গত বছর লকডাউনের সময় হুমায়ূন আহমেদের প্রায় সব প্যাকেজ নাটক দেখার পাশাপাশি দুটি ধারাবাহিক নাটকও (উড়ে যায় বকপক্ষী এবং নক্ষত্রের রাত) দেখেছিলাম।
হুমায়ূন আহমেদের প্যাকেজ নাটকের কথা বলতে গেলে হয়ত কিছু নেগেটিভ কথাও চলে আসতে পারে কারণ বেশ কিছু নাটকে যেমন কোন বার্তা ছিল না তেমনি মানুষ হাসানোর উল্লেখ যোগ্য কোন উপাদানও ছিল না। অবশ্য এসব নাটকের অধিকাংশই ছিল হুমায়ূন আহমেদের শেষের দিকের নাটক। অনেকেই মনে করেন ঐ সময়ে এসে তিনি অনেকটাই এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলেন এবং তার ছাপ নাটকের উপরও হয়ত কিছুটা পড়েছিল। একই টাইপের কাহিনী, সংলাপ বার বার আসছিল। কঠিন করে বলতে গেলে ঐ সময়টায় হয়ত তিনি ফুরিয়ে আসছিলেন।
যাইহোক, আমি আসলে হুমায়ূন আহমেদের কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকের অনন্য সৃষ্টির কথা বলতে গিয়ে তার কিছু প্যাকেজ নাটকের দূর্বলতার কথা বলে ফেলেছি। আমার দেখা হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক গুলোর প্রায় সবগুলোই অসাধারণ লেগেছে। এসব নাটকে মানুষের জীবনের বিভিন্ন দিককে তিনি বিভিন্ন এ্যাঙ্গেল থেকে তুলে ধরেছেন। যা তার প্রখর চিন্তা ও মননশীলতার প্রকাশ।
অন্যরা কে কিভাবে বলবে, জানিনা তবে আমার কাছে হুমায়ূন আহমেদের 'নক্ষত্রের রাত'ই সেরা ধারাবাহিক নাটক মনে হয়েছে। যদিও এবারের লকডাউনে 'বহুব্রীহি' দেখার পর ভাবনা ও চরিত্রে কিছুটা মিল পেয়েছি। তারপরও বহুব্রীহি নাটকের শেষ কয়েকটি পর্বে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে আসায় এ নাটকটি স্বতন্ত্র একটা অবস্থান তৈরী করতে পেরেছে।
আর প্যাকেজ নাটকের মধ্যে আমার দেখা 'জননী' নাটকটিকেই হুমায়ূন আহমেদের সেরা নাটক মনে হয়েছে। যে নাটকটি অতি সম্প্রতি দেখেছি। বলা যায় একেবারেই ভিন্ন ধর্মী একটা কাহিনী। জননীর ভূমিকায় ডলি জহুরের অভিনয়ও ছিল এক কথায় অসাধারণ! আর আবুল খায়েরের কথা কি বলব, যার জন্মই হয়েছিল প্রতিটা চরিত্রের সাথে একাত্ম হয়ে অভিনয় করার জন্য। তার তুলনা একমাত্র তিনিই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৩৭