-- আফা চুড়ি নিয়া যান।
মধ্যবয়সীনি একজন চুড়ি বিক্রেতা ডাকলো তুলিকে। চুড়ি বিক্রেতার মুখের মধ্যে পান। তার ডাকটা কেমন অদ্ভুত শোনালো।
চুড়ি দেখলেই তুলির মনে তোলপাড় ওঠে। এই জিনিসটার প্রতি তার বিশেষ দূর্বলতা আছে। এক সময় কেউ একজন তাকে ফুটপাতের এই চুড়িওয়ালীর কাছ থেকে লাল, নীল, কালো চুড়ি কিনে দিতো। সে নিজেও কম কিনতো না।
তুলি হেসে বললো, না বিলক্ষী দিদি লাগবে না।
কথাটা বলে সে দ্রুত পা ফেলতে লাগলো। বুকের ভেতর মৃদু ব্যথা বাজতে লাগলো চুড়ির শব্দের মতো।
চুড়িওয়ালী মহিলা দৌড়ে এসে তার হাত চেপে ধরলো। গাছের ছায়ায় তাকে টেনে নিয়ে বললো, দিদি কি হয়েছে গো তোমার? হাতে এখন চুড়ি পরতে দেখি না ক্যান?
তুলি লক্ষ্য করলো মহিলা আপনি থেকে তুমিতে চলে এসেছে। তার কণ্ঠ সমবেদনায় ভরা। সে বললো, এমনি দিদি। ভালো লাগে না।
-- আমি কিছু শুনবো না। চুড়ি আজ তোমাকে পরতেই হবে। তুমি না আমারে দিদি মানো। দিদির কথা ফেলতে পারবে না। কিনতে বলছি না। আমি তোমারে চুড়ি দেবো দিদি হিসেবে। দেখি, হাত দাও।
তুলি আপত্তি জানালো। কিন্ত চুড়িওয়ালীর প্রবল মমতার কাছে তার আপত্তি টিকলো না। চুড়িওয়ালী মহিলা লাল চুড়ি নিয়ে এসেছে এক হাতে। তুলির হাতে জোর করে সে লাল চুড়ি পরিয়ে দিয়ে বললো, হাত আর খালি রাখতে পারবে না গো দিদি এই বলে দিলাম।
তুলি হেসে উঠলো। সেও চুড়ির দাম দিতে চাইলো জোর করে। তার জোর এবারও খাটলো না। চুড়িওয়ালী কিছুতেই নিলো না। বললো, না গো দিদি দাম নিতে পারবো না।