউজিং প্রকল্পের পাশে...
- যেটা বলেন নাই, এএইচএস ঢাকা থেকে আরও দূরে. কিন্তু ইনিয়েবিনিয়ে এত বড় প্রকল্প বলে মাতম করার সময় সচেতনভাবেই কোথাও বলেন নাই যে, বসুন্ধরা ও পূর্বাচল হাউজিং প্রকল্পগুলো হাওয়ার উপরে হয়েছে, নাকি মানুষের জমির উপরেই হয়েছে.
জনগণের অর্থে লালিত পালিত আর্মি কর্পোরেট পুজির মালিকে পরিণত হয়ে...
- সেনা কল্যাণ সংস্থা কিংবা আর্মি ওয়েল ট্রাস্টের টাকাতো কারও ব্যক্তিগত পকেটে যাচ্ছে না, সেনাসদস্যদের কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে. ওখানের কল্যাণ ফান্ডে চাঁদা আপনি দেননি, দিয়েছে সেনাসদস্যরা. আপনার বলার ভঙ্গিতে মনে হচ্ছে, লুটপাট হচ্ছে, কিন্তু লুটপাট হলে আর রূপগঞ্জে সস্তায় জমি কেনা কেন, ঢাকাতেই কেনা যেত. আসলে বাংলাদেশে আমরা সবাই লুটপাটের সাইকিতে অভ্যস্থ – সেই অসুস্থ সাইকির প্রলাপ এটা!
বিডিআর ঘটনায়ও এমন সেনাবিদ্বেষে ব্লগ ভরে গিয়েছিল, তখন আমি এর প্রতিবাদ লিখেছিলাম, আমন্ত্রণ জানাচ্ছি সেখানে. Click This Link